রাসুল (সঃ) রাতের প্রথম প্রহরে তারাবীহর নামাজ আদায় করেছেন কি? তার নামাজের ধরন কেমন ছিল, কুরআন তেলাওয়াত কি দ্রুত করতেন ? ২৭ এর রাত্রে কি খতম দিতেন? প্রতিবার দুই বা চার রাকাত পরার পর কতক্ষন বিরতি দিয়ে আবার শুরু করেছেন? সরাসরি হহিহ হাদিস থেকে জানতে চাই।


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাঝে মধ্যে সাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে তারাবী পড়েছেন। কত রাকাত পড়েছেন তা সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্টভাবে কোন সহী সূত্রে জানা যায় না। 

তবে যেসব হাদিস এসেছে, সেগুলো থেকে জানা যায়, তিনি রাতের প্রথম প্রহরেও তারাবির নামাজ পড়েছেন। এমনকি প্রথম রাত থেকে শেষ রাত পর্যন্ত লম্বা নামাজ পড়েছেন!

তিনি কুরআন তিলাওয়াত দ্রুত করতেন না।

তিনি আমাদের মতো জামাতবদ্ধ হয়ে সবসময় তারাবির নামাজ পড়েননি। তাই ২৭ তারিখে খতম দেওয়ার প্রশ্ন আসে না।

.

শাওকানী বলেছেন,

فقصر الصلاة المسماة بالتراويح على عدد معين وتخصيصها بقراءة مخصوصة لم ترد به سنة

অর্থাৎ তারাবী নামাযকে বিশেষ সংখ্যায় ও বিশেষ কেরাতে আবদ্ধ করার ব্যাপারে কোন হাদীস আসেনি। দ্র, নায়লুল আওতার।

নওয়াব সাহেব স্পষ্ট করে বলেছেন,

ان صلاة التراويح سنة بأصلها ثبت أنه عليه السلام صلاها في ليالي ثم ترك شفقة على الأمة أن لا تجب على العامة أو يحسبوها واجبة ولم يأت تعيين العدد في الروايات الصحيحة المرفوعة

অর্থাৎ তারাবী মূলতঃ সুন্নত। একথা প্রমাণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েক রাত এটি পড়েছিলেন। অতঃপর উম্মতের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে তিনি এটি ছেড়ে দিয়েছেন। তাঁর আশংকা ছিল সাধারণের উপর এটি ফরজ হয়ে যায় কি না, কিংবা তারাই এটিকে ফরজ মনে করে বসে কি না। তবে এর নির্দিষ্ট সংখ্যা কোন সহীহ মারফূ হাদীসে উল্লেখ করা হয়নি। দ্র, আল ইনতিকাদুর রাজীহ, পৃ,৬১

সুবকী র.ও তার ‘শারহুল মিনহাজ’ গ্রন্থে লিখেছেন,

اعلم أنه لم يبنقل كم صلى رسول الله صلى الله عليه وسلم في تلك الليالي هل هو عشرون أو أقل

অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ রাতগুলোতে বিশ রাকাত না তার কম পড়েছিলেন সে কথা বর্ণিত হয়নি। দ্র, আল মাসাবীহ, পৃ ৪৪

আল্লামা ইবনে তায়মিয়াও প্রায় একই ধরনের কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন,

ومن ظن أن قيام رمضان فيه عدد معين موقت عن النبي صلى الله عليه وسلم لا يزاد فيه ولا ينقص فقد أخطأ

অর্থাৎ যে ব্যক্তি মনে করবে রমযানে তারাবীর রাকাত সংখ্যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে নির্দিষ্ট ও নির্ধারিত, এতে বাড়ানো কমানো যাবে না, সে ভুল করবে। (দ্র. মাজমাউল ফাতাওয়া, ২২/২৭২)

.

তবে আমাদের মধ্যে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে তারাবির নামাজের যে আমল চলে আসছে, এটা সাহাবাদের থেকে বর্ণিত। 

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ