বাংলাদেশের জনপ্রিয় একজন হুজুর যার ওয়াজ বা কুরআন ও হাদিসের আলোচনা অধিকাংশ মানুষেরই পছন্দ মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ বলেছেন গীবতের গুনাহ নাকি আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত ও লজ্জিত হয়ে কান্নাকাটি করে ক্ষমা চাইলেও নাকি আল্লাহ গোনাহ মাফ করেন না। গোনাহ মাফ চাইতে হলে যে ব্যক্তির গীবত করেছি তার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে, সে যদি ক্ষমা করে তাহলেই আল্লাহ ক্ষমা করবে কথাটা কতটুকু সত্য?  আমি তো জেনে আসছি ভাই, আল্লাহ তা'য়লা শিরক আর বান্দার হোক আদায় ছাড়া আর যত বড় গোনাহ করি না কেনো সে যদি তার গোনাহ স্বীকার করে গোনাহের রাস্তা থেকে ফিরে আসে তাহলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবে, তাহলে গীবতের গোনাহ কেনো বান্দার কাছে ক্ষমা না চেয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে আল্লাহ মাফ করবেন না? আর ভাই, আমরা তো যেনে না যেনেও বাংলাদেশের কত হাজার হাজার মানুষের গীবত গাই। তাহলে প্রত্যেকের কাছে গিয়েই ক্ষমা চাওয়া তো সম্ভব না? তাহলে আল্লাহ কি আমাকে মাফ করবেন না? যদি, আমার অন্য গোনাহ না থাকে বা না করি বা আল্লাহ গুনাসমূহ মাফ করে দেন, তাহলে আল্লাহ পরকালে কি আমাকে এই গীবতের জন্য জাহান্নামী করে দিবে? ভাই বিষয়টা আমি ক্লিয়ার হতে চাই।


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

গুনাহ যত বড় হোক না কেন আল্লাহর ক্ষমা, মহানুভবতা ও অনুগ্রহ তার চেয়ে বড়।

আল্লাহর হক সংশ্লিষ্ট সব গুনাহ পরকালে তিনি মাফ করলেও তার সঙ্গে শিরক তথা অংশীদার স্থাপন করার গুনাহ মাফ করবেন না। বরং তাদের চিরস্থায়ী আবাসস্থল জাহান্নাম।

কোরআনের বানীঃ নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তার সাথে শরিক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। আর যে লোক অংশীদার সাব্যস্ত করল আল্লাহর সাথে, সে যেন আল্লাহকে অপবাদ দিলো। [সুরা নিসা : ৪৮]

এ আয়াতে বলা হয়েছে যে, তিনি তার সাথে শিরক করাকে ক্ষমা করবেন না। এর বাইরে যত গোনাহ আছে সবই তিনি যার জন্যে ইচ্ছে ক্ষমা করে দিবেন। আর যে তার সাথে কাউকে শরীক করে সে অবশ্যই এক বড় মিথ্যা অপবাদ রটনা করল।

অন্য আয়াতে অবশ্য আল্লাহ তাআলা শিরককারীদের মধ্যে যারা তাওবা করবে তাদেরকে ক্ষমা করার কথা ঘোষণা করেছেন।

আল্লাহ বলেন, তবে যে তাওবা করে, ঈমান আনে ও সৎকাজ করে, ফলে আল্লাহ তার গুনাহসমূহ নেক দ্বারা পরিবর্তন করে দিবেন। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [সূরা আল-ফুরকান: ৭০]

সুতরাং তাওবা করলে শিরকও মাফ হয়ে যায়।

গীবতের গুনাহঃ যদি কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যক্তির গীবত যদি করে থাকেন, তাহলে তার কাছে থেকে ক্ষমা নিতে হবে। কারণ, এটা তার হকের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ইচ্ছাকৃতভাবে তার হক নষ্ট করেছেন, তার হকের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে তার কাছে থেকে ক্ষমা নিতে হবে। এখন যদি ক্ষমা নেওয়ার কাজটি আপনার সাধ্যের বাইরে চলে যায় বা তিনি মারা গিয়ে থাকেন, বা অগনিত তাহলে আল্লাহর কাছে তাওবা করুন এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। হতে পারে আল্লাহ বান্দাদের হকগুলো পরিপূর্ণ করে দিতে পারেন।

অতএব, আপনার কর্তব্য হচ্ছে– আল্লাহ অভিমুখী হওয়া। কৃত কর্মের জন্য অনুতপ্ত হওয়া। পুনরায় সেসব কর্মে লিপ্ত না হওয়ার দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেয়া।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ