শারীরিকভাবে রোগা ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রায়ই শোনা যায় কীভাবে যে মোটা হওয়া যায়, এত খাই কিন্তু মোটা হতে পারি না। আপনার জন্য রইল ওজন বাড়ানোর কয়েকটি উপায়। # সকালে উঠে বাদাম ও কিসমিস: ওজন বাড়ানোর জন্য বাদাম আর কিসমিসের বিকল্প নেই। রাতে ঘুমাবার সময় অল্প পানিতে আধ কাপ কাঠ বাদাম ও কিসমিস ভিজিয়ে রাখুন। সকালে সেগুলো ফুলে উঠলে খেয়ে নিন। # প্রচুর শাক সবজি ও ফল খান: ভাবছেন এগুলো তো ওজন কমাবার জন্য খাওয়া হয়, তাই না? ওজন বাড়াতেও কিন্তু আপনাকে সাহায্য করবে এই ফল আর সবজি। এমন অনেক ফল আর সবজি আছে যারা কিনা উচ্চ ক্যালোরি যুক্ত। আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, পাকা পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলু, কাঁচা কলা ইত্যাদি ফল ও সবজি খেলে ওজন বাড়বে। # খাবারের পরিমাণ বাড়ান: খাবারের পরিমাণ বাড়ানো মানেই একগাদা খেয়ে ফেলা নয়। আপনি যদি কম খাওয়ার কারণে রোগা হয়ে থাকেন, তাহলে খাবারের পরিমাণ আপনাকে বাড়াতেই হবে। স্বাভাবিকভাবে যা খেয়ে থাকেন, তার ৪ ভাগের ১ ভাগ পরিমাণ খাবার বাড়িয়ে খান প্রতিদিন। # বারবার খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন: অনেকেই ভাবেন যে বারবার খেলে বুঝি ওজন বাড়বে। এটা মোটেও সঠিক না। বরং নিয়ম মেনে পেট পুরে খান। পেট পুরে খাওয়া হলে মেটাবলিজম হার কমে যায়, ফলে খাবারের ক্যালোরির অনেকটাই বাড়তি ওজন হয়ে শরীরে জমবে। অল্প অল্প করে বারবার খাওয়াটা মেটাবলিজম বাড়িয়ে দেয়, ফলে ওজন কমে। # খাদ্য তালিকায় রাখুন ডুবো তেলে ভাজা খাবার: ডুবো তেলে ভাজা খাবারে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট থাকে। ফলে সেটা ওজন বাড়াতে সহায়ক। তবে সঙ্গে রাখুন প্রচুর তাজা শাক সবজির সালাড। # জিমে যাওয়া অভ্যাস করুন: ভাবছেন জিমে মানুষ যায় ওজন কমাতে, বাড়ানোর জন্য কেন যাবেন? কিন্তু আসল কথাটা হলো, কেবল মোটা হলেই হবে না। সঙ্গে তৈরি করতে হবে সুগঠিত শরীর। আপনি জিমে যাবেন পেশী তৈরি করতে এবং পুরুষেরা ওজন বাড়াতে চাইলে এই জিমে যাওয়া আসলে খুবই ফলদায়ক। পেশীর ওজন চর্বির চাইতে অনেক বেশি তো বটেই, তাছাড়া ব্যায়ামের ফলে খিদেও পাবে আর মন ভরে খেতে পারবেন। তবে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ট্রেনারের নির্দেশে ব্যায়াম করতে হবে। নাহলে হিতে বিপরীত হবার আশঙ্কা। # খান ‘ফ্যান’ ভাত: অধিকাংশ মানুষই ভাতের ফ্যান ফেলে দেয়। ওজন বাড়াতে চাইলে ভাতের ফ্যান না ফেলাই ভালো। ফ্যান ভাত খান, এটি ওজন বাড়াতে সহায়ক। আতপ চালের ফ্যান ভাত মজাও লাগবে খেতে। # ঘুমাবার ঠিক আগেই দুধ ও মধু: ওজন বাড়াবার জন্য এটি একটি অব্যর্থ কৌশল। রাতের বেলা ঘুমাবার আগে অবশ্যই পুষ্টিকর কিছু খাবেন। ঘুমাবার আগে প্রতিদিন এক গ্লাস ঘন দুধের মাঝে বেশ অনেকটা মধু মিশিয়ে খেয়ে নেবেন। # কমান মেটাবলিজম হার: মোটা হবার পেছনে যেমন ধীর গতির মেটাবলিজম দায়ী, তেমনি রুগ্ন স্বাস্থ্যের পেছনে দায়ী উচ্চ মেটাবলিজম হার। সুতরাং মোটা হতে গেলে প্রথমেই এই মেটাবলিজম হার কমাতে হবে। তাতে আপনি যে খাবারটা খাবেন, সেটা বাড়তি ওজন রূপে আপনার শরীরে জমার সুযোগ পাবে। মেটাবলিজম হার কম রাখার জন্য প্রতিবেলা খাবারের পর লম্বা সময় বিশ্রাম করুন। খাবার পর কমপক্ষে ১ ঘণ্টা কোনো কাজ করবেন না। # খাদ্য তালিকায় যোগ করুন কিছু বিশেষ খাবার: আপনার নিয়মিত খাবারের পাশাপাশি অবশ্যই কিছু উচ্চ ক্যালোরি সম্পন্ন খাবার যোগ করতে হবে খাদ্য তালিকায়, নাহলে ওজন বাড়বে কেন? উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা না থাকলে এই খাবারগুলো খেতে পারেন অনায়াসে। যেমন- ঘি, মাখন, ডিম, পনির, কোমল পানীয়, গরু- খাসির মাংস, আলু ভাজা, মিষ্টি জাতীয় খাবার, চকলেট, মেয়নিজ ইত্যাদি। # স্বাস্থ্যকর খাবার খান : আপনি হয়ত প্রচুর পরিমাণে খাচ্ছেন তারপরও আপনার স্বাস্থ্য ঠিকমত বাড়ছে না। তার কারণ হল আপনি খাচ্ছেন, কিন্তু ঠিক নিয়ম করে সঠিক খাবারটি খাচ্ছেন না। খালি পেট ভরে এটা সেটা খেলেই হবে না। খেটে হবে উপযুক্ত খাবারটি। আপনার শরীরে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে প্রোটিন, কার্বন এবং ফ্যাট এর প্রয়োজন হয় প্রতিদিন। এর জন্য প্রতিদিন বাদাম এবং দুগ্ধজাত খাবার খান। প্রোটিনযুক্ত খাবার পেশী গঠনে সহায়তা করে। এটি শরীরের ওজন বৃদ্ধি করে থাকে। তাই প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণে মাংস গ্রহণ করুন। রোজ খান ডিম, পনির ও পর্যাপ্ত পরিমাণে ভাত-রুটি-আলু। ওজন বাড়াতে চাইলে বসা ভাত খেলেই উপকার পাবেন। কেননা এটা থাকে প্রচুর ক্যালোরি। মিষ্টি খান রোজ। # বেশি পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ করুন : একটু পর পর তরল জাতীয় খাবারে ক্ষুধা দ্রুত তৈরি করে। এজন্য আপনি ক্ষুধা তৈরি করার জন্য একটু পর পর তরল জাতীয় যেকোনো খাবার খেতে পারেন। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন ভারী খাবার খাওয়ার আগে এবং খাবারের মাঝখানে কখনই পানি খাওয়া ভালো না। এতে করে খাবার মাঝখানে পানি ক্ষুধাটাকে নিবারণ করে। ফলে ভারী খাবার খাওয়ার রুচি থাকে না। # সঠিক নিয়মে খান : আপনি খাবার খাচ্ছেন কিন্তু কোনো নিয়ম মেনে খাচ্ছেন না এতে করে আপনার কোনো কাজই হবে না। আপনার ওজন কোনোভাবেই বাড়বে না। আপনি যদি নিয়ম করে খাবার তালিকা তৈরি করে খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার ওজন বাড়তে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। দিনের একটি বড় তালিকা তৈরি করুন ও সেটি পালন করুন ঘড়ি ধরে। মোটামুটিভাবে ৪ সপ্তাহের মধ্যে একটি ইতিবাচক ফলাফল পাবেন। ওজন বাড়ে সহায়ক খাবার গুলো রোজ খাবেন ও পর্যাপ্ত ঘুমাবেন। # শারীরিক ব্যায়াম : অবাক হচ্ছেন? ভাবছনে আপনি রোগা মানুষ আপনার আবার ব্যায়াম কি? তাহলে জেনে রাখুন, কিছু বিশেষ ব্যায়াম শরীরের পেশী তৈরি করে ও ওজন বাড়ায়। তাছাড়া ক্ষুধার উদ্রেকও করে। জিমে যাওয়া শুরু করুন নিয়মিত, ট্রেইনারের কথা মেনে চলুন। চমৎকার শরীর তৈরি হবে।আবার আপনি যদি শুধু ক্যালরিযুক্ত খাবার খেয়েই যান আর কোনো ধরনের ব্যায়াম না করেন তাহলে আপনার শরীরের কিছু অংশে অতিরিক্ত মেদ দেখা দেবে যেমন তলপেটসহ অন্যান্য অংশে কিন্তু আপনার ওজন বাড়াতে খুব একটা সহায়ক ভূমিকা রাখবে না। এজন্য যতটা সম্ভব শারীরিক ব্যায়াম করুন। এতে করে দেহের অতিরিক্ত মেদ নিঃসরণ করে একটা ভালো ওজন পেতে পারেন। যদি এইসব করেও আপনার ওজন না বাড়ে, তাহলে অবশ্যই একজন ভালো ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। কেননা কোনো সুপ্ত অসুখ থাকলেও তার ফলে রুগ্ন ও ভগ্ন স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারেন। পেটের অসুখ, কৃমি, আমাশয় অথবা কোনো সংক্রামক রোগ থাকলে পর্যাপ্ত খাদ্য গ্রহণ করলেও ওজন কমে যেতে থাকে। অতিরিক্ত ক্লান্ত থাকলেও ক্রমাগত ওজন কমে যেতে থাকে।
ভাই মোটা হওয়াটার এটা করোরই হাতের জিনিস নয় , তবে মোটা হবার মত কিছু খাবার আছে ,যেগুলোতে রয়েছে প্রচুর পরিমান ফ্যাট যা শরির্পোট কে মোটা করতে সাহায্য করে যেমন,পানি বেশি করে খাবেন ,শবজি বেশি বেশি খবেন ,এছারা নিচের নিয়ম মেনে চলুন দেখবেন কাজ হয়েছে ----- ১) প্রতিদিন সকালে ফজরের নামাজ পড়ে ঘন্টাখানেক এ্যারোবিক ব্যায়াম করুন (এ্যারোবিক ব্যায়াম করানো হয় এমন ব্যায়ামাগারে ভর্তি হলে ভালো হয়...তবে এ্যারোবিক ব্যায়ামের সিডি দেখে ও করা যায়) ৩) শরীর ফ্যাট করে এমন খাবার গুলো বেশি বেশি করে খান...একজন মানুষের স্বাভাবিক দৈনিক খাদ্য চাহিদা ২৮০০ ক্যালোরি...সেক্ষেত্রে আপনি চাহিদার অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহন করুন...নিয়মিত ব্যায়াম করলে ৪০০০ ক্যালোরি পর্যন্ত খাদ্য চাহিদা সৃষ্টি হতে পারে...এতে আপনার মোটা হতে সহায়তা করবে। ২) খাবারের জন্য মুখে রুচি আনতে এ্যারোষ্টোভিট এম মাল্টিভিটামিন...কক্স মাল্টিভিটামিন...হামদার্দের সিনকরা খেতে পারেন। তবে প্রকৃতিগত ভাবে এই ভিটামিন গ্রহন করতে পারলে বেশি উত্তম...বিভিন্ন ধরনের সবজি/ফল খেতে পারেন। ৩) বিকালে আসরের নামাজ পরে অথবা মাগরিবের নামাজের পরে আরেক দফা ঘন্টাখানেক এ্যারোবিক ব্যায়াম করুন...শরীর থেকে অঝরে ঘাম ঝড়তে দিন...ঘামে গোসল করে ফেলুন...এতে শরীর মোটা হবার সময় ক্ষতিকারক ফ্যাটগুলো পুরো ঘামের মাধ্যেমে বের হয়ে আসবে...যা আপনাকে স্থায়ীভাবে মোটাত্ব ধরে রাখতে সহায়তা করবে। ৪) দুই বেলা ব্যায়াম করার কারনে স্বাভাবিক ভাবেই আপনার ঘুমের চাহিদা থাকবে চরমে...এশার নামাজের পর পরই ঘুমাতে যান...কমপক্ষে আট ঘন্টা ঘুমান...ঘুমোতে যাবার আগে ফ্যাটযুক্ত আধালিটার গরম দুধ এক চামচ মধু মিশিয়ে খান...সাথে মাল্টিভিটামিন...অধিক ঘুম আপনাকে মোটা হতে সহায়তা করবে। এভাবে মোটা হতে আপনার ছয় মাস থেকে একবছর লাগতে পারে...ধৈর্য্য হারাবেন না...আস্তে আস্তে মোটা হোন...দোয়া করি সুস্থ্যতার সাথে মোটা হোন...ভালো থাকবেন.