★ট্রান্সফরমার একটি গতিহীন নিশ্চল বৈদ্যুতিক যন্ত্র যা বিদ্যুৎ শক্তিকে একটি বৈদ্যুতিক বর্তনী থেকে অপর একটি বৈদ্যুতিক বর্তনীতে একই কম্পাংকে স্থানান্তর করে। ★গঠনঃ- ট্রান্সফরমার মূলত দুটি অংশ থাকে:-১=প্রাইমারি কয়েল বা মুখ্য কুণ্ডলী: এই কয়েলে এ.সি. বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ২=সেকেন্ডারি কয়েল বা গৌণ কুণ্ডলী: এই কয়েলে বিদ্যুৎ শক্তি স্থানান্তর হয়। একটি কাচা লোহার আয়তাকার মজ্জা বা কোর-এর দুই বিপরীত বাহুতে তার পেঁচিয়ে ট্রান্সফরমার তৈরি করা যায়। কোরের যে বাহুতে পরিবর্তী প্রবাহ বা বিভব (এ.সি.) প্রয়োগ করা হয় তাকে মুখ্য কুণ্ডলী বলে। আর যে কুণ্ডলীতে পরিবর্তী বিভব আবিষ্ট হয় তাকে গৌণ কুণ্ডলী বলে। স্টেপ-আপ (উচ্চধাপী) ট্রান্সফর্মারে প্রাইমারি কয়েলের চেয়ে সেকেন্ডারি কয়েলের পাক সংখ্যা বেশি থাকে। আর স্টেপ-ডাউন (নিম্নধাপী) ট্রান্সফর্মারে প্রাইমারি কয়েলের চেয়ে সেকেন্ডারি কয়েলের পাক সংখ্যা কম থাকে। তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া।
একটি কাচা লোহার কোরের উপর অন্তরিত তামার দুটি কন্ডলী পেচিয়ে ট্রান্সফর্মার তৈরি করা হয়। বাস্তবে এক এক কাজের জন্য ট্রান্সফর্মারের ডিজাইন ভিন্ন ভিন্ন হয় কিন্তু মূলনীতি একই, যেমন বাজারে যেগুলো কিনতে পাওয়া যায় তার গঠনে কাচা লোহার কোরটি বাইরে থেকে বর্গাকার কিন্তু এটি পাতলা লোহার পাত দিয়া ইংরেজী E অক্ষরের মত করে বানানো। প্লাস্টিকের ফ্রেমের উপর তারের কুন্ডলী পেচিয়ে সেই ফ্রেমের দুপাশ থেকে লোহার পাত গুলো প্রবেশ করিয়ে বর্গাকার রুপ দিয়া বানানো হয়। তার কুন্ডলীর একটিকে বলে প্রাইমারী কয়েল(যেটি ইনপুট) অপরটিকে বলে সেকেন্ডারী বা গৌন কুন্ডলী(যেটি অউটপুট) কাজ করার নীতিঃ ট্রান্সফর্মার ডিসি ইনপুটে কাজ করেনা। প্রাইমারী কুন্ডলীতে যখন আপনি পরবর্তী প্রবাহ বা এসি বা ফ্রিকোয়েন্সি যুক্ত বিদ্যুৎ ইনপুট করবেন তখন একটি পুর্ন চক্রের হাফ পজিটিভ প্রবাহ যদি সামনে যায় তবে তবে লোহার কোরটি আবেশিত হয়ে চুম্বক বল রেখা উৎপন্ন করে যা গৌন কুন্ডলীর ভেতর দিয়া চলে যায় বলে চুম্বক বলরেখার জন্য গোণ কুন্ডলীতে বলরেখার শক্তি অনুযায়ী বিদ্যুৎ সৃষ্টি হয়(উল্লেখ্য বল রেখার শক্তি নির্ভর করে ইনপুট বিদ্যৎ শক্তির উপর) একই ভাবে হাফ ঋনাত্মক চক্রের জন্য বলরেখা বিপরীত দিকে যায় বলে গৌন কুন্ডলীতে নেগেটিভ বিদ্যুৎ সৃষ্টি হয়। সামগ্রিক ভাবে দেখা যায় যে ইনপুটের পুর্ন চক্র যেভাবে ছিল আউটপুটে সেই ভাই পুর্ন চক্র সম্পাদিত হয়ে বিদ্যুতের সৃষ্টি করে। এভাবে ইনপুটের বিদ্যুত আউটপুটে ট্রান্সফার হয়। এখন ধরি প্রাইমারী কয়েলের পেচ সংখ্যা গৌন কুন্ডলীর চেয়ে বেশি কাজেই দুই কুন্ডলীর প্যাচ সংখ্যার অনুপাতে ইনপুটে প্রদত্ত ভোল্ট আউটপুটে যাবেনা, আবার আমরা জানি শক্তি সৃষ্টি বা ধবংস হয়না(যান্ত্রিক ত্রুটি বাদে) তাই ভোল্ট কমে গেলেও আউটপুটের প্রবাহ মান বা এম্পিয়ার ইনপুটের চেয়ে বেশি হয়ে শক্তির ভারসাম্য বজায় থাকবে, বিপরীত ভাবে যদি আউটপুয়াতের প্যাচ বেশি হয় তবে ভোল্ট বৃদ্ধি পাবে এম্পিয়ার কমবে। মিচে রেশিও সূত্রঃ pp/pv=sp/sv এখানে পিপি হচ্ছে প্রাইমারী প্যাচ, পিভি হচ্ছে প্রাইমারী ভোল্ট, এসপি হচ্ছে সেকেন্ডারী প্যাচ, এসভি সেকেন্ডারী ভোল্ট। এই সুত্র থেকে ট্রান্সফারের যেকোন মান বের করতে পারবেন।