প্রথম কথা হলো, আমাদের জ্ঞান বুদ্ধি একেবারেই সামান্য। এক সাগর পানির মধ্য হতে এক ফোটা পানি পরিমাণ জ্ঞান সকল সৃষ্টিজীবের মাঝে বণ্টন করে দেয়া হয়েছে। আমাদের এ স্বল্প বুদ্ধি দ্বারা আমরা আল্লাহর অনেক কিছুই বুঝতে পারি না এবং পারবো না। ভাগ্যের ব্যাপারটিও ঠিক এ ধরনেরই একটি ব্যাপার। এ কারণে সাহাবায়ে কেরামকে একদা এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে দেখে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে গিয়েছিলেন। এবং বলেছিলেন, এসব বিষয় আলোচনা করার জন্যই কি তোমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে ? তাই এসব জটিল বিষয় নিয়ে আলোচনা না করাই শ্রেয়। কারণ এসব বিষয়ের গভীরে গেলে অনেক ক্ষেত্রে ঈমান ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আল্লাহ আমাদের যা করতে বলেছেন আমরা সেটাই করবো। চাই আমাদের তা বুঝে আসুক চাই না আসুক। উপরন্তু আল্লাহ সবকিছু জানেন এ কারণে কি কারো গুনা হতে পারবে না ? জানা এবং গুনা হওয়ার মাঝে সংঘর্ষটা কোথায় ? আল্লাহ শুধু জানেন কিন্তু কাউকে তো অন্যায় কাজ করতে বাধ্য করেন নি। তিনি মানুষকে ভালো কাজ এবং মন্দ কাজ করার ইচ্ছা শক্তি দিয়েছেন। ইচ্ছা করলে সে ভালো কাজ করতে পারে আবার খারাপও কাজ করতে পারে। সুতরাং তার ইচ্ছা শক্তির প্রয়োগ হিসেবে তার বিচার হবে। যাক এ বিষয়ে অনেক আলোচনা হতে পারে। সেসব আলোচনায় নিরত না হওয়াটাই কাম্য।
আল্লাহর কাছে কোনো কিছু গোপন থাকে না। তাই বলে আপনি পাপ করলে পাপ হবেনা এটা একটা অযৌক্তিক কথা।আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদাত করার জন্য। যদি কখনো আমরা তথা আল্লাহর বান্দার কোন ভূলকাজ পাপ কাজ করে তখন উচিত আল্লাহর কাছে তওবা করা।আর আল্লাহ তওবাকারী ভালোবাসেন।আপনি পাপ করছেন তো সেটা পাপ হবেই।আর যদি তওবা করেন তাহলে আপনার পাপকাজ টি সাওয়াবের কাজে পরিনত হবে।তবে তওবার শর্ত তিনটি কারো কারো ক্ষেত্রে চারটি। তা হলোঃ১। পাপকাজ করার কারনে লজ্জিত হওয়া ২।আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া ৩।যে পাপের কাজটি করেছেন তা দ্বিতৃয়বার না করা। আরেকটি যদি কারো হক্ব মেরে খান তা ফিরিয়ে দেয়া।
আমরা দুনিয়াতে আসার পর খারাপ কাজ করব সেটা আল্লাহ আগে থেকেই জানতেন। কারন, তিনিই একমাত্র গায়েব জানেন। কিন্ত সেই খারাপ কাজের জন্য আমাদের গুনাহ হবে এই জন্য যে, এই দুনিয়াটা হলো পরীক্ষার হল। এই হলের পরীক্ষার্থী আমরা। আমাদের পরীক্ষার সিলেবাস কোরআন এবং সহীহ হাদিস। মৃত্যুর পরেই এই পরীক্ষার সময় শেষ হবে। এরপর কবরে ভাইভা টেস্ট হবে। তারপর কিয়ামত দিবসে প্রকাশ হবে চূরান্ত ফলাফল। পরীক্ষার খাতাও দেখানো হবে। তারপর মানুষ বুঝে যাবে সে কি পাস করলো না ফেল করলো। এরপর পুরষ্কার এবং তিরষ্কার প্রধান অনুষ্ঠান। পুরষ্কৃতদের সুখের যেমন কোন অভাব থাকবে না তিরষ্কৃতদের যন্ত্রনার কোন কমতি থাকবে না। জনাব! কিয়ামতের দিন আমাদের ভাল মন্দের বিচার হবে। দুনিয়াতে যেমন কাজের শেষে প্রাপ্য পাই। ঠিক তেমন-ই আল্লাহ তায়ালা আমাদের সওয়াব বা গুনাহ প্রাপ্য হিসাবে দেন। এজন্য ভাল এবং খারাপ কাজের জন্য আমাদের সওয়াব তথা গুনাহ হয়।