ঘুম না আসলে করণীয় ৫টি বিষয় – *ঘুম না আসার কারণ খুঁজে বের করুন – ঘুম না আসার পেছনে কোন বিশেষ কারণ আছে কিনা সেটা খুঁজে বের করুন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নানামুখী টেনসন ঘুম না আসার পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে থাকে। যতক্ষণ মাথায় টেনসন থাকবে ততক্ষণ ঠিকমতো ঘুমাতে পারবেন না, এটাই স্বাভাবিক। সম্ভব হলে মাথা থেকে এই টেনসন ঝেড়ে ফেলুন। * গরম পানি দিয়ে গোসল করুন – রাতে ঘুম না আসলে মৃদু গরম পানি দিয়ে গোসল করে ফেলুন। এতে শরীর অনেক হালকা মনে হবে। শরীরের কোষগুলোর মধ্যে শিথিলতা চলে আসবে। তাহলে ঘুম ভালো হবে। * পাতলা কাপড় পড়ুন – ঘুমানোর সময় যতটা হালকা হয়ে ঘুমানো যায় ততোটাই ভালো। ভারী-মোটা কাপড় ত্যাগ করে হালকা ট্রাউজার, পাতলা টিশার্ট পড়ে ঘুমানোর চেষ্টা করুন । *ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি থেকে দূরে থাকুন – ঘুম না আসলে অনেকে মোবাইলে, কম্পিউটারে সময় কাটায়। কিন্তু এতে করে ঘুম না আসাটাকে আরও দীর্ঘায়িত করে দেয়া হয়। ঘুমানোর অন্তত ১ ঘণ্টা আগে থেকেই ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। মোবাইলে অ্যালার্ম দিলেও সেই মোবাইলকে একেবারে মাথার কাছে রাখবেন না। * ঘুমানোর জায়গা পরিষ্কার করে নিন – ঘুমানোর জায়গা যদি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না থাকে ঠিকমতো তাহলে সেটা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। আর ঘুমানোর খাটে এসব ময়লা টয়লা বিরক্তির কারণও হতে পারে। তাই বিছানা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেয়া উচিত।
পরিশ্রম করুন নিয়মিত তাহলেই ঘুম আসবে।। আর পাশাপাশি শুয়ে শুয়ে গান শুনা, চিন্তা করা,নেট ব্রাউজ এবং আশে পাশে কোন আলো জ্বালানো অথবা শব্দ হলে সহজে ঘুম পায় না অনেকের তাই এই ব্যাপারে গুলোও লক্ষনীয়... যদি কোন পারিপার্শ্বিক সমস্যা(আলো,শব্দ)না থাকে আর ঘুম ননা হবার সমস্যাটা স্থায়ী এবং প্রকর রূপ ধারন করে তবে ডাক্তার দেখান...
১. ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে বই পড়ুন: ঘুম আনয়নের সব থেকে সহজ উপায় হল বিছানায় যাবার জন্য সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে বাতি নিভিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ুন। তারপর বিছানার পাশে হালকা আলোর বাতিতে বই পড়ুন। কোন মজাদার বই পড়ার দরকার নেই, এমন কোন বই পড়বেন যাতে আপনার বিরক্তিবোধ হয় এবং আপনি ঘুম অনুভব করেন। বই পড়ার কারনে আপনি ইলেক্ট্রনিক পণ্য অর্থাৎ মোবাইল, ট্যাব, টিভি ইত্যাদি হতে দূরে থাকবেন। যার ফলে আপনার ঘুমের সমস্যা রোধ হবে। তাই, আগামীবার থেকে আপনার বিছানায় একটি বই রাখবেন। ২. বিছানায় যাবার সময় নির্ধারণ করুন: একটি নির্ধারিত সময়ে অবশ্যই আপনার বিছানায় যাবার জন্য নিজেকে বাধ্য করবেন। এর ফলে আপনার ঘুমের সমস্যায় যথেষ্ট উপকার পাবেন। এর ফলে শুধু আপনার শারীরিক উন্নতি নয়, মানসিকভাবেও অনেক সুফল ভোগ করবেন। একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাবার অভ্যাস করলে সেই সময়ে প্রাকৃতিকভাবেই ঝিম ভাব চলে আসবে। তখন আপনার ঘুমাতে যেতে হবে। ছোট শিশুদের ক্ষেত্রেও একই। সময়মত ও একই সময়ে ঘুমানোর কারনে মস্তিষ্কের সেরোটোনিন ও মিলাটোনিন ঠিকমত কাজ করতে পারে। যার ফলে আপনার সার্কাডিয়ান তালের সামঞ্জস্য বজায় থাকে। তাহলে, এটা বলা বাহুল্য যে ভালোভাবে ঘুমের জন্য সঠিক সময়ে ঘুমানো অপরিহার্য। ৩. স্বাস্থ্যকর ডায়েট পদ্ধতি অনুসরণ করুন: সবকিছুর ক্ষেত্রে সকলেই স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন। আপনি শুনে অবাক হতে পারেন যে, ভালো ডায়েটের সাথে খাবারের সম্পর্ক রয়েছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, পর্যাপ্ত পরিমাণ শাকসবজি ও ফলমূল খাবার ফলে শরীরের পালস এর গতি বৃদ্ধি পায়, যার ফলে ঘুমের সমস্যা দূর হয়। খাবারের ফলে শরীরের ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম এবং অন্যান্য অপরিহার্য খনিজ এর চাহিদা পূরণ হয়। এছাড়া সঠিক ডায়েটের কারনে শরীরের ট্রিপটোফেন এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। যা সঠিক সময়ে ঘুম আসার সাথে সাথে সঠিক সময়ে জাগ্রত হবার জন্য সাহায্য করে। ৪. আপনার কক্ষ ঠাণ্ডা রাখুন: ঘুমের সময় আপনার শয়ন কক্ষটি খুব শান্ত রাখার চেষ্টা করুন। বছরের পর বছর বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুমানোর সময় মানুষের শরীরের তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পায়। তাই, যতটা সম্ভব ঘরের তাপমাত্রা ঠাণ্ডা রাখলে ঘুম ভালো হয়। তবে কক্ষের তাপমাত্রা বেশী ঠাণ্ডা করার প্রয়োজন নেই। পাখা চালিয়ে ঘুমালে বা একটি জানালা খুলে রাখলেই যথেষ্ট। দেখবেন, খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েছেন। ৫. গরম দুধ পান করুন: আগেরদিনের মানুষেরা বিশ্বাস করত ঘুমের আগে গরম দুধ পান করলে ঘুম ভালো হয়। তাদের এই বিশ্বাস এখন বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, ঘুমাতে যাবার পূর্বে গরম দুধ পান করার ফলে মানসিক প্রশান্তি বিরাজ করে। এতে সারারাতের ঘুম ভালো হয়। শরীরের ট্রিপটোফেন এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। যার ফলে ঘুমের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এই ৫টি কাজ অভ্যাসে পরিবর্তন করলে প্রতিদিন রাতে বিছানায় যাবার মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে ঘুম চলে আসবে। তাই যাদের ঘুম নিয়ে সমস্যা রয়েছে, তারা এ পদ্ধতিগুলো চেষ্টা করে দেখতে পারেন।–সূত্র: লাইফ হ্যাক।
ঘুম না আসলে করনীয় :::--- ১. আপনার বিছানা আর শোবার ঘর যেন আরামদায়ক হয়। বেশি গরম বা বেশি ঠান্ডা যেন না হয় এবং সেখানে যেন বেশি আওয়াজ না হয়। ২. আপনার বিছানায় যেন আপনি ঠিকভাবে শুতে পারেন। বেশি শক্ত হলে আপনার কোমর বা কাঁধে ব্যথা হবে, আর বেশি নরম হলে শরীর যথেষ্ট সাপোর্ট পাবে না। দশ বছর বাদে বাদে তোষক পাল্টানো দরকার। ৩. এক্সারসাইজ করুন। বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না, কিন্তু নিয়মিত হাঁটতে বা সাঁতার কাটতে চেষ্টা করুন। এক্সারসাইজ করার সবচেয়ে ভাল সময় দিনের বেলা। আপনি চাইলে মধ্য দুপুরে বা সন্ধ্যার পর এক্সারসাইজ করতে পারেন। এর পরে করলে ঘুমের ব্যাঘাত হতে পারে। ৪. বিছানায় শোবার আগে রিল্যাক্স করুন। কেউ কেউ অ্যারোমাথেরাপি ব্যবহার করেন। ৫. যদি কোনো চিন্তা আপনার মাথায় ঘোরে এবং সে ব্যাপারে তখনি কিছু করা সম্ভব না, তাহলে সেটা লিখে রাখুন। শোবার আগে নিজেকে বলুন যে কাল আমি এই সমস্যা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করব। ৬. যদি ঘুম না আসে, উঠে রিলাক্সিং কোনো কাজ করুন। বই পড়ুন, টিভি দেখুন অথবা হাল্কা গান চালান। খানিকক্ষণ বাদে আপনার ঘুম ঘুম লাগলে বিছানায় শুতে যান।
ঘুম না হওয়ার সমস্যা দূর করার উপায় : ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম দুটিই ঘুম উদ্রেককারী খাবার। একারনেই ঘুমুতে যাওয়ার পূর্বে ১ গ্লাস উষ্ণ গরম দুধ পান করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন ডাক্তারগণ। ঘুম সমস্যা দূর করতে তাই প্রতি রাতে ২০০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম ও ৬০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার রাখুন খাদ্যতালিকায়। লেটুস পাতা মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, মাথা ব্যথা এবং মাংসপেশির ব্যথা জনিত সমস্যা অনেকের রাতে ঘুম হয় না। এবং অনিদ্রায় ভুগে থাকেন। লেটুস পাতা এই সমস্যার বেশ ভালো একটি সমাধান। এটি মস্তিষ্ক রিলাক্স করতে সহায়তা করে। ঘুমুতে যাওয়ার আগে ৩০ থেকে ১২০ মিলিগ্রাম পরিমাণ লেটুস পাতা দিয়ে জুস তৈরি করে পান করে নিতে পারেন। অ্যারোমা থেরাপি অ্যারোমা থেরাপি ঘুমের জন্য অনেক ভালো একটি জিনিস। কিছু সুঘ্রাণ রয়েছে যা ঘুমের উদ্রেক করে যেমন, ল্যাভেন্ডার, কমলালেবুর ঘ্রাণ ইত্যাদি। অ্যারোমা থেরাপির মাধ্যমেও ঘুমের উদ্রেক ঘটে। এই সকল সুঘ্রাণের এসেনশিয়াল অয়েল বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। এই সকল তেল বালিশের কভারে স্প্রে করে রাতে ঘুমোতে যান। খুব সহজে ঘুমের উদ্রেক হবে। এছাড়াও পায়ে তিলের তেল ম্যাসেজ করে নিতে পারেন। ঘুম দ্রুত আসবে। মেলাটোনিন মেলাটোনিন একটি হরমোন যা আমাদের ঘুম নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। দেহে এই হরমোনটি উৎপাদনের জন্য নানা ধরণের হোমিওপ্যাথি ঔষধ পাওয়া যায়। ঘুমানোর পূর্বে ০.৩ থেকে ০.৫ মিলিগ্রাম পরিমাণে ঔষধ ভালো ঘুমের সহায়ক। মেডিটেশন ও যোগব্যায়াম খুব মৃদু কোনো রিলাক্সিং মিউজিকের সাথে সাথে মাত্র ৫ থেকে ১০ মিনিটের মেডিটেশন করার অভ্যাস করুন। মেডিটেশনের সময় সব মনোযোগ শুধুমাত্র নিজের শ্বাস প্রশ্বাসের মধ্যে আনার চেষ্টা করুন। এই পদ্ধতিটি বেশ প্রাচীন কাল থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। বোরিং কোনো বই পড়ুন ক্লাসে এবং পড়তে বসলে খুব ভালো ঘুম আসে। এই পদ্ধতিটি ঘুমের ক্ষেত্রে ব্যবহার করুন। খুব কটমটে কিংবা অনেক বোরিং কোনো বই নিয়ে বিছানায় শুতে যান। দেখবেন কিছুক্ষণের মধ্যেই দুচোখ ভেঙে ঘুম চলে আসবে।