অনেক মানুষ মেয়ে ভারা করে হটেলে বা বাসায় সেক্স করে।অনেকে বলে যে আমি যখন তাকে ভারা করি তখন সে আমার দাসি,আর দাসির সাথে সেক্স করা জায়েয।এই বিষয়ে ইসলামের বিধান কি?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

ভারা কারা মেয়েদের সাথে সেক্স করাটা ইসলামে হারাম। কেননা এটা যিনা।

যিনা বা ব্যভিচার বলতে বুঝায় ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক বিবাহ বন্ধন ছাড়া অবৈধ পন্থায় যৌন তৃপ্তি লাভ করাকে। ইসলামী শরীয়াতে অবৈধ পন্থায় যৌন সম্ভোগ সম্পূর্ণ হারাম এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন: “তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেও না। নিশ্চয় এটি অশ্লীল কাজ ও অসৎ পন্থা।” (সূরা বনী ইসরাঈল: ৩২)।

তিনি অন্য স্থানে বলেন: “কোন রকম অশ্লীলতার কাছেও যেও না তা প্রকাশ্যে হোক বা গোপনে হোক।” (সূরা আল আনআম: ১৫১)।

আগে জানতে হবে অধিকারভুক্ত দাসী কি?

অধিকারভুক্ত দাসী বলতে ঐ সমস্ত নারীদেরকে বুঝায়, যারা কাফের ছিল। মুসলিমগণ যুদ্ধে তাদের পুরুষদের পরাজিত করে তাদেরকে নিজেদের অধিকারে নিয়ে আসে, তখন তাদেরকে মুসলিমদের জন্য বিয়ে ছাড়াই হালাল করা হয়েছে।

যুদ্ধ-বন্দিনী দাসীদের সাথে সংগম করার ব্যাপারে কিছু নিয়মনীতি রয়েছেঃ

(এক) অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে, এটা শুধুমাত্র মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে যুদ্ধ হলেই হতে পারে। কোন কারণে যদি মুসলিমদের মধ্যে পরস্পর যুদ্ধ হয়, কিংবা মুসলিম দুটি রাষ্ট্রে যুদ্ধের সূচনা হয়, অথবা মুসলিমদের কোন জাতিগত বা ভাষাগত বা রাজনৈতিক দাঙ্গা হয় সেখানে যে যুদ্ধ হবে সে যুদ্ধের কারণে কাউকে অধিকারভুক্ত দাস-দাসী বানানোর অধিকার ইসলাম কাউকে দেয়নি। যদি কেউ এটা করতে চায় তবে সেটা হবে সম্পূর্ণ অবৈধ ও ব্যভিচার। এ ধরনের লোকদেরকে ব্যভিচারের শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।

(দুই) যে সমস্ত মেয়ে বন্দী হয় তাদেরকে ইসলামী আইন অনুযায়ী সরকারের হাতে সোপর্দ করে দিতে হবে। সরকার চাইলে তাদেরকে বিনা শর্তে মুক্ত করে দিতে পারে, মুক্তিপণ গ্রহণ করতে পারে, শক্রর হাতে যে সমস্ত মুসলিম বন্দী রয়েছে তাদের সাথে এদের বিনিময়ও করতে পারে এবং চাইলে তাদেরকে সৈন্যদের মাঝে বন্টনও করে দিতে পারে। তাই বন্দী করার সাথে সাথেই কোন সৈনিক তাদের সাথে সংগম করার অধিকার লাভ করে না। তাছাড়া কোন ক্রমেই যুদ্ধাবস্থায় এ অধিকার কারও থাকবে না। যদি কেউ যুদ্ধাবস্থায় এ কাজ করে তবে তাকে শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।

আল্লাহ তায়ালা সূরা নিসা, সূরা মুমিনসহ কোরআনে কারিমের অনেক আয়াতের মধ্যে অধিকারভুক্ত দাসীর কথা উল্লেখ করেছেন। এখানে দাসী বলতে যেসময়ে দাসী কেনা হতো, সেই সময়ের বিধানের কথা আলোচনা করা হয়েছে। কারণ তখনকার সময়ে দাস-দাসী বিক্রি হতো। সেই রকম দাসদাসী যদি থাকে, তাহলে তাদের বিধান হচ্ছে এটি।

কিন্তু বর্তমানে দাস-দাসী কেনাবেচা হয় না। তাই এটি বর্তমানের দাসদাসীদের বিধান নয়। আমাদের অনেকেই অধিকারভুক্ত দাসদাসী বিষয়টি বোঝেন না, অথবা অনেকেই একে ভুল ব্যাখ্যার মধ্যে নিয়ে যান, সেটি হচ্ছে, অনেকেই মনে করেন যে, যারা কর্মচারী আছেন, কাজ করেন অথবা ঘরবাড়ীতে যারা কাজ করে থাকেন, এরাই এই দাসী। বিষয়টি মূলত এমন না। এই ধারনের দাসী বলতে বুঝানো হয়, যাদের কেনা হয়ে থাকে, যারা একেবারেই আপনার মালিকানাভুক্ত।

যারা বলে যে আমি যখন তাকে ভারা করি তখন সে আমার দাসি, আর দাসির সাথে সেক্স করা জায়েয। এটা তাদের চরম ভুল কথা। কারন এরা তো তাদের মালিকানাভুক্ত কেউ না, এরা চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করে।

অধিকারভুক্ত দাসী বলতে এদের বোঝানো হয়নি, বোঝানো হয়েছে ওই সব নারীকে যারা মালিকানাভুক্ত ছিল, দাসী হিসেবে যাদের ক্রয় করা হতো। এই ধরনের দাসী বর্তমান বিশ্বের দুই একটা দেশে থাকলেও থাকতে পারে। সেটি খুব উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নয়, এক কথায় নেই বললেই চলে।

কিতাব বা কুরআনের দলীল; আল্লাহ তা’আলা বলেন, “যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে। তবে নিজেদের পত্নি অথবা অধিকারভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে অন্যথা করলে তারা নিন্দনীয় হবে না। আর যারা এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করে তারাই সীমালঙ্ঘনকারী।” (সূরা মু’মিনূন ৫-৭)।

সুতরাং যে ব্যক্তি তার স্ত্রী ও অধিকারভুক্ত দাসী এখানে অধিকারভুক্ত দাসী বলতে ক্রীতদাসী ও কাফের যুদ্ধবন্দিনীকে বুঝানো হয়েছে। এখানে কাজের মেয়ে, দাসী, খাদেম বা চাকরানী, ভাড়া করা মেয়ে উদ্দেশ্য নয়। এ ছাড়া অন্য কিছু দ্বারা কামলালসা চরিতার্থ করতে চায়, সে ব্যক্তি “এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করে।” বলা বাহুল্য, এই আয়াতের পরিপেক্ষিতে সে সীমালঙ্ঘঙ্কারী বলে বিবেচিত হবে।


ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ