দুধ চা
ক্লান্তিতে খুবই কার্যকরী হতে পারে। তাই জানা থাকলেও আসুন জেনে নেই কিভাবে সহজে সতেজ হওয়ার দরকারী এক কাপ চা বানানো যেতে পারে। প্রথমে পানি গরম করতে হবে। পানি ফুটতে শুরু করলে চুলা নিভিয়ে ফেলতে হবে | গরম পানিতে প্রয়োজন মত চা পাতা ঢেলে ৩-৪ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার প্রয়োজন মত দুধ ও চিনি মিশিয়ে পান করতে পারেন। এটাই হবে শরীরকে সতেজ (সাময়িক) করার সত্যিকারের কার্যকরী চা।
নিয়মিত চা ও কফি পানে কমে হৃদরোগের ঝুঁকি। দেখা গেছে চা বা কফি হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ৫ গুণ কমিয়ে দেয়। এছাড়া এ সময় স্ট্রোকের কারণে মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়েনা বলে সম্প্রতি এক গবেষণায় পাওয়া গেছে।
নেদারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারের গবেষকরা এ গবেষণাটি করেন। তারা বলেন, কফির চেয়ে চা-ই বেশি উপকারী। দিনে ৬ কাপ চা পানে করোনারি সমস্যার ঝুঁকি প্রায় ৪৫ শতাংশ কমে যায়। এদিকে দিনে ২ কাপ কফি পানের অভ্যাস হৃদরোগের ঝুঁকি ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা দুটি পানীয় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের ফ্রি-রেডিক্যাল কমিয়ে দেয়। গবেষণার ফলাফল জার্নাল অফ অ্যামেরিকান হার্ট ফাউন্ডেশনে প্রকাশিত হয়।
গ্রিন টি বা সবুজ চা
গ্রীন টি; বা সবুজ চায়ের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে৷ বিশেষ করে স্বাস্হ্য সচেতন মানুষদের কাছে৷ আর এই চায়ের প্রতি এই প্রজন্মের ছেলে মেয়েদেরও বেশ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে ৷ বলা যায় ফিগার ঠিক রাখতে অনেকেই এই গ্রীন টি-এর প্রতি বেশি ঝুঁকছেন৷ গ্রীন টি প্রথমে ছিলো ওষুধ তারপর পানীয়তে পরিণত হয়েছে৷
এই চা কেবল পিপাসাই মেটায় না দূর করে ক্লান্তিও ৷ এই তথ্যগুলো বিভিন্ন গবেষণার মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে এসেছে৷ জাপানের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যারা দিনে দুই কাপের বেশি গ্রীন টি পান করেন তারা মানসিকভাবে অনেক বেশি ফিট৷
গবেষকরা বলেছেন যে, শারীরিক এবং মানসিকভাবে যারা ফিট তাদের জন্য গ্রীন টি বেশি উপকারে আসে৷ গ্রীন টি ইমিউন সিস্টেমকে আরো শক্তিশালী করে৷ তবে এই চা নিয়মিত পান করতে হবে৷ সবুজ চায়ে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ই, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ছাড়াও বিভিন্ন খনিজ উপাদান যা প্রতিটি মানুষের শরীরেই প্রয়োজন ৷ স্বাস্হ্য ঠিক রাখতে সাহায্য তো করেই এমনকি নিয়মিত এই চা পান মানুষের আয়ু বাড়াতেও ভূমিকা রাখে৷
গ্রীন টি তৈরির নিয়মাবলী চায়ের প্যাকেটের গায়ে লেখা থাকে৷ উন্নতমানের এই ব্যয়বহুল চা শুধুমাত্র সৌখিন মানুষদের পক্ষেই পান করা সম্ভব৷ তবে সাধারণ মানের গ্রীন টি আজকাল প্রায় প্রতিটি সুপার মার্কেটেই পাওয়া যায়৷ নিয়মিত সবুজ চা পান করলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিও কিছুটা কমিয়ে দেয়৷
green_tea
সবুজ চা পাতার আরও কিছু উপকারিতা:
১. কিডনি রোগের জন্য উপকারী।
২. হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।
৩. পোকামাকড় কামড়ালে যদি ওই স্থান চুলকায় ও ফুলে যায় তাহলে সবুজ চায়ের পাতা দিয়ে ঢেকে দিলে আরাম বোধ হয়।
৪. রক্তে কোলেস্টোরেলের মাত্রা কমায়।
৫. ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী।
৬. এর লিকার দাঁতের ক্ষয়রোধ ও মাড়ি শক্ত করে।
৭. কাটা জায়গায় গ্রিন টির লিকার লাগালে রক্ত পড়া বন্ধ হয়।
৮. নিয়মিত চা পানে রক্ত চলাচল ভাল হয়৷
৯. পেট পরিষ্কার রাখে আর মস্তিষ্ককে রাখে সচল ৷
আদা চা
উপকরণ: পানি পরিমাণমত, এলাচি- খোসা চারটি, থাই পাতা দুটি, আদাকুচি এক টেবিল-চামচ, চিনি চার-পাঁচ চামচ, মৌরি এক চা-চামচ, দারচিনির গুঁড়া এক চা-চামচ এবং চা-পাতা তিন-পাঁচ চামচ।
প্রণালী: বড় পাত্রে ওপরের সব উপকরণ (চা-পাতা ছাড়া) একসঙ্গে মিলিয়ে চুলায় দিয়ে ২-৩টা বলক তুলে নিতে হবে। এখন চা-পাতা দিয়ে নেড়ে আবার ২-৩টা বলক তুলে চুলা বন্ধ করে ঢেকে রাখতে হবে। পাঁচ মিনিট পর ছেঁকে গরম গরম পরিবেশন। কেউ শখ করে আবার কারও অভ্যাস হয়ে গেছে আদা চায়ে। কাজের ফাঁকে, কখনো আড্ডায় দেদার চলে চা পর্ব।
পথের ধারে গজিয়ে ওঠা ঝুপড়ি ঘরগুলোতেও অলস আর কর্মঠ মানুষ যখন চায়ের তৃষ্ণা মেটায়, তখন আদা চাকেই সঙ্গী করে। আবার কারও ঘরে আনেক আয়োজনে যত্নে তৈরি করা হয় আদা চা।
ঘরে কিংবা বাইরে শখ করে কিংবা অভ্যাসে যেমন করেই চা পান করেন, এই আদা চা কিন্তু ভারি উপকারী।
আদা চায়ের উপকারিতাঃ
* আদা চা বমি ভাব দূর করে।
* সাধারণ সর্দি- কাশিতে ওষুধের বিকল্প হিসেবে কাজ করে আদা চা।
* গলাব্যথায় গরম আদা চা পান করলে গলাব্যথা কমে যায়।
* এসিডিটির বিরুদ্ধেও আদা চা কাজ করে।
* আদা চা পান করলে হজমের সমস্যা কমে।
সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, দিনে এক কাপ চা পান সুস্থ রাখতে পারে আপনার চোখকে। গ্লুকোমা থেকে চোখকে বাঁচাতে নাকি রীতিমতো ওষুধ হিসেবে কাজ করে চা। কিন্তু শর্ত একটাই। এই চা হতে হবে ধোঁয়া ওঠা কাপের। আইসড টি কিংবা অন্য কোনো নরম পানীয় সেবনে কিছুই ফল হবে না, বলছে গবেষণা।
চোখের ভেতরের প্রয়োজনীয় তরলের চাপের ভারসাম্য হারানোকেই চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলে গ্লুকোমা। বর্তমানে অন্ধত্বের পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ কিন্তু এটাই। সারা পৃথিবীতে গ্লুকোমা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে পঞ্চাশ কোটি। ২০২০-এর মধ্যে সংখ্যাটা ৬০ কোটি ছাড়াবে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের 'ন্যাশনাল হেলথ অ্যান্ড নিউট্রিশন একজামিনেশন সারভে'র পক্ষ থেকে ১০০০০ মানুষের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, টানা এক বছর প্রতিদিন এক কাপ গরম চা যারা নিয়মিত পান করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে গ্লুকোমায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমেছে।
ধূমপান করেন না, এবং ডায়াবেটিসের রোগী নন, এরকম মানুষের ক্ষেত্রেই অবশ্য কাজে দেবে এই টোটকা। তাতে কি বা আসে যায়! বাঙালির তো চা ছাড়া এমনিতেই চলে না। তা সে রকে বসা আড্ডার আসরেই হোক, অথবা অফিসের কাজের চাপে 'স্ট্রেস' কমাতেই হোক। আর শীতকাল হলে তো কথাই নেই।
আমার লেখা চা নিয়ে একটা আর্টিকেলের কিছু অংশ তুলে দিচ্ছি-
চায়ে রয়েছে অনেক বেশি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়। শুধু তা-ই নয়, চা রক্ত জমাট বাঁধাও দূর করে। আর লৌহ শোষণের মাত্রা কমায় এই চা। এতে পটাশিয়াম, জিংক তো আছেই। এই চা বিতৃষ্ণা ও বমির ভাব দূর করে, পাকস্থলীর কর্মক্ষমতা বাড়ায়, শরীরের প্রদাহ কমায়, শ্বাসতন্ত্রের রোগ মোকাবিলা করে, রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে। এছাড়া কিডনী রোগ, টিউমার ইত্যাদি সারতে সাহায্য করে। দৈনিক ১০ কাপ চা পাকস্থলীর ক্যান্সার থেকে বাঁচাতে পারে। তবে প্রয়োজন থেকে বেশি চা পান করলে গায়ের রঙ কালো হয়ে যায়।