পুরুষদের জন্য পাঞ্জাবি ছাড়া অন্য কাপড় যেমন, হাফ শার্ট বা গেঞ্জি পড়া জায়েয আছে। তবে কিছু শর্ত আছে। পোশাক এমন হতে হবে যা পুরোপুরি সতর আবৃত করে। পুরুষের জন্য নাভি থেকে হাটুর নিচ পর্যন্ত আর নারীর পুরো শরীর সতর। পোশাকের প্রধান উদ্দেশ্যই হল সতর ঢাকা। আল্লাহ তাআলা বলেন, হে বনী আদম! আমি তোমাদের জন্য অবতীর্ণ করেছি পোশাক, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং সৌন্দর্য দান করে।’ (সূরা আ’রাফঃ ২৬) সুতরাং যে পোশাক এই উদ্দেশ্য পূরণে ব্যর্থ তা যেন শরীয়তের দৃষ্টিতে পোশাকই নয়। তা নাজায়েয পোশাক। এটা পরিত্যাগ করে পূর্ণরূপে সতর আবৃত করে এমন পোশাক গ্রহণ করা জরুরি। তবে হাফ শার্ট বা গেঞ্জি যদি অধিক পাতলা বা আঁটশাট হয় অর্থাৎ যে পোশাক পরিধানের পরও সতর দেখা যায় কিংবা সতরের আকৃতি পোশাকের উপরে ফুটে উঠে তা সতর আবৃত না করার কারণে নাজায়েয পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। এ ধরনের পোশাক পরিধান করা হারাম। আবার বিধর্মীদের পোশাক না হওয়া বিধর্মীদের অনুকরণে পোশাক পরিধান করা নাজায়েয। যেমন ইহুদী-খৃষ্টান পুরোহিতদের পোশাক। হিন্দুদের ধুতি-লেংটি, মাজার পূজারীদের লালশালু এবং শিয়াদের অনুকরণে পূর্ণ কালো পোশাক ইত্যাদি। হাদীস শরীফে এসেছে, নিশ্চয়ই এটি কাফেরদের পোশাক। তোমরা তা পরিধান করো না। (সহীহ মুসলিমঃ ৬/১৪৪; মুসতাদরাকে হাকেমঃ ৪/১৯০) অন্য এক হাদীসে এসেছে, যে ব্যক্তি তাদের পোশাক পরবে সে আমার দলভুক্ত নয়। (তাবারানী আওসাতঃ ৩৯২১; ফাতহুল বারীঃ ১০/২৮৪) উল্লেখ্য যে, বিজাতীয় অনুকরণের উদ্দেশ্যে যে ব্যক্তি শার্ট বা গেঞ্জি পরবে তার জন্য তা নাজায়েয হবে। কিন্তু যদি তাদের অনুকরণের নিয়ত না থাকে তবে তার ক্ষেত্রে এই পোশাক পরলে বিজাতীয় পোশাক পরার গুনাহ হবে না বটে, কিন্তু এরপরও কিছু কারণে এটি অবৈধ পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। যেমন, স্কিন টাইট অর্থাৎ এত আঁটশাট হওয়া যে, সতরের আকৃতি কাপড়ের উপর ফুটে উঠে। হ্যাঁ, গেঞ্জি, শার্ট যদি উপরোক্ত খারাবী থেকে মুক্ত হয় এবং বিজাতীয় অনুকরণের উদ্দেশ্য না থাকে তাহলে তা পরিধান করা নাজায়েয হবে না। অবশ্য এরপরও তা পরিধান করা মাকরূহ এবং তা ব্যবহার না করাই বাঞ্ছনীয়। (দরসে তিরমিযীঃ ৫/৩৩২; ইসলাহী খুতবাতঃ ৫/২৭৮, ফাতাওয়া নিযামিয়াঃ ১/৪২৩; কেফায়াতুল মুফতীঃ ৯/১৬৮; আহসানুল ফাতাওয়াঃ ৮/৬৪)