সালাতুল হাজতের নামাজ কি যেকোন সময় পড়া যায়? আর নিয়ত কিভাবে করতে হয়?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

বিশেষ কোন বৈধ চাহিদা পূরণের জন্য আল্লাহর উদ্দেশ্যে যে দুই রাকআত নফল সালাত আদায় করা হয়, তাকে সালাতুল হাজাত বলে। এই সালাত আদায়ের আলাদা কোনো নিয়ম নেই। যা নিষিদ্ধ সময় ব্যতীত যেকোন সময় আদায় করা যায়। স্বাভাবিক সালাতের মতোই উত্তমভাবে অজু করে দুই রাকআত নফল সালাত পড়বে। সালাত শেষে আল্লাহ তায়ালার হামদ ও প্রসংসা এবং নবী করিম (সাঃ)-এর উপর দরুদ শরিফ পাঠ করে নিজের মনের কথা ব্যক্ত করে আল্লাহর নিকট দোআ করবে। উসমান ইবনু হুনাইফ থেকে বর্ণিত। এক অন্ধ লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললো, আপনি আল্লাহ্‌র কাছে আমার জন্য দুআ করুন। তিনি যেন আমাকে রোগমুক্তি দান করেন। তিনি বলেনঃ তুমি চাইলে আমি তোমার জন্য দুআ করতে বিলম্ব করবো, আর তা হবে কল্যাণকর। আর তুমি চাইলে আমি দুআ করবো। সে বললো, তাঁর নিকট দুআ করুন। তিনি তাকে উত্তমরূপে অজু করার পর দুই রাকআত সালাত পড়ে এ দুআ করতে বলেনঃ হে আল্লাহ্! আমি তোমার নিকট প্রার্থনা করছি, রহমতের নাবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর উসীলা দিয়ে, আমি তোমার প্রতি নিবিষ্ট হলাম। হে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমার চাহিদা পূরণের জন্য আমি আপনার উসীলা দিয়ে আমার রবের প্রতি মনোযোগী হলাম, যাতে আমার প্রয়োজন মিটে। হে আল্লাহ্! আমার জন্য তাঁর সুপারিশ কবূল করো। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নম্বরঃ ১৩৮৫) [নিয়্যাতঃ হে আল্লাহ! আমি দুই রাকআত নফল সালাত সালাতুল হাজাত আদায় করার উদ্দেশ্য কিবলামুখী হয়ে দাড়াইলাম। আল্লাহু আঁকবার।]  

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

সালাতুল হাজত পড়ার নিয়ম- ============================== ================ বিশেষ কোন হালাল চাহিদা পুরনের জন্য আললাহ’র উদদেশ্যে দুই রাকাত নফল সালাত আদায় করাকে “সালাতুল হাজত” বলা হয়। *** ইবনু মাজাহঃ হা/১৩৮৫; সালাত অধ্যায়-২, অনুচছেদ-১৮৯। “সংগত কোন প্রয়োজন পুরনের জন্য বান্দা নিজ প্রভুর নিকটে ছবর ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রাথনা করবে”। *** সুরা বাকারাহঃ আয়াত-১৫৩। এ জন্য শেষ বেঠকে তাশাহুদের পর সালাম ফিরানোর পুবে আশু প্রয়োজনের বিষয়টির কথা নিয়তের মধ্যে এনে নিচের দু’আটি পড়বেন: ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺭﺑﻨﺎ ﺍﺗﻨﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﺣﺴﻨﺔ ﻭ ﻓﻲ ﺍﻻﺧﺮﺓ ﺣﺴﻨﺔ ﻭ ﻗﻨﺎ ﻋﺬﺍﺏ ﺍﻟﻨﺎﺭ “আল্লাহুম্মা রাববানা আতিনা ফিদদুনিয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আখিরাতে হাসানাতাও ওয়া কিনা আযা-বান্নার” [‘হে আললাহ! হে আমাদের পালনকতা! আপনি আমাদেরকে দুনিয়াতে মংগল দিন ও আখিরাতে মংগল দিন এবং আমাদেরকে জাহাননামের আগুন থেকে হেফাজত করুন’]। আনাস(রাঃ) বলেনঃ রাসুল(সাঃ) অধিকাংশ সময় এ দু’আটিই পড়তেন। *** বুখারি: হা/৪৫২২, ৬৩৮৯; বাকারাহ: ২/২০১; মিশকাত: হা/২৪৮৭, ৮১৩; মুসলিম। দু’আটি সিজদায় পড়লে বলবেঃ ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺍﺗﻨﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﺣﺴﻨﺔ ﻭ ﻓﻲ ﺍﻻﺧﺮﺓ ﺣﺴﻨﺔ ﻭ ﻗﻨﺎ ﻋﺬﺍﺏ ﺍﻟﻨﺎﺭ “আল্লাহুম্মা আতিনা ফিদদুনিয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আখিরাতে হাসানাতাও ওয়া কিনা আযা-বান্নার” । **কারন রুকু ও সিজদায় কুরআনি দু’আ পড়া যায় না। *** মুসলিম, মিশকাতঃ হা/৮৭৩; সালাত অধ্যায়-৪, ‘রুকু’ অনুচছেদ-১৩; নায়লঃ ৩/১০৯। হুযায়ফা(রাঃ) বলেনঃ রাসুল(সাঃ) যখন কোন সংকটে পড়তেন, তখন সালাতে রত হতেন। *** আবু দাউদঃ ১৩১৯; সালাত অধ্যায়-২, অনুচছেদ-৩১২; ছহিহুল জামেঃ হা/৪৭০৩; মিশকাতঃ ১৩১৫। এই বিষয়ে হযরত ইবরাহিম(আঃ) এর ঘটনা সরন করা যেতে পারে। যখন তিনি অপহৃত হয়ে মিশরের লমপট বাদশাহ’র নিকট উপনিত হলেন ও অত্যাচারি বাদশাহ তার নিকট এগিয়ে গেল, তখন তিনি অজু করে সালাতে রত হয়ে আললাহ’র নিকট সাহায্য প্রাথনা করে বলেছিলেনঃ ‘হে আললাহ! এই কাফেরকে তুমি আমার উপর বিজয়ি করোনা’।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

আলী ইবনু ঈসা ইবনু ইয়াযীদ আল-বাগদাদী (রহঃ) ..... ফায়েদ ইবনু আবদির রহমান ইবনু আবদিল্লাহ্ ইবনু আবী আওফা (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন যে, আল্লাহর কাছে বা কোন আদম-সন্তানের কাছে যদি কারো কোন প্রয়োজন হয় তবে সে যেন উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে এবং খুব সুন্দরভাবে যেন তা করে। পরে যেন দু’রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে, এরপর যেন আল্লাহর হামদ করে ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরূদ সালামের পর এই দু’আটি পড়ে:

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ الْحَلِيمُ الْكَرِيمُ سُبْحَانَ اللَّهِ رَبِّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ أَسْأَلُكَ مُوجِبَاتِ رَحْمَتِكَ وَعَزَائِمَ مَغْفِرَتِكَ وَالْغَنِيمَةَ مِنْ كُلِّ بِرٍّ وَالسَّلاَمَةَ مِنْ كُلِّ إِثْمٍ لاَ تَدَعْ لِي ذَنْبًا إِلاَّ غَفَرْتَهُ وَلاَ هَمًّا إِلاَّ فَرَّجْتَهُ وَلاَ حَاجَةً هِيَ لَكَ رِضًا إِلاَّ قَضَيْتَهَا يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ

‘‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তিনি অতি সহিষ্ণ ও দয়ালু, সকল দোষ-ক্রটি থেকে পবিত্র তিনি, মহান আরশের প্রভু। সকল প্রশংসা আল্লাহর, তিনি সারা জাহানের রব। আপনার কাছেই আমরা যাঞ্ছা করি, আপনার রহমত আকর্ষণকারী সকল পূণ্যকর্মের ওয়াসীলায়, আপনার ক্ষমা ও মাগফিরাত আকর্ষণকারী সকল ক্রিয়াকাণ্ডের বরকত, সকল নেক কাজ সাফল্য লাভের এবং সব ধরনের গুনাহ থেকে নিরাপত্তা লাভের। আমার কোন গুনাহ যেন মাফ ছাড়া না থাকে। কোন সমস্যা যেন সমাধান ছাড়া না যায় আর আমার এমন প্রয়োজন যাতে রয়েছে আপনার সন্তুষ্টি তা যেন অপূরণ না থাকে, হে আর রাহমানুর রাহিমীন; হে সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু। - ইবনু মাজাহ ১৩৮৪, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৪৭৯ [আল মাদানী প্রকাশনী]

প্রশ্ন : সালাতুল হাজতের নামাজ কি যেকোন সময় পড়া যায়?

উত্তর : একমাত্র আওয়াল ওয়াক্ত ছাড়া যে কোন সময় পড়া যায় । 

প্রশ্ন : নিয়ত কিভাবে করতে হয়?

উত্তর : সাধারন নামাজে নিয়ত্যের ন্যায় নফল নামাজে নিয়ত করতে হয় । 


ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

ছালাতুল হাজত ( ﺻﻼﺓ ﺍﻟﺤﺎﺟﺔ): বিশেষ কোন বৈধ চাহিদা পূরণের জন্য আল্লাহর উদ্দেশ্যে যে দু’রাক‘আত নফল ছালাত আদায় করা হয়, তাকে ‘ছালাতুল হাজত’ বলা হয়।[ ইবনু মাজাহ হা/১৩৮৫, ছালাত অধ্যায়-২ অনুচ্ছেদ-১৮৯] সঙ্গত কোন প্রয়োজন পূরণের জন্য বান্দা স্বীয় প্রভুর নিকটে ছবর ও ছালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করবে’ (বাক্বারাহ ২/১৫৩)। এজন্য শেষ বৈঠকে তাশাহহুদের পর সালাম ফিরানোর পূর্বে আশু প্রয়োজনীয় বিষয়টির কথা নিয়তের মধ্যে এনে নিম্নোক্ত সারগর্ভ দো‘আটি পাঠ করবে। ﺍَﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺁﺗِﻨَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﺣَﺴَﻨَﺔً ﻭَﻓِﻲ ﺍﻟْﺂﺧِﺮَﺓِ ﺣَﺴَﻨَﺔً ﻭَﻗِﻨَﺎ ﻋَﺬَﺍﺏَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ - (আল্লা-হুম্মা রববানা আ-তিনা ফিদ্দুন্ইয়া হাসানাতাঁও ওয়া ফিল আ-খেরাতে হাসানাতাঁও ওয়া ক্বিনা আযা- বান্না-র)। ‘হে আল্লাহ! হে আমাদের পালনকর্তা! আপনি আমাদেরকে দুনিয়াতে মঙ্গল দিন ও আখেরাতে মঙ্গল দিন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব হ’তে রক্ষা করুন’। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) অধিকাংশ সময় এ দো‘আটিই পড়তেন’।[ বুখারী হা/৪৫২২, ৬৩৮৯; ঐ, মিশকাত হা/২৪৮৭, মুসলিম, মিশকাত হা/৮১৩] দো‘আটি সিজদায় পড়লে বলবে, ﺍَﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺁﺗِﻨَﺎ ... আল্লা-হুম্মা আ- তিনা...। কেননা রুকূ-সিজদায় কুরআনী দো‘আ পড়া চলে না। [মুসলিম, মিশকাত হা/৮৭৩, ‘ছালাত’ অধ্যায়-৪, ‘রুকূ’ অনুচ্ছেদ-১৩; নায়ল ৩/১০৯ ] হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﺫَﺍ ﺣَﺰَﺑَﻪُ ﺃَﻣْﺮٌ ﺻَﻠَّﻰ ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন কোন সংকটে পড়তেন, তখন ছালাতে রত হ’তেন’।[আবুদাঊদ হা/১৩১৯ ‘ছালাত’ অধ্যায়-২, অনুচ্ছেদ-৩১২; ছহীহুল জামে‘ হা/৪৭০৩; ঐ, মিশকাত হা/১৩১৫] উক্ত বিষয়ে হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর স্ত্রী সারা’র ঘটনা স্মরণ করা যেতে পারে। যখন তিনি অপহৃত হয়ে মিসরের লম্পট সম্রাটের নিকটে নীত হলেন ও অত্যাচারী সম্রাট তার দিকে এগিয়ে গেল, তখন তিনি ওযূ করে ছালাতে রত হয়ে আল্লাহর নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করে বলেছিলেন,ﺍَﻟﻞَّﻫُﻢَّ ﻻَ ﺗُﺴَﻠِّﻂْ ﻋَﻠَﻰَّ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﻜَﺎﻓِﺮَ ‘হে আল্লাহ! এই কাফেরকে তুমি আমার উপর বিজয়ী করোনা’। সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন এবং উক্ত লম্পটের হাত-পা অবশ হয়ে পড়েছিল। তিন-তিনবার ব্যর্থ হয়ে অবশেষে সে বিবি সারা-কে সসম্মানে মুক্তি দেয় এবং বহুমূল্যবান উপঢৌকনাদি সহ তার খিদমতের জন্য হাজেরাকে তার সাথে ইবরাহীমের নিকট পাঠিয়ে দেয়।[বুখারী হা/২২১৭ ‘ক্রয়-বিক্রয়’ অধ্যায়-৩৪, অনুচ্ছেদ-১০০; আহমাদ হা/৯২৩০, সনদ ছহীহ]

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ