শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Jobedali

Call

আপনাকে একপাশ কাত হয়ে কিছুটা হাটুমুড়ি দেয়ার মত হয়ে শুয়ে থাকতে হবে অথবা বিছানার এক পাশে বসতে হবে আর তখন একজন এনেসথেসিওলোজিস্ট (anesthesiologist) আপনার পিঠের নিচের দিকের যেই অংশে ইনজেকশন দেয়া হবে সেই অংশটা পরিষ্কার করবেন এবং অবশ করবেন।

এরপর ধীরে ধীরে আপনার পিঠের নিচের দিকের নির্ধারিত অংশ দিয়ে সাবধানে সুঁই ঢুকিয়ে দিবেন। বিষয়টা শুনে হয়ত আপনার মনে হতে পারে যে এই পদ্ধতিতে প্রচুর ব্যথা পাবেন, তবে বেশিরভাগ নারীরাই এই পদ্ধতি অনুসরণের সময় তেমন একটা ব্যথা পান না।

এনেসথেসিওলোজিস্ট তখন সুইয়ের মধ্যে দিয়ে ক্যাথিটারটি ভীতরে প্রবেশ করাবেন অতঃপর সুঁই সরিয়ে ফেলে ক্যাথেটারটি টেপ দিয়ে ভালো করে আটকে রাখবেন। এরপর এই অবস্থাতেই আপনি শুয়ে থাকতে পারবেন, এতে করে ক্যাথেটারের কোন প্রকার ক্ষতি হবে না। প্রয়োজন অনুসারে এই ক্যাথেটার দিয়ে ওষুধ সরবরাহ করা হবে।

তবে এই আনুষঙ্গিক কাজগুলো শেষ করার সাথে সাথেই আপনাকে পূর্ণ রূপে ওষুধ দেয়া শুরু করা হবে না। প্রাথমিক অবস্থায় পরীক্ষামূলক ভাবে অল্প কিছু পরিমাণে ওষুধ আপনাকে দেয়া হবে। এর মাধ্যমে দুটি ব্যাপার নিশ্চিত করা হবে। প্রথমটি হল, আপনার এপিডিউরাল ক্যাথেটারটি একদম সঠিক যায়গায় প্রবেশ করানো হয়েছে এবং দ্বিতীয় যে ব্যাপারটি নিশ্চিত করা হয় যে পূর্ণ রূপে ওষুধ দেয়া শুরু করলে আপনার কোন প্রকার সমস্যা হবে না।

এই সময়ে আপনার শিশুর হৃদকম্পনের দিকে সবসময় লক্ষ্য রাখা হবে এবং এপিডিউরাল পদ্ধতি অনুসরণ করার কারণে আপনার শরীরে বড় ধরনের কোন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে কি না সেটা জানার জন্য প্রতি পাঁচ মিনিট পরপর আপনার রক্ত চাপ পরীক্ষা করা হবে।

সাধারণত এই এপিডিউরাল পদ্ধতিতে লোকাল এন্সথেসিয়া অর্থাৎ অবশ করার ওষুধ এবং নারকোটিক অর্থাৎ অবচেতন করার ওষুধের একটা পরিমিত পরিমাণের মিশ্রণ আপনার শরীরে প্রবেশ করানো হবে।

লোকাল এন্সথেসিয়ার মাধ্যমে আপনার শরীরের ব্যথা, স্পর্শ, উচ্চতাপমাত্রা ইত্যাদির অনুভূতিগুলোকে বাধা প্রদান করা হয় এবং নারকোটিকের মাধ্যমে আপনার ব্যাথার অনুভূতিকে ভোঁতা করে দেয়া হয়। এইসময় আপনার পা নাড়াতে কোন অসুবিধা হবেনা। এই দুটো উপাদানের কোন একটি ব্যাবহারের চাইতে এদের মিশ্রণের অল্প ডোজই ভালো ব্যাথানাশক হিসেবে কাজ করে।

ওষুধের প্রথম ডোজ দেয়ার ১০ থেকে ২০ মিনিট পর থেকেই আপনি অবশ অনুভূতিটা খেয়াল করতে থাকবেন  যদিও ওষুধ প্রয়োগের কয়েক মিনিটের মধ্যেই আপনার জরায়ুর নার্ভাস সিস্টেম অবশ হতে শুরু করবে। আপনার প্রসব শেষ হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ডাক্তাররা আপনাকে নিয়মিত ক্যাথেটারের মাধ্যমে ওষুধ গ্রহণ দিতে থাকবেন।

আবার আপনি চাইলে আপনার সহ্য শক্তির উপর ভিত্তি করেও ওষুধ নিতে পারেন অর্থাৎ ওষুধ গ্রহণের মাত্রাটা নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখে দিতে পারেন এবং সেই অনুযায়ী আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী মাত্রায় ওষুধ ক্যাথেটারের মাধ্যমে গ্রহণ করতে পারবেন। তবে যেহেতু মাত্রার পরিমাণটা আপনার হাতে থাকবে, তাই যাতে করে ওষুধ খুব বেশি মাত্রায় চলে না যায় এইজন্য আপনি একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ মত ওষুধ নিজ থেকে নিতে পারবেন।

আপনার সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর আপনার পিঠের নিম্নাংশ থেকে ক্যাথেতারটি সরিয়ে ফেলা হবে। (তবে আপনার শিশু যদি সিজারের মাধ্যমে হয় তাহলে মাঝেমধ্যে ডাক্তাররা সিজার পরবর্তী ব্যথানাশক ওষুধ দেয়ার জন্য এটা রেখে দিতে পারেন) এছাড়া ক্যাথেতারটি সরানোর সময় আপনি সামান্য পরিমাণ ব্যথা আপনি অনুভব করবেন। আর সেটা এতটাই কম যে শরীর থেকে টেপ খোলার সময় থেকেও কম ব্যথা আপনি অনুভব করবেন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ