‘মানুষ যার অনুসরণ করে, তাকে ইমাম বলে’।
সঠিক পথের অধিকারী অর্থে আল্লাহ বলেছেন: “আর তাদের বানিয়েছিলাম ইমাম (নেতা) তারা আমার নির্দেশে মানুষকে সঠিক পথ দেখাত।” [আম্বিয়া/৭৩]
ইমাম সাহেব নিয়ত নিয়ত করতে বলতে হবে- "আনা ইমামুল্লিমান হাজারা ও মাইয়্যাফজুরু"। মুতাওয়াজ্জিহান বলার আগে এটা বলতে হবে। উদাহরণস্বরূপ ফজরের ফরজ নামাজে ইমামের নিয়ত দেওয়া হল।
ফজরের ২ রাকাত ফরজ নামাজে ইমাম সাহেবের নিয়ত
বাংলা উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা রাকয়াতাই সালাতিল ফাজরি,ফারজুল্লা-হি তায়ালা আনা ইমামুল্লিমান হাজারা ও মাইয়্যাফজুরু মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
এভাবে প্রত্যেক ওয়াক্তে ইমাম-মতি করতে ওই ওয়াক্তের নামাজের নিয়তের সাথে বলতে হবে- "আনা ইমামুল্লিমান হাজারা ও মাইয়্যাফজুরু"।
★★ তবে, নিয়ত আরবী শব্দ। যার অর্থ হল, ইচ্ছা বা সংকল্প। আর ইচ্ছার স্থান হচ্ছে অন্তর। তা মুখে উচ্চারণ করার প্রয়োজন নেই।
আল্লাহ তাআলা বলেন, “হে নবী! (আপনি বলে দিন, তোমরা মনের কথা গোপন করে রাখ অথবা প্রকাশ করে দাও, আল্লাহ সে সবই জানতে পারেন। আর আসমান জমিনে যা কিছু আছে সে সবই তিনি জানেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে শক্তিমান।” (সূরা আল ইমরান- ২৯)
উমার বিন খাত্তাব রা. বলেন, আমি রাসূল (সা.) কে বলতে শুনেছি, হে লোক সকল! কাজ-কর্মের ফলাফল দৃঢ় সংকল্পের ওপর নির্ভরশীল। প্রতিটি মানুষের ভাগ্যে তাই জুটবে যা সে নিয়ত বা সংকল্প করেছে। (সহীহ বুখারী, হা- ৬৪৭০)
মাওলানা আজিজুল হক সাহেব লিখেছেন যে, আমাদের সমাজে নামাজের নিয়ত মুখে উচ্চারণের বাধ্য বাধকতা স্বরূপ যে কিছু গৎবাঁধা আরবি শব্দের প্রচলন আছে তা নিষ্প্রয়োজন। নিয়ত পড়ার বিষয় নয় বরং নিয়ত করার বিষয় এবং এর সম্পর্ক মুখের সাথে নয় বরং অন্তরের সাথে। (পূর্ণাঙ্গ নামাজ শিক্ষা– ১৪৩ পৃষ্ঠা)
সুতরাং অন্তরের দৃঢ় সংকল্প ও ইচ্ছা করার নামই হল নিয়ত। মুখে আরবিতে নামাজে নিয়ত পড়া নব উদ্ভাবিত বিষয়।