সাধারণত বয়ংসন্ধিকালের পর উচ্চতা বৃদ্ধির হার কমে যায় । সাধারণ ভাবে ছেলেদের বয়ঃসন্ধিকাল ১২ থেকে ১৯ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয় । ব্যতিক্রমভাবে কারো এর কিছুটা আগে অথবা পরে হতে পারে । বয়ংসন্ধিকালের পরে উচ্চতা সাধারণত আর বাড়ে না । তবে শারীরিক সুস্থ্যতা থাকলে ব্যায়াম করলে হরমোন বৃদ্ধির মাধ্যমে ১ থেকে ২ ইঞ্চি বাড়তে পারে ।
খেতে হবে খনিজ ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার দেহ সঠিকভাবে পুষ্টি পেলে একটা নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত উচ্চতা দ্রুত বাড়বে। বিভিন্ন রকমের খনিজ পর্যাপ্ত পরিমাণে আমাদের খাবার তালিকায় রাখতে হবে। হাড়ের গঠন ও বৃদ্ধিতে এগুলো একান্ত প্রয়োজনীয় উপাদান। বিশেষভাবে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস, আয়রন, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম যেন পরিমাণ মত গ্রহণ করা হয় তা লক্ষ্য রাখতে হবে। হাড়, মাংস পেশির বৃদ্ধি ও মজবুত হওয়ার জন্য প্রয়োজন আমিষ ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার। বিভিন্ন ধরনের শাক- সবজি ও ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, ছোট মাছ, মাংস, ডিম, খেজুর, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রোকলি, পালং শাক, পুঁই শাক, বিভিন্ন রকমের ডাল, মটরশুটি, সীমের বীচি, কাঠালের বীচি,আপেল, জাম্বুরা, ডুমুর, লেবু বেশি করে খান। নিতে হবে বিশ্রাম পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন। দৈনিক ৮ ঘন্টা ঘুমের অভ্যাস তৈরী করুন। এটি সবচেয়ে সহজ এবং অনেক কার্যকরী উপায়। সঠিক এবং সুন্দর ঘুম দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধির মাত্রা আরো বাড়িয়ে তোলে। নিয়মিত ব্যায়াম করুন ব্যায়াম বা খেলাধূলা করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। নিয়মিত কিছু নির্দিষ্ট ব্যায়াম (ওজন উদ্ধরণ) গ্রোথ হরমোন বাড়ায়। প্রথমে শুরু করতে পারেন বেশ কিছু স্ট্রেচিং দ্বারা। ধীরে ধীরে ব্যায়ামের মাত্রা বাড়িয়ে নিন। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের বিভিন্ন জোড়াগুলোতে ভাল প্রভাব পড়ে। ফলে উচ্চতা দ্রুত বাড়ে। সপ্তাহে ৩ দিন নিয়মিত ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। তবে শুরুতেই কিছু ফ্রিহ্যান্ড ব্যায়াম বা হাল্কা দৌড়ে শরীরকে ব্যায়াম করার উপযোগী করে নিতে ভুলবেন না। তবে খেয়াল রাখবেন, অতিরিক্ত ব্যায়াম অনেক সময় উচ্চতার বৃদ্ধি রোধ করে দেয়। বদভ্যাস ত্যাগ করুন শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এমন বদভ্যাস দ্রুত ত্যাগ করুন। মাত্রাতিরিক্ত চা বা কফি কোনটাই খাবেন না। ধুমপান যেমনি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তেমনি দেহের হরমোন গঠনও কমিয়ে ফেলে। যা আপনার উচ্চতা বৃদ্ধিতে বাধার সৃষ্টি করতে পারে। বোতলজাত জুস এবং কোমলপানীয়ও আপনার শরীরের একইভাবে ক্ষতি সাধন করে। খেতে হবে বুঝে শুনে অনেকেই লম্বা হওয়ার জন্য শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাবার বেশী পরিমানে গ্রহন করেন। বেশি পরিমাণ শর্করা গ্রহণ মানে রক্তে বেশি পরিমান গ্লুকোজ। এর ফলে ইনসুলিন নামক হরমোনও নিঃসৃত হবে বেশি। ইনসুলিন দেহের গ্রোথ হরমোনের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। সেই সাথে তৈলাক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার ,লাল মাংস আপনার শারীরিক বৃদ্ধিতে বাজে প্রভাব ফেলে তাই এসব যতটা সম্ভব ত্যাগ করাই ভাল। মানসিক চাপ কমান মানসিক চাপ আপনার বৃদ্ধি হওয়ার ক্ষেত্রে একটি বাঁধা। যাতে আপনার হরমোনের মাত্রা কমে যায় এবং করটিসল উৎপাদিত হয়। ভিটামিন সি সম্পূরকসমূহ করটিসল কমাতে জোর সহায়তা করে। চর্চা করুন প্রশ্বাসে গভীরতা বাড়ানোর স্বাভাবিক নয়,প্রশ্বাস নিন গভীরভাবে। যেহেতু সব সময় গভীরভাবে প্রশ্বাস নেয়া সম্ভব নয় তাই দিনের যেকোনো একটি সময় নির্বাচন করে গভীরভাবে শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার ব্যায়াম করুন। চাইলে মেডিটেশন করতে পারেন কারণ মেডিটেশনও একই ফল দেয়। সঠিক দেহভঙ্গি যদি আপনার বয়স ২৫ অতিক্রম করে থাকে এবং নিজের উচ্চতা আপনার কাছে যথেষ্ট বলে মনে না হয় তবে মন খারাপ করবেন না। আর সবার মত আপনিও নিজেকে লম্বা হিসেবে তুলে ধরতে পারেন। এ জন্য আপনার দেহভঙ্গির প্রতি নজর দিন। ঘাড় ও পিঠ সোজা করে হাঁটুন। বসার সময়েও সোজা হয়ে বসুন। মাথা সোজা রাখুন। কুঁজো হয়ে ও নিচু হয়ে হাঁটা বা বসার অভ্যাস থাকলে তা পরিহারে নিয়মিত চর্চা চালিয়ে যান। আপনার দেহভঙ্গি ঋজু হলে আপনাকে লম্বা দেখাবে। কমিয়ে ফেলুন ওজন ওজন বেশি থাকলে কিন্তু আপনাকে খাটো দেখাবে। সেক্ষেত্রে সঠিকভাবে নিয়ম মেনে ওজন কমিয়ে নিন। ওজন কমে গেলে আপনাকে অনেকটাই লম্বা দেখাবে। পোশাক নির্বাচন নিজের উচ্চতাকে বাড়িয়ে দেখাতে পোশাক নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পোশাক আপনাকে দিতে পারে লম্বা হওয়ার অনুভূতি। মেয়েদের ক্ষেত্রে ভারি কাজ করা শাড়ির বদলে স্ট্রাইপ ও ছোট প্রিন্টের মধ্যে জর্জেট, লিলেন, শিফন ইত্যাদি বেছে নিন। সালোয়ার কামিজ ও ফতুয়ার ক্ষেত্রে লম্বা ও বডি হাগিং ধাঁচের হলে ভাল লাগবে। রঙ হিসেবে গাঢ় রঙ বেছে নিতে পারেন। পায়ে থাকতে পারে হিল জাতীয় জুতা বা স্যান্ডেল। পুরুষদের জন্য জুতা হতে পারে হিলযুক্ত। সাথে শার্ট হতে পারে টাইট ফিটিঙের। পরতে পারেন স্ট্রাইপ ও চেক। মোটাদের ক্ষেত্রে কাপড় কিছুটা ঢিলা এবং লম্বা মাপের হল ভাল লাগবে। এতে মোটাভাব অনেকটাই ঢেকে যাবে।দেখাবে বেশ কিছুটা লম্বা ।