দৃষ্টি শক্তি কিভাবে বারাবো কেউ কি বলবেন
মানুষের শরীরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গই হলো চোখ। কারণ এই চোখ দিয়েই আমরা পুরো পৃথিবী দেখতে পাই। চলুন জেনে নেয়া যাক, দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে খাদ্যতালিকায় কোন খাবারগুলো রাখা জরুরি- গাজর অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর একটি সবজি। এটি কাঁচা বা রান্না- দুভাবেই খাওয়া যায়। সুস্থ্ চোখ পেতে হলে যেসব খাবার খাওয়া উচিত তার মধ্যে গাজর অন্যতম।গাজরে রয়েছে ভিটামিন-এ এবং বিটা ক্যারোটিন; যা চোখকে সুস্থ্ রাখতে সাহায্য করে। বিটা ক্যারোটিন অত্যন্ত শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এটি ছানি পড়া, বয়সের কারণে চোখের জ্যোতি কমে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে। সবুজ শাক চোখের যত্নে খুব উপকারী খাবার। আমাদের দেশের নানা রকম সবুজ শাক যেমন, পালং, পুই, কচু, লাউ ইত্যাদিকে অবহেলা করবেন না। সবুজ শাকে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। সেই সাথে এটি ম্যাঙ্গানিজের খুব ভালো উৎস। এগুলো চোখের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চোখের রেটিনাকে রক্ষা করতে সাহায্য করে সবুজ শাক। সবুজ শাক দৃষ্টিশক্তি ভালো করতেও সাহায্য করে । চোখ ভাল রাখার আরেকটি খাবার ভুট্টা। ভুট্টায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন এ, সি ও লাইকোপিন; যা দৃষ্টিশক্তি প্রখর করতে সাহায্য করে৷আধ-কাপ রান্না ভুট্টায় একজন মানুষের চোখের জন্য প্রয়োজনীয় সব উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে। তাই নিয়মিত ভুট্টা খেতে পারেন। আর নিয়মিত ভুট্টা খেলে চোখের হলুদ পিগমেন্ট হারানোর কোন ঝুঁকি থাকে না। এমনকি ছানি পড়ার ঝুঁকি কমে যায়।
চোখে পানির ঝাপটা : সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে প্রথম কাজ হবে চোখে পানির ঝাপটা দেয়া। বেসিনের সামনে গিয়ে চোখ পুরোপুরি বন্ধ করে প্রথমে ২০ বার কুসুম কুসুম গরম পানির ঝাপটা দিন। এরপর ২০ বার ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিন। আবার রাতে শোয়ার আগে শেষ কাজ হবে চোখে পানির ঝাপটা দেয়া। এবারে উল্টোভাবে। অর্থাৎ প্রথম ২০ বার ঝাপটা দেবেন ঠাণ্ডা পানিতে এবং পরের ২০ বার ঝাপটা দেবেন হালকা গরম পানিতে। এতে চোখে রক্ত চলাচল বাড়বে। চোখ হবে প্রাণবন্ত। চোখ ঢাকা : আরাম করে শিথিলভাবে মেরুদণ্ড সোজা করে বসুন। সামনের টেবিলে কনুই রেখে হাতের তালু দিয়ে চোখ ঢাকুন। এমনভাবে ঢাকুন, চোখের পাতা যেন হাতের তালু স্পর্শ না করে। এরপর খুব মনোহর প্রাকৃতিক দৃশ্য কল্পনা করুন। আগে দেখে মুগ্ধ হওয়া কোনো প্রাকৃতিক দৃশ্য মনের আয়নায় অবলোকন করুন। কাজ করতে করতে বা পড়তে পড়তে যখনই আপনার মনে হবে যে চোখ; যেন আর চলছেই না, বা ক্লান্ত হয়ে চোখে ব্যথা করছে, তখনই আপনি ৫ থেকে ১০ মিনিট এভাবে হাতের তালু দিয়ে চোখ ঢেকে কল্পনায় সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্যে হারিয়ে যান। যে দৃশ্য কল্পনা করছেন, তার রং, গন্ধ, শব্দ পুরোপুরি অনুভব করার চেষ্টা করুন। ডা. বেটস তার বইয়ে লিখেছেন, মনের চোখে কোন জিনিস দেখলে বাস্তবে তা আরও বেশি স্পষ্টভাবে দেখা যায়। দূরে ও নিকটে তাকান : নিকট ও দূরে তাকানোর অভ্যাস বাড়ান। এই তাকানোর অনুশীলন আপনি দুই হাতের দুই আঙ্গুল দিয়েও করতে পারেন। ডান হাতের তর্জনী চোখ থেকে আধ হাত দূরে রাখুন। আর বাঁ হাত যতটা সম্ভব দূরে নিয়ে তর্জনী সোজা করে রাখুন। এবার প্রথমে ডান- অর্থাৎ কাছের হাতের তর্জনীর দিকে দুই চোখ দিয়ে ৫ সেকেন্ড এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকুন। ক্ষণিকের জন্যে চোখের পাতা ফেলুন। এরপর আবার দূরে অবস্থিত বাম হাতের তর্জনীর ডগায় এক দৃষ্টিতে ৫ সেকেন্ড তাকান। ক্ষণিকের জন্যে পলক ফেলুন। আবার কাছের আঙুলের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করুন। এভাবে ১০ বার একই অনুশীলন করুন। পলক ফেলুন : দশ-পনেরো সেকেন্ড পরপর চোখের পাতা মুহূর্তের জন্যে বন্ধ করার অভ্যাস করুন। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে না থেকে মাঝে মাঝে চোখের পাতা পড়তে দিন। এতে চোখ পরিষ্কার ও পিচ্ছিল থাকবে।
আমাদের এ আয়োজনে এমন কিছু খাদ্য দ্রব্য নিয়ে আলোচনা করব যার মাধ্যমে দৃষ্টি শক্তি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
১) সবুজ শাক-সবজিঃ শাক না খেলে চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটা সম্ভব নয় ।আর চোখে যদি আলো না থাকে, তাহলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। অনেক সময় অন্ধত্বও দেখা দিতে পারে। ।কেননা বয়স যত বাড়তে থাকবে চোখের দৃষ্টি শক্তি তত কমতে থাকবে। তাই তো প্রতিদিন নিয়ম করে সবুজ শাক সবজি খেতে পারেন। কারণ এই ধরনের শাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং জিয়াক্সেনথিন নামে বেশ কিছু উপকারি উপাদান থাকে। এ উপাদানগুলো ছানি ছাড়াও একাধিক চোখের রোগ থেকে আপনাকে মুক্তি দেবে।
২) চোখ ভাল রাখতে ডিম অধিক কার্যকারী। ডিমে থাকা উপকারী পদার্থ শরীরে লুটেইন, জিয়াক্সেনথিন এবং জিঙ্কের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে। এই উপাদানগুলি চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে দারুন ভাবে সাহায্য করে থাকে।
৩) লেবু জাতীয় ফললেবু, কমলা লেবু এবং পাতি লেবু বেশি করে খাওয়া শুরু করুন। এই সব ফলে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি রয়েছে। এই ভিটামিগুলো ছানি প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে। সেই সঙ্গে দৃষ্টিশক্তিরও উন্নতি ঘটায়।
৪) বাদামঃবাদামে থাকা উপস্থিত ভিটামিন চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । তাই যদি চশমা ব্যবহার করতে না চান, তাহলে আজ থেকেই রোজের ডায়েটে বাদামকে অন্তর্ভুক্ত করুন। দেখবেন উপকার পাবেন।
উপরোক্ত খাবার গুলো খেতে পারেন।।এগুলো আমাদের চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়ায়।।