কিভাবে বা কি কৌশলে তারা সহযোগিতা করেছিল? তাদের ভূমিকা কেমন ছিল?


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ভারত বাংলাদেশকে ব্যাপকভাবে সাহায্য করেছে— এটি অস্বীকারের উপায় নেই। 


  • ভারত বাংলাদেশের মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজের দেশে আশ্রয় দিয়েছে ।
  • মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে, মুক্তিযুদ্ধে সেনা সহায়তাসহ সব ধরনের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সহায়তা দিয়েছিল ভারত। 
  • পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণের পরই বাংলাদেশ স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
  • বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি শরণার্থী ভারতে প্রবেশ করে। যার কারণে ভারতীয় সরকার তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মুক্তি আন্দোলন নিয়ে ব্যাপকভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। এ সময় ভারত পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে সমর্থন দিতে ছিল।
  • তবে ভারত রাজনৈতিক, ভৌগোলিক ও মতাদর্শগত কারণেই মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে সহায়তা করে। 
  • ভুটানের পর দ্বিতীয় বিদেশি রাষ্ট্র হিসেবে ভারত বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান করে।
  • উপমহাদেশের অন্যতম পরাশক্তি ভারতের এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের চূড়ান্ত বিজয়ে দারুণ ভূমিকা রেখেছিল।


দ্বিতীয়ত ভারতের মিত্র রাশিয়া (সোভিয়েত ইউনিয়ন) বাংলাদেশকে সাহায্য করেছে  ।

  • ২৫ মার্চ গণহত্যার পর প্রথম প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল ভারত। দ্বিতীয়টি সোভিয়েত ইউনিয়ন।
  • ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে রাশিয়া সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মাইন ও ধ্বংসাবশেষ অপসারণে রাশিয়ার অনেককে জীবন দিতে হয়েছে।
  • বাংলাদেশের পুনর্বাসন কাজেও সোভিয়েত ইউনিয়ন আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার আট দিনের মধ্যে অর্থাৎ ১৯৭১-এর ৩ এপ্রিল পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে লেখা সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট নিকোলাই পদগোনির চিঠিটি দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। সে চিঠিতে শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রেফতারের খবরে উদ্বেগ, শক্তি ব্যবহার না করে রাজনৈতিক পথেই সংকট মোকাবিলার পরামর্শ ও মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণার কথা রয়েছে।



ভুটানের ভূমিকা:

  • ১৯৭১ সালে একজন সমাজকর্মী হিসেবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সমর্থন জানানোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন ।উগিয়েন তেসারিং যিনি বিদেশি বন্ধু হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা লাভ করেন। তিনি ছাড়াও ভুটানের আরও বেশ কিছু সমাজকর্মী এবং সংবাদমাধ্যম নৈতিকভাবে বাংলাদেশকে সমর্থন জানিয়েছিল। ভুটানের এই স্বীকৃতি পরবর্তীতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে দারুণ অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল।


নেপালের ভুমিকা :

  • ছোট রাষ্ট্র নেপালও এই সময় চুপচাপ ছিল না। তাদের জনগণ আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সরকারি ও বেসরকারিভাবে অংশগ্রহণ করে।প্রথমত, ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি অংশ গুর্খা রেজিমেন্ট। গুর্খারা মূলত নেপালি। এরা ভারতীয় সেনাবাহিনীর হয়ে আমাদের যুদ্ধে অংশ নেয়। সেসব সৈন্যের এখনো অনেকে জীবিত আছেন এবং নেপালে বসবাস করছেন। অন্যদিকে ভারতে নির্বাসিত নেপালের কৈরালা পরিবার যুদ্ধে অংশ নেয়। তারা কিছু অস্ত্রও জোগাড় করেছিলেন। কিন্তু তারা পরে ভারতীয় নেতা জয় প্রকাশ নারায়ণের অনুরোধে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সেগুলো দিয়ে সাহায্য করেন ।
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ