আমাদের আশেপাশে এমন অনেকেই আছেন যাদের অল্পবয়সে চুল পাকা শুরু হয়েছে। সাধারণত মাথার চামড়ায় পর্যাপ্ত ভিটামিন ও মিনারেল এর অভাবে চুল পাকতে পারে। আর তরুণ বয়সে পাকা চুল অনেক বিব্রতকর একটি ব্যাপার। অল্প বয়সে চুল পাকার ফলে অনেকেই সবসময় অস্বস্তিতে ভোগেন। কোন সামাজিক বা পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতেও দ্বিধাবোধ করেন। যার থেকে আত্মবিশ্বাসের অভাব এমন কী তীব্র হতাশা সৃষ্টি হওয়ার মত ঘটনাও ঘটতে পারে। যদিও সাময়িক সমাধান হিসেবে অনেকে চুলে কলপ ব্যবহার করে থাকেন। তবে এতে চুল একেবারে কালো হয় না। তার পাশাপাশি কলপের উপাদান নিম্নমানের হলে তা মাথার চামড়ার ক্ষতি করতে পারে। সুতরাং সাময়িক সমাধানের দিকে না গিয়ে ঘরে বসেই সহজে অকালে চুল পাকা থেকে রেহাই পেতে পারেন। প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরে থাকা নানা উপাদান থেকে এই চিকিৎসা উপকরণ তৈরী করা সম্ভব। এই উপকরণ ব্যবহার যেমন অর্থসাশ্রয়ী ঠিক তেমনি নিরাপদ এবং কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত। চলুন আজকের লেখায় অকালে চুল পাকা রোধের কয়েকটি উপায় দেখে নেয়া যাক – ১. আমলকি ও লেবুর রস মিশ্রণ আমলকি ও লেবু দুটোই আমাদের দেশে জন্মে এবং সহজলভ্য। এই দুটো ফলের পুষ্টি গুণ অত্যন্ত বেশি। শরীরের মেদ কমানো, হৃদপিন্ডের সমস্যা ইত্যাদি আভ্যন্তরীণ সমস্যার পাশাপাশি চামড়ার ইনফেকশন এবং মাথার চামড়ার জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন যোগান দেয়ার ক্ষেত্রে এই দুটো ফলের জুড়ি নেই। তাই অকালে চুল পাকা রোধের জন্য বাজার থেকে আমলকির গুঁড়া কিনে এনে তা লেবুর রসের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন ১ ঘণ্টা করে মাথার চামড়ায় ম্যাসাজ করুন, তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেললেই হবে। ২. পেঁয়াজ বাটা মশলা হিসেবে পেঁয়াজ একটি আবশ্যকীয় উপাদান। বাংলাদেশে কমবেশি সব রান্নাঘরেই পেঁয়াজ থাকে। আর পেঁয়াজ বাটা চুল পাকা রোধের অত্যন্ত কার্যকরী অস্ত্র। পেঁয়াজ ভালোমত বেটে নিয়ে প্রতিদিন কিছুক্ষণ মাথার চামড়ায় ও চুলে ম্যাসাজ করলে এবং চুলে পেঁয়াজ বাটা শুকিয়ে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেললে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই পাকাচুল কালো হয়ে যাবে। তবে দ্রুত ফল পাওয়ার জন্য অবশ্যই প্রতিদিন একবার করে এই উপায় অনুসরণ করতে হবে। ৩. নারিকেল তেল এবং লেবুর রস চুলের যত্নে নারিকেল তেলের কোন জুড়ি নেই। আর লেবুর গুণাগুন তো আগেই ব্যাখ্যা করা হয়েছে। পাকা চুলের হাত থেকে রেহাই পেতে হলে প্রতিদিন ৪ চা চামচ নারিকেল তেল এর সাথে আড়াই চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে উক্ত মিশ্রণ চুলের গোড়ায় এবং মাথার চামড়ায় লাগান। দুই সপ্তাহের মধ্যেই পাকা চুল কালো হয়ে উঠবে। তার পাশাপাশি আপনার মাথার চামড়া সুস্থ থাকবে, খুশকি হবে না এবং চুলও হবে উজ্জ্বল। ৪. গাজরের রস গাজর একটি পুষ্টিকর সবজি উপাদান। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারাল এর একটা সিংহভাগ গাজর একাই পূরণ করার ক্ষমতা রাখে। চুলের যত্নেও গাজর বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। তাই বাজার থেকে গাজর কিনে এনে সেটিকে ব্লেন্ডারে পানি, চিনি মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। গাজরের যে জুস পাওয়া যাবে, সেটি নিয়মিত পান করুন। প্রতিদিন অন্তত একগ্লাস করে গাজরের রস পান করলেই আপনার পাকা চুলের প্রতিকার পাওয়া শুরু করবেন। শুধু চুল নয়, সেইসাথে আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতেও এই গাজরের জুস সাহায্য করবে। ৫. তিলের বীজ এবং বাদাম তেল তিলের বীজ এবং বাদাম তেল এই দুইটি বাজারে বেশ সহজলভ্য। স্কিন ডাক্তাররা চুলের যত্নে মাঝে মধ্যে এই চিকিৎসাটি প্রেসক্রাইব করে থাকেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই চিকিৎসায় সবচাইতে বেশি উপকার পাওয়া সম্ভব। প্রথম তিল বীজ গুঁড়ো করে নিন। এরপর তা বাদাম তেলের সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরী করুন। এই পেস্টটি চুলে ও মাথার চামড়ায় লাগিয়ে ২০-৩০ মিনিট রেখে দিয়ে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। উপরের পদ্ধতিগুলো নিয়মিত অনুসরণ করলে সহজে ঘরে বসেই অকালে চুল পাকা রোধ করা সম্ভব। তবে যে কথাটি আমার লেখায় বার বার বলি, সেটা হচ্ছে প্রতিকারের চাইতে প্রতিরোধ উত্তম। সাধারণত পুষ্টিহীনতা, টেনশন, অবসাদ, ঘুম কম হওয়া এগুলোর কারণে অল্প বয়সে চুল পাকতে পারে। তাই এই সমস্যা প্রতিরোধের জন্য প্রচুর পুষ্টিকর শাকসবজি খাবেন, পর্যাপ্ত ঘুমানোর চেষ্টা করবেন এবং অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করবেন।
আলু
আলু ছাড়িয়ে তার খোসাগুলো একটি পাত্রে রাখুন। এতে দুই-তিন কাপ পানি যোগ করুন। এবার এই পানিতে আলুর খোসাগুলিকে সেদ্ধ হতে দিন। আলুর খোসা সেদ্ধ হয়ে এলে পানিতে ছেঁকে নিন। এবার এই আলুর খোসা ছাঁকা পানি ঠান্ডা হলে একটি বোতলে ভরে রাখুন। ময়েশ্চারাইজিং শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে এই পানি মাখিয়ে নিন চুলে। এরপর আর চুল ধোবেন না। বরং তোয়ালে দিয়ে চেপে রাখুন কিছুক্ষণ। তারপর চুল শুকিয়ে গেলে আঁচড়ে নিন।
এভাবে কয়েক সপ্তাহ ব্যবহার করলেই ভাল ফল পাবেন।