উল্লেখ্য ,৫ বছর ধরে আমার মেদ বৃদ্ধি পাওয়ায় আমি নিয়মিত শসা খায়,হোমিও ঔষধ ও খেয়েছি।এতে ওজন কম হয়েছে বটে তবে পেটের চর্বি কমেনি।চর্বি গলানোর কোন উপায় কি আছে? ভেসজ জাতীয় কিছুতে কি পেটের মেদ কমতে পারে? সমাধান চাই।।
আজকাল অপারেশনের সাহায্যে ভুড়ি বা বেদ কমানো হচ্ছে। লাইপোসাকশন বা অ্যাবডোমিনো ফ্লৎস্টির সাহায্যে মেদ কমানো হচ্ছে। কিন্তু এটার পার্শপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে অনেক।
ওজন হ্রাসকারী খাদ্যে ক্যালসিয়াম ও লোহার অভাব ঘটতে পারে। এক্ষেত্রে ডিম কলিজা লোহার চাহিদা পূরণ করবে। চেষ্টা করবেন লবণ বর্জিত খাদ্যগ্রহণ করতে।
এক্ষেত্রে খাবার মেপে মেপে খাওয়ার প্রয়োজন নেই মোটা মোটি একটা হিসাব করলেই চলবে। শরবত, কোকাকোলা, ফান্টা ইত্যাদি মৃদু পানীয় সব রকম মিষ্টি তেলে ভাঁজা খাবার, চর্বি যুক্ত মাংস, তৈলাক্ত মাছ, বাদাম, শুকনাফল, ঘি, মাখন, সর ইত্যাদি পরিহার করা প্রয়োজন। শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাদ্য ক্যালরির প্রধান উৎস। অধিক চর্বি যুক্ত কম ক্যালরির খাদ্যে স্থুল ব্যক্তির ওজন খুব দ্রুত কমে। ওজন কমাতে পরিশ্রম ও নিয়মিত ব্যায়েমের পাশাপাশি খাদ্য তালিকায় পরির্তন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সকালঃ দুধ ছাড়া চা বা কফি, দুটো আটার রুটি, একবাটি সবজি সিদ্ধ, ১ বাটি কাঁচা শশা। শশা ওজন কমাতে জাদুর মত কাজ করে।
দুপুরঃ ৫০-৭০ গ্রাম চালের ভাত। মাছ বা মুরগির ঝোল ১ বাটি। এক বাটি সবজি ও শাক, শশার সালাদ, এক বাটি ডাল এবং ২৫০ গ্রাম টক দই।
বিকালঃ দুধ ছাড়া চা বা কফি, মুড়ি বা বিস্কুট ২টা।
রাতঃ আটার রুটি তিনটা, একবাটি সবুজ তরকারি, একবাটি ডালম টকদই দিয়ে এক বাটি সালাদ এবং মাখন তোলা দুধ।
দৈনিক এক গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করলে দেহে প্রোটিনের অভাব থাকে না। ৬০ কিলোগ্রাম ওজন বিশিষ্ট ব্যক্তির খাদ্য ৬০ গ্রাম প্রটিন হলেই ভাল হয়। প্রতি মাসে একদিন ওজন মাপতে হবে, লক্ষ্য রাখতে হবে ওজন বাড়ার হার কম না বেশী। ওজন বৃদ্ধি অসুখের লক্ষণ। মেদ বা ভূড়ি এদের অতিরিক্ত ওজন কোনটাই স্বাস্থ্যের লক্ষণ নয়। বরং নানা অসুখের কারণ হয়ে দেখা দেয় একথা সব সময় মনে রাখবেন এবং স্বাস্থ্য সচেতন হবেন।
* প্রতিদিন তিন কোয়া রসুন: প্রতিদিন সকালে উঠেই খালি পেটে ২/৩ কোয়া রসুন চিবিয়ে খেয়ে নিন, এর ঠিক পর পরই পান করুন লেবুর রস। এটি আপনার পেটের চর্বি কমাতে দ্বিগুণ দ্রুতগতিতে কাজ করবে। তাছাড়া দেহের রক্ত চলাচলকে আরো বেশি সহজ করবে এটি।
* লেবুর রস: এক গ্লাস গরম পানিতে অর্ধেকটা লেবু চিপে নিন, এতে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে নিন। চিনি দেবেন না। এবার পান করুন প্রতিদিন সকালে। এটি আপনার দেহের বাড়তি মেদ ও চর্বি কমাতে সব চেয়ে ভালো উপায়।
* চিনিযুক্ত খাবার খাবেন না: মিষ্টি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার, কোল্ড ড্রিংকস এবং তেলে ভাজা স্ন্যাক্স থেকে দূরে থাকুন। কেননা এ জাতীয় খাবারগুলো আপনার শরীরের বিভিন্ন অংশে, বিশেষত পেট ও উরুতে খুব দ্রুত চর্বি জমিয়ে ফেলে। তাই এগুলো খাওয়ার পরিবর্তে ফল খান।
* মশলা খান: রান্নায় অতিরিক্ত মশলা ব্যবহার করা ঠিক নয়। তবে কিছু মশলা ওজন কমাতে সাহায্য করে ম্যাজিকের মতো। রান্নার ব্যবহার করুন দারুচিনি, আদা ও গোলমরিচ। এগুলো আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণ কমাবে ও পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করবে।
* মাংস থেকে দূরে থাকুন: অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত মাংস যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। এর বদলে বেছে নিতে পারেন কম তেলে রান্না করা চিকেন।
* পর্যাপ্ত ঘুমান: ঘুম ভালো হলে শরীরে মেদ কম জমে এবং জমা মেদও ঝরতে সাহায্য করে।
* মানসিক চাপের বোঝা বইবেন না : মানসিক চাপ যতটা পারবেন কম নেওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ মানসিক চাপের ফলে আপনার শরীরে নানারকম সমস্যা তৈরি হতে পারে। ফলে শরীরের পাচন ক্ষমতা কমে যায় এবং শরীরে মেদ জমতে শুরু করে।
* প্রচুর পানি পান করুন: প্রতিদিন প্রচুর পানি পান করার ফলে এটা আপনার দেহের মেটাবলিজম বাড়ায় ও রক্তের ক্ষতিকর উপাদান প্রস্রাবের সঙ্গে বের করে দেয়। মেটাবলিজম বাড়ার ফলে দেহে চর্বি জমতে পারে না ও বাড়তি চর্বি ঝরে যায়।
* কাজে সক্রিয় হন: অফিসের কাজ আজকাল বসে বসে হয়, সেখানে শরীরের সচল হওয়ার খুব একটা সুযোগ নেই। তাই চেষ্টা করুন একটি আগের বাসস্টপে নেমে হেঁটে বাকি রাস্তা যান, সিঁড়ি দিয়ে উঠুন। এর ফলে শরীর অনেকটা সক্রিয় হয়। মেদ জমার সুযোগই পাবে না।
* প্রতিদিন ফল ও সবজি খান: প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় এক বাটি ভর্তি ফল ও সবজি খাবার চেষ্টা করুন। এতে আপনার শরীর পাবে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, মিনারেল ও ভিটামিন। আর এগুলো আপনার রক্তের মেটাবলিজম বাড়িয়ে পেটের চর্বি কমিয়ে আনবে সহজেই।
খাবার নিয়ন্ত্রণ করছেন, নিয়মিত হাঁটাহাঁটিও করছেন, ওজনও একটু একটু করে কমছে, কিন্তু পেটটা তো কিছুতেই কমছে না। অনেকেই এ অভিযোগ করে থাকেন। পেটের চর্বি বা মেদ দেহের অন্যান্য মেদের চেয়ে আলাদা এবং বেশি ক্ষতিকর।
শরীরের অন্য অংশের মেদ সাধারণত ত্বকের নিচে জমে থাকে। কিন্তু পেটের মেদ ত্বকের নিচে ও পাশাপাশি যকৃৎ, কিডনি ও অন্যান্য অভ্যন্তরীণ অঙ্গের গায়ে লেগে থাকে। তাই পেটের চর্বির সঙ্গে হূদেরাগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও অন্যান্য সমস্যার জোরালো সম্পর্ক রয়েছে।
অনেকেই পেটের চর্বি কমানোর জন্য বেলি স্ট্রোক অর্থাৎ পেটের মাংসপেশির ব্যায়াম করে থাকেন। কারও ধারণা, পেটের চর্বি সাধারণ ব্যায়ামে কমে না। এর জন্য আলাদা ব্যায়াম করতে হবে। কিন্তু আলাদা ব্যায়ামে পেটের পেশির আকৃতি সুন্দর হলেও চর্বি কমাতে খুব একটা কাজে আসে না। পেটের চর্বি কমাতে দেহের সার্বিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম এবং সঙ্গে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসই যথেষ্ট।
সপ্তাহে চার দিন আধঘণ্টা অ্যারোবিক ব্যায়াম দেহের অন্যান্য মেদের সঙ্গে পেটের মেদকেও কমিয়ে আনবে। জগিং, ট্রেডমিল, সাইকেল চালানো ইত্যাদি হলো এ ধরনের ব্যায়াম। কেউ দ্রুত পেটের চর্বি ভাঙতে চাইলে আরেকটু বেশি ব্যায়ামের দরকার হতে পারে। ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট হালকা জগিং বা জোরে হাঁটার পর দেহে সঞ্চিত চর্বি ভাঙতে শুরু করে এবং পেশি তা ব্যবহার করে। এই সময়ের পর আরও ১০ থেকে ১৫ মিনিট জগিং করলে বা জোরে হাঁটলে প্রতিদিন একটু একটু করে জমানো চর্বি কমতে থাকবে।
এর সঙ্গে চর্বি ও তেলযুক্ত খাদ্য পরিহার করে প্রচুর পরিমাণে আঁশজাতীয় খাদ্য ও শাকসবজি গ্রহণ করতে হবে। পরিমিত আহার করতে হবে। প্রতিদিন অন্তত ১০ গ্রাম আঁশ খেতে হবে। মেদ কমানোর সাধারণ এসব উপায়ে দেহের অন্য অংশের মেদের সঙ্গে পেটের চর্বিও কমবে। এর জন্য আলাদা ব্যায়ামের দরকার হবে না। সূত্র: ওয়েবমেড।