ঘরোয়া চিকিৎসাঃ * কুসুম গরম পানিতে সামান্য একটু লবণ মিশিয়ে দিনে চার-পাঁচবার কুলকুচা বা গার্গল করা যায় * চা, কফি, মধু মিশ্রিত হালকা গরম পানি, গরম গরম সূপ খাওয়া * গলা ব্যাথা থাকাকালীন অবস্থায় সাভাবিকের চেয়ে বেশি পানি পান করতে হবে। আর সেই পানি কুসুম গরম হওয়া ভালো। * ব্যাকটেরিয়াজনিত কারনে বা তীব্র আকার ধারন করলে অ্যান্টবায়টিক ওষুধ খেতে হবে।
গলা ব্যথা হলে করণীয় : ১। গলা ব্যাথার জন্য গরম পানীয় খুব কার্যকর। আদা চা, কফি, মধু মিশানো জল, গরম দুধ প্রভৃতি গ্রহণ করুন। ২। গলা ব্যথা বেশি হলে শীঘ্রই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। অনেক সময় টনসিল ফুলে গলা ব্যথা হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিয়মিত ওষুধ সেবন করুন। ৩। গলা ব্যথার সাথে যদি ঢোক গেলার সময় কাঁটা কাঁটা অনুভূতি হয় তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। গ্ল্যান্ড ফুলে, গ্ল্যান্ডে ইনফেকশন হলে এরকম হয়ে থাকে। সময়মত চিকিৎসা না করালে পরবর্তীতে এটি থেকে জ্বর ও অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। উপরোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করলে এসব সমস্যা থেকে অনেকখানি সমাধান পাওয়া যায়। তবে একটি প্রবাদ আছে, প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ভালো। শীতকালে পর্যাপ্ত গরম কাপড় পরুন। ভোর সকালে বা সন্ধ্যায় বের হওয়ার সময় মাথা ঢেকে বের হন। মাফলার, টুপি প্রভৃতি ব্যবহার করুন। মাথায় কুয়াশা পড়লে তা থেকে মারাত্মক ঠান্ডা লেগে থাকে। যাদের টনসিলের সমস্যা আছে তারা অবশ্যই গলা ঢেকে রাখবেন। ঠান্ড পানীয় পান, ঠান্ডা জল ব্যবহার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। ঋতু পরিবর্তনের ফলে হঠাৎ ঠাণ্ডা লাগা, খুব সহজেই ঠাণ্ডায় গলা ব্যথা হওয়া, অতিরিক্ত গরম সহ্য করতে না পেরে ঢক ঢক করে ঠাণ্ডা পানি গিলে ফেলার কারনে অনেক সময়েই গলা ব্যথার সমস্যা দেখা দেয়। খুসখুসে কাশি আর জ্বরও অনেক সময় গলা ব্যথার করণ হয়ে দাড়ায়। এসময় কণ্ঠনািলতে সংক্রমণ হয়, প্রদাহ হয়, অনেক সময় টনসিল এবং অন্যান্য গ্রন্থি ফুলে যায় ও ব্যথা করে৷ তাই এসকল সমস্যা প্রতিরোধের জন্য সবসময় সচেতন থাকতে হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ মেনে চলতে হবে। আসুন জেনে নিই গলা ব্যথা রোধের ৬টি পরামর্শঃ- গার্গলঃ গবেষণায় পরিলক্ষিত যে, কুসুম গরম পানিতে সামান্য লবন মিশিয়ে গার্গল করা, শুধুমাত্র গলার জীবাণুকেই ধ্বংস করে না, প্রদাহ ও ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে। তাই এক কাপ হালকা গরম পানিতে আধা চা চামচ লবন মিশিয়ে দিনে দুই তিন বার গার্গল করা প্রয়োজন। তরল খাবারঃ হাঁচি, কাশি ও গলার ভিতর প্রচুর তরন নিঃসরণের জন্য শরীর অনেকটাই পানিশুন্য হয়ে পরে। তাই প্রচুর পানি ও তরল খাবার খেতে হবে। তবে অবশ্যই ঠাণ্ডা পানি বর্জন করা প্রয়োজন। গলা ব্যাথায় ধোঁয়া উঠা গরম সূপ দারুণ কাজে দেয়। লজেন্সঃ মেনথল, ইউক্যালিপটাস বা ফেনলসমৃদ্ধ কিছু লজেন্স আছে, যা চুষার ফলে গলা ব্যাথা ও প্রদাহ কমে যায়। এগুলো মূলত ক্লোরোসেপটিক অর্থাৎ গলায় একটা আরামদায়ক অনুভূতি এনে দেওয়ার পাশাপাশি জীবাণুনাশক হিসেবেও কাজ করে৷ চাঃ গলা ব্যাথায় দিনে দুই তিনবার গরম চা আমাদের অনেকটাই আরাম দিতে পারে। সেক্ষেত্রে গ্রিন টি বা হারবাল চা অনেক বেশী কার্যকর। চাইলে চায়ের মধ্যে লেবুর রস বা লবঙ্গজাতীয় জিনিস যোগ করুন, যা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করবে৷ বিশ্রামঃ যেকোনো অসুখে প্রজাপ্ত বিশ্রাম গ্রহন করলেই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠা যায়। তাই কাজ থেকে ছুটি নিন, অবকাশ যাপন করুন, দেখবেন খুব দ্রুত আপনার গলা ব্যাথা সেরে যাবে। ওষুধঃ গলা ব্যাথায় প্যারাসিটামল বা বেদনানাশক ওষুধই যথেষ্ট। তবে ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে গলায় স্ট্রেপটোকক্কাস সংক্রমণ হয়ে থাকতে পারে৷ সে ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক লাগতে পারে৷ তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন৷ আশা করি উপরিউক্ত নিয়োম মেনে চললে আপনার গলা ব্যথা কমে যাবে। আপনি সুস্থ্য থাকতে পারবেন আগের চেয়েও অনেক বেশী।