হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে ভারী বৃষ্টির দরুন মসজিদে জামাত আদায় না করে বাড়িতে পড়ার দৃষ্টান্ত আছে। ইসলাম বাস্তবতা বুঝে সেই বাস্তবতার আলোকে চলতে বলে। এ যুক্তিতেই আজানে নামাজের জন্য আহ্বান জানানো এবং ‘সাল্লু ফি রিহালিকুম’ ‘সাল্লু ফি বুয়ুতিকুম’ বলে ঘরে বা বাড়িতে নামাজ পড়ার উৎসাহ দেওয়াকে সমর্থন করা যায়। কারণ মানুষের নিরাপত্তা, জীবনের নিশ্চয়তা প্রদানকে ইসলাম অবশ্যই গুরুত্ব দেয়। আর বাস্তবতার আলোকে এসব বিষয় অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।
ভয়াবহ কোনো পরিস্থিতি না থাকলে কিংবা কোনো সংক্রমণের ভয় না থাকলে মসজিদ কিংবা অন্য কোথাও নামাজে জামাআত অনুষ্ঠিত হলে তাতে মুসল্লিরা একে অপরের সাথে মিলে, ফাঁকা বন্ধ করে কাতার সোজা করে দাঁড়ানো সুন্নত৷ দুজন মুসল্লির মাঝে একজন দাঁড়াতে পারে এ পরিমাণ ফাঁকা রাখা সুন্নাতের পরিপন্থী৷ হাদিসের বর্ণনা থেকে তা সুস্পষ্ট। এ সম্পর্কিত কিছু হাদিস তুলে ধরা হলো-
- নামাজে কাতার সোজা করা এবং পরস্পর মিলে মিলে দাঁড়ানো সম্পর্কে হাদিসে সুস্পষ্ট ঘোষণা রয়েছে। বুখারির এক বর্ণনায় এসেছে-
أَقِيْمُوْا صُفُوْفَكُمْ وَ تَرَاصُّوا
অর্থ : আপনারা আপনাদের কাতার সোজা করুন এবং পরস্পর মিলে দাঁড়ান।' (বুখারি)
- বুখারি মুসলিমের অন্য বর্ণনায় এসেছে-
سَوُّوا صُفُوفَكُمْ فَاِنَّ تَسْوِيَةَ الصُّفُوفِ مِن اِقَامَةِ الصَّلاةِ
অর্থ : ‘কাতার সোজা করুন, কারণ কাতার সোজা করা নামাজ প্রতিষ্ঠার অন্তর্ভুক্ত।’ (বুখারি-মুসলিম)
- নাসাঈ ও আবু দাউদের এক বর্ণনায় এসেছে-
‘কাতার সোজা করুন, কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে দাঁড়ান, কাতারের মাঝে ফাঁক বন্ধ করুন, হাতগুলো সহজ ও স্বাভাবিকভাবে রাখুন, শয়তানের জন্য কাতারের মধ্যে খালি জায়গা বন্ধ করুন। যে ব্যক্তি কাতার মিলাবে, আল্লাহ তাকে মিলাবেন। আর যে ব্যক্তি কাতারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করবে, আল্লাহ তাকে বিচ্ছিন্ন করে দিবেন। (আবু দাউদ, নাসাঈ)
- হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
مَنْ سَدّ فُرْجَةً فِى صَفٍّ رَفَعَهُ اللهُ بِهَا دَرَجَةً وَ بَنٰى لَهُ بَيْتًا فِي الْجَنّةِ
যে ব্যক্তি কাতারের মধ্যকার ফাঁক বন্ধ করবে, এর বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা তার একটি মর্যাদা বাড়িয়ে দেবেন এবং জান্নাতে তার জন্য একটি ঘর তৈরি করবেন।' (তাবারানি, মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা)