মেজাজ ভাল রাখার টিপসঃ
১. আত্মবিশ্বাসী হনঃ
অনেক সময় আমারা নিজের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে ফেলি। যে হয়ত এই কাজটা আমি কখনই করতে পারব না অথবা এটা আমার দ্বারা কখনই সম্ভব নয়। এটা একটা সম্পুর্ন ভুল ধারনা। প্রত্যেকটা মানুষেরই কিছু না কিছু বিশেষত্ব থাকে এবং চাইলেই আপনি সেটা সবার সামনে প্রকাশ করতে পারেন। এজন্য যেটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে নিজের উপর বিশ্বাস তৈরী করা। কোনো কাজে হাত দেওয়ার সময় ভয় পাওয়ার চেয়ে এটা চিন্তা করুন যে আপনি চাইলেই এই কাজটা ভালোভাবে করতে পারবেন। কারন মানুষের ইচ্ছাশক্তির দ্বারা মানুষ অনেক কিছু করতে পারে। সবার সামনে গুটিয়ে না থেকে নিজের যোগ্যতাকে সবার সামনে তুলে ধরুন। আর নিজের মনের মধ্যে বিশ্বাস থাকলে মন ও সবসময় ভালো থাকবে।
২. পরনির্ভরশীলতা ত্যাগ করুনঃ
মানুষের মনের মনে ভয় এবং অশান্তি থাকার সবচেয়ে বড় একটা কারন হচ্ছে অন্যের উপর নির্ভরশীল থাকা। যদি আপনি সব কাজের জন্য অন্যের উপর নির্ভরশীল থাকেন এবং আপনার জীবন যদি অন্যের দ্বারা চালিত হয় তাহলে কখনোই আপনি সুখি হতে পারবেন না। কারন তখন সবসময় আপনার মনের মধ্যে এক ধরনের অশান্তি কাজ করবে যে এটা ঠিকমত হবে কিনা, কোন কিছু ভুল করলেন কিনা আরো অনেক কিছু। হ্যা অন্য কেউ জীবনে সাহায্যকারী হিসেবে থাকতেই পারে, কিন্তু তাই বলে সব কিছুতে অন্যের উপর নির্ভর্শীলতা বন্ধ করুন। আর আগে করে না থাকলে এখন থেকেই নিজের ছোট ছোট কাজগুলো দিয়ে প্রথমে শুরু করুন। তারপর দেখবভেন এমনিতেই আপনি আপনার কাজগুলো করতে পারছেন। আর নিজের কাজ নিয়ে করার মধ্যে প্রশান্তিই আলাদা।
৩. অন্যের সম্পর্কে সমালোচনা বাদ দিনঃ
অনেক সময় আমাদের একটা খুব বাজে অভ্যাস হচ্ছে আমরা অন্যের বিষয় নিয়ে খুব বেশী চিন্তা করি। কার কি হল, কার সাথে কার রিলেশন, কে বিয়ে করল, তার ড্রেস এমন কেন, কার বাড়ির বিড়াল মারা গেল আরো কত কি। এসব সমালচনা আমাদের মনকে কখোনোই শান্ত থাকতে দেয় না। কারন কার কি হল, কেন হল এইসব নিয়ে চিন্তা করতে করতে সমসময় মনের মধ্যে এক ধরনের খুতখুতি তৈরী হয়। তাই অন্যের বিষয়ে চিন্তা বাদ দিয়ে নিজের খারাপ দিকগুলো শুধরানোর চেষ্টা করুন। এতে করে মন ভালো রাখবে এবং জীবনে সুখি হতে পারবেন।
৪. মন খুলে হাসুনঃ
হাসি মানুষের জীবনের অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারে। আর মনকে সবসময় প্রফুল্ল রাখতে হাসিখুশি থাকার বিকল্প নেই। সবসময় মুখ গোমড়া করে থাকলে কখনই মন ভালো রাখতে পারবেন না। কারন প্রাণখোলা হাসি আপনার শরীরে কর্টিসেল হরমোনের নিঃসরণকে কমিয়ে দেয় যেটি আপনার বিষন্নতার জন্য দায়ী। তাই বন্ধুদের সাথে আড্ডায়, পরিবারের সাথে একসাথে বসে, টিভি দেখে যেইভাবেই হোক হাসার চেষ্টা করুন। এতে আপনার মন মেজাজ দুটোই ভালো থাকবে।
৫. অন্যকে সঙ্গি করুনঃ
মানুষ কখনোই একা থাকতে পারে না। জীবনের প্রত্যেক ক্ষেত্রেই তার সঙ্গীর প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে ডেল কার্নেগীর একটা বিখ্যাত মতবাদ আছে যে “ অন্যকে আপনার সঙ্গি করুন, নয়ত একলা চলতে হবে” এর মানে এই নয় যে অন্যের উপর নির্ভর্শীল হওয়া। আপনি আপনার ব্যাক্তিত্ব ও মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে অন্যর সঙ্গে মেশার চেষ্টা করুন। অনেকেই সব ধরনের মানুষের সাথে মিশতে পারে না। সেক্ষেত্রে আপনার কাছাকাছি মন মানসিকতার মানুষদের বেছে নিন। হতে পারে সে আপনার খুব ভালো বন্ধু অথবা আপনার ভালবাসার মানুষটি। কারন একাকিত্ব মানুষের মনকে হতাশার দিকে ঠেলে দেয়। ফলে মন সবসময়ই বিষন্নতায় ভোগে।
৬. পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুমানঃ
প্রতিদিনের রুটিনে যদি আপনার ঘুম পর্যাপ্ত পরিমানে না থাকে তাহলে সারাদিনই মেজাজ খিটখিটে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুম শরীর মন দুইয়ের জন্যই অনেক ভালো। কারন সারাদিনের ক্লান্তি আর অবসাদ আপনি একেবারে দূর করে ফেলতে পারেন একটা ফ্রেশ ঘুম এর মাধ্যমে। তবে যততুকুই ঘুমান না কেনো সেটা যেনো সম্পূর্ন দুশ্চিন্তছাড়া এবং প্রশান্তিমূলক হয়।
৭. অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা করবেন নাঃ
অনেককেই এটা ভেবে জীবনে হতাশ হয়ে থাকেন যে আমি কেনো ওর মত হলাম না, কেনো আমার এটা হল না, ওটা হল না ইত্যাদি। এসব ভাবনা আপনাকে জীবনে সাহায্য না করে বরং হতাশ করবে বেশী। কারন সবার মধ্যে সব ধরনের বিশেষত্ব থাকে না। ধরুন আপনি ভালো ছবি আঁকতে পারেন। এক্ষেত্রে আরেকজনকে দেখে আপনি যদি মনে করেন কেন আমি ডাক্তার হলাম না, তাহলে তো আর আপনি ভালো থাকতে পারবেন না। বা যদি এইভাবে চিন্তা করতেই থাকেন যে “ইশ যদি আমি ওটা করতাম তাহলে ওর মত হতে পারতাম” তাহলে আপনি জীবনে হতাশা ছাড়া কিছুই পাবেন না। কারন যেটা অনেক আগে হয়ে গেছে সেটা আপনি কখনোই ফিরে পারেন না। বরং অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা করে আপনি আপনার মন মানসিকতাকে আরো নষ্ট করে ফেলবেন। তাই অন্যের সাথে তুলনা বাদ দিয়ে নিজের ভবিষৎ নিয়ে চিন্তা করুন। যেটা আপনার মনকে সবসময় শান্ত রাখবে।