বিস্তারিত লিখবেন
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
HMMOBAROKBD

Call

আপনার প্রশ্নের দুটি দিক,এক ইসলাম কেন মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করার কথা বলেছে?দুই-আবার কেন মৃত্যু কামনা করতে নিষেধ করেছেন?

প্রথম -মৃত্যুকে কেন স্মরণ করবো?-

কারণ,মৃত্যু এক অনিবার্য সত্যি, প্রতিটি মানুষকে মৃত্যুর স্বাদ পেতে হবে। কবর থেকে কেউ রেহাই পাবে না। তাই সদা সর্বদা কবরের কথা ভাবতে হবে।   মুমিনদের জন্য কবর হলো জান্নাতে যাওয়ার প্রথম সোপান।

আর পাপীদের জন্য কবর জাহান্নামের দরজা হিসেবে হাজির হয়।

একদা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে গিয়ে দেখলেন, কিছু লোক খিল খিল করে হাসছে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, তোমরা যদি মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করতে তবে এ অবস্থা হতো না।

এমন কোনো দিন যায় না যেদিন কবর এই কথা ঘোষণা করে না যে, আমি অপরিচিতের ঘর, আমি নির্জনতার ঘর, আমি কীটপতঙ্গের ও জীবজন্তুর ঘর। যখন কোনো কামেল মুমিনকে দাফন করা হয় তখন কবর তাকে বলে, তোমার আগমন মোবারক হোক, তুমি খুবই ভালো করেছ যে, আগমন করেছ। যত মানুষ আমার পিঠের ওপর (অর্থাৎ জমিনের ওপর) দিয়ে চলত তুমি তাদের মধ্যে আমার কাছে খুবই প্রিয় ছিলে। আজ যখন তুমি আমার সোপর্দ হয়েছ তখন আমার উত্তম ব্যবহারও দেখতে পাবে। অতঃপর কবর এত প্রশস্ত হয়ে যায় যে, দৃষ্টির শেষ সীমা পর্যন্ত খুলে যায়। তাতে জান্নাতের একটি দরজা খুলে যায়, যার দ্বারা জান্নাতের হাওয়া ও খুশবু আসতে থাকে। আর যখন কাফের অথবা বদকার লোককে দাফন করা হয়, তখন কবর বলে, তোর আগমন অশুভ ও না মোবারক। কী প্রয়োজন ছিল তোর আসার। যত মানুষ আমার পিঠের ওপর চলত তাদের মধ্যে তুই আমার কাছে সবচেয়ে অপছন্দনীয় ছিলি। আজ তোকে আমার কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। তুই আমার আচরণ দেখতে পাবি। এ কথা বলে কবর তাকে এত জোরে চাপ দেয় যে, তার এক পাশের পাঁজরের হাড় অন্য পাশের পাঁজরের হাড়ের ভিতর এমনভাবে ঢুকে যায়; যেমন এক হাত অপর হাতের মধ্যে ঢোকালে দুই হাতের অঙ্গুলি পরস্পরের ভিতর ঢুকে যায়। অতঃপর নব্বই নিরানব্বইটি অজগর সাপ তার ওপর নিযুক্ত করে দেওয়া হয়। যারা তাকে কেয়ামত পর্যন্ত দংশন করতে থাকবে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ওই অজগরগুলোর একটিও যদি জমিনের ওপর ফুঁৎকার মারে তবে কেয়ামত পর্যন্ত জমিনের বুকে কোনো ঘাস জন্মাবে না। অতঃপর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কবর জান্নাতের একটি বাগান অথবা জাহান্নামের একটি গর্ত (সুনানে তিরমিজি, মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, মুসনাদে আহমদ, মুসনাদে আবদ ইবনে হুমাইদ,  মুসনাদে আবি ইয়ালা, ইবনে হিব্বান)।

আর একারণেই ইসলাম বলে তোমরা মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করো!

দ্বিতীয় -কেন মৃত্যু কামনা নিষেধ! 

মানুষ বিভিন্ন কারণে অধৈর্য হয়ে যায়। অধৈর্য হয়ে মানুষ নিজেদের মৃত্যু কামনা করে থাকে। আর এ কারণেই আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকে ধৈর্য ধারণ সম্পর্কে অনেক আয়াত নাজিল করেছেন। অনেক সময় মানুষ নানা কারণে ধৈর্য হারিয়ে আল্লাহর কাছে মৃত্যু কামনা করে থাকে; যা কোনো ভাবে কাম্য নয়।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক হাদিসে মৃত্যু কামনা করাকে অবৈধ বলেছেন। মৃত্যু কামনা করতে নিষেধ করেছেন। আর মৃত্যু কামনা নিষেধ করার মূল করণও প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্ণনা করেছেন। আর তাহলো-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যেন মৃত্যু কামনা না করে। কারণ সে যদি সৎকর্মশীল লোক হয়, তবে (বেঁচে থাকলে) হয়ত সে নেকির কাজ বৃদ্ধি করবে। আর যদি অন্যায়কারী (পাপী) হয়, তাহলে হয়ত সে তাওবা করবে (দ্বীনের পথে ফিরে আসবে)।’ (বুখারি)

হাদিসের আলোকে বুঝা যায়, মানুষ সৎকর্মশীল হোক আর পাপী হোক; কারো জন্যই মৃত্যু কামনা করা কল্যাণকর নয়। কারণ উভয়ের জন্য বেঁচে থাকায় কল্যাণের পথ খোলা থাকে।

সুতরাং -আল্লাহ আমাদের ইসলামের সঠিক জ্ঞান অর্জন করার তাওফিক দিন৷

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ