আসালামুআলাইকুম,আমার বয়স ২৬, ২ বছর ধরে নিয়মিত নামাজ পড়ি, পিছনের বছর গুলোর নামাজ আদায় করার কোন সহজ উপায় আছে কি।
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Islam

Call

নামাজ একটি অবশ্য পালনীয় বিধান। প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ, সবল বিবেকবান মুসলমান নর-নারীর ওপর প্রত্যহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ফরজ। ইচ্ছাকৃত নামাজ ছেড়ে দেয়া কবিরা গুনাহ। পরে তার কাজা আদায় করা ওয়াজিব। কেউ যদি তওবাও করে তাহলেও কাজা নামাজ আদায় করার হুকুম বিলুপ্ত হয় না, এমনকি হজ করার মাধ্যমেও মাফ হয় না। কেউ যদি কাজা নামাজ আদায় না করে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং এ রোগে মারা যায় আর অসুস্থাবস্থায় লোকটি ওয়ারিশদের তার পক্ষ থেকে কাজা নামাজের ফেদিয়া দেয়ার কথা বলে যায়Ñ এ অবস্থায় তার ওয়ারিশদের ওপর ফেদিয়া দেয়া ওয়াজিব। এমন অনেক লোক রয়েছে, যাদের জিম্মায় অনেক কাজা নামাজ রয়েছে। আর কাজা নামাজ আদায় করার সময় এ নিয়ত করতে হবে, আমি অমুক দিনের জোহরের নামাজ কাজা আদায় করছি। যদি দিন-তারিখ মনে না থাকে, এমতাবস্থায় এভাবে নিয়ত করবে আমি আমার জীবনের সর্বপ্রথম জোহর নামাজের কাজা আদায় করছি। এভাবে প্রত্যেক কাজা নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে নিয়ত করবে। এভাবে ততদিন পর্যন্ত কাজা নামাজ আদায় করতে থাকবে, যতক্ষণ না ব্যক্তির মন এ সাক্ষ্য দেবে, তার জিম্মায় কোনও নামাজ কাজা নেই। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হল, প্রত্যেক নামাজের জামাতের কিছু সময় আগে মসজিদে চলে যাবেন, যেন একাধিক ওয়াক্তের কাজা আদায় করতে পারা যায়। যেমন কোনও ব্যক্তি আসর নামাজের আজানের সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে গিয়ে আগের কাজা আসর নামাজ আদায় করল। এভাবে কাজা নামাজ আদায় করতে করতে একটা সময় আসবে যখন মনে হবে তার আর কোনও নামাজ কাজা নেই। যে ব্যক্তির জিম্মায় কাজা নামাজ রয়েছে, তার জন্য উত্তম হল নফল নামাজের পরিবর্তে কাজা নামাজ আদায় করা। কেন না সে কাজা নামাজ সম্পর্কে কিয়ামতের দিন জিজ্ঞাসিত হবে। ফতওয়ায়ে মাহমুদিয়ার ১১তম খণ্ডের ৪৫৩নং পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, তাহাজ্জুদ, এশরাক ও অন্যান্য নফল নামাজের সময় কাজা আদায় করবে। এজন্য যে, আশা করা যায় এ সময় কাজা আদায় করার মাধ্যমে তাহাজ্জুদ, এশরাক ও অন্যান্য নফল নামাজেরও সওয়াব পাওয়া যাবে। শবেবরাত, শবেকদরেও কাজা আদায় করবে। উল্লেখ্য, কাজা নামাজ আদায় করার সময় শুধু ফরজ ওয়াজিব আদায় করবে। সুন্নত আদায় করতে হবে না। যেমন কোনও ব্যক্তির যদি এশার নামাজ কাজা হয়ে থাকে, এমতাবস্থায় সে শুধু চার রাকাত ফরজ এবং তিন রাকাত বেতের নামাজ আদায় করবে। তবে কারও যদি ফজর নামাজ কাজা হয়ে যায় এবং তা দ্বিপ্রহরের আগে আদায় করার ইচ্ছা করে, এমতাবস্থায় সুন্নতসহ ফরজ নামাজ আদায় করবে। আর কারও যদি জুমার নামাজ কাজা হয়ে যায় তাহলে জুমার কাজা আদায় করবে না বরং চার রাকাত জোহর নামাজ আদায় করবে। সংগৃহতি - যুবাইর আরাফাত, দনৈকি যুগান্তর, তাং এপ্রিল ১২, ২০১৩, শুক্রবার

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
mosibulsk

Call

শাইখ ‘আব্দুল ‘আযীয ইবনু বায-রাহিমাহুল্লাহ বলেন : “যে ইচ্ছাকৃতভাবে সালাত ত্যাগ করে, সঠিক মতানুসারে তার উপর কোনো কাযা নেই। বরং তাকে আল্লাহ তা‘আলার কাছে তাওবাহ করতে হবে; কারণ সালাত ইসলামের স্তম্ভ, তা ত্যাগ করা ভয়াবহ অপরাধ সমূহের একটি। বরং ইচ্ছাকৃতভাবে তা (সালাত) ত্যাগ করা ‘বড় কুফর’ যা ‘আলিমগণের দুটি মতের মধ্যে সবচেয়ে সঠিকটি, কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে প্রমাণিত হয়েছে,তিনি বলেছেন : “আমাদের ও তাদের (কাফেরদের) মাঝে চুক্তি হলো সালাত; তাই যে তা ত্যাগ করে, সে কাফের হয়ে গেলো।” [ইমাম আহমাদ ও সুনানের সংকলকগণ সহীহ ইসনাদ সূত্রে বুরাইদাহ-রাদিয়াল্লাহু আনহু-হতে বর্ণনা করেছেন] আপনাকে প্রতি সালাতের সাথে বা অন্য সালাতের সাথে কাযা করতে হবেনা। এক্ষেত্রে আপনার উপর কর্তব্য হলো আল্লাহর নিকট সত্যিকার অর্থে তাওবাহ করা। আর তা হলো- (১) পূর্বে যা গত হয়েছে তার ব্যাপারে অনুতপ্ত হওয়া; (২) সালাত ত্যাগ একেবারে ছেড়ে দেয়া; এবং (৩) এ মর্মে দৃঢ় সংকল্প করা যে, এ কাজে আপনি আর কখনও ফিরে যাবেন না। যে তাওবাহ করে আল্লাহ তার তাওবাহ কবুল করেন। আল্লাহ -সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা- বলেছেন: “হে মু’মিনগণ তোমরা সবাই আল্লাহর নিকট তাওবাহ করো,যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।” [আন-নূর : ৩১] আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: পাপ থেকে তাওবাহকারী এমন ব্যক্তির ন্যায় যার কোন পাপই নেই। তাই আপনাকে সত্যিকার অর্থে তাওবাহ করতে হবে, নিজের নাফসের সাথে হিসাব-নিকাশ করতে হবে, সঠিক সময়ে জামা‘আতের সাথে সালাত আদায়ের ব্যাপারে সদা-সচেষ্ট থাকতে হবে, আপনার দ্বারা যা যা হয়েছে সে ব্যাপারে আল্লাহর কাছে মাফ চাইতে হবে এবং বেশি বেশি ভাল কাজ করতে হবে। আর আপনাকে কল্যাণের সুসংবাদ জানাই, আল্লাহ-সুবহানাহূ ওয়া তা‘আলা -বলেছেন : “আর যে তাওবাহ করে, ঈমান আনে, সৎকর্ম করে এবং হিদায়াতের পথ অবলম্বন করে, নিশ্চয়ই আমি তার প্রতি ক্ষমাশীল।” [ত্বাহা : ৮২] সূরা আল-ফুরক্বান-এ আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেন : “যে তাওবাহ করেছে, ঈমান এনেছে এবং ভাল কাজ করেছে; আল্লাহ তাদের খারাপ কাজ সমূহকে ভাল কাজে পরিবর্তন করে দিবেন। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ মহা ক্ষমাশীল, পরম দয়াময় ।” [আল-ফুরক্বান : ৬৯-৭০] আমরা আল্লাহ’র কাছে চাই আমাদের ও আপনার জন্য তাওফীক্ব, বিশুদ্ধ তাওবাহ ও কল্যাণের পথে অবিচলতা। [মাজমূ‘ ফাত্ওয়া আশ-শাইখ ইবন বায(১০/৩২৯,৩৩০)]

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ