আমি নামাজ পরি নাই। কিন্তু নামাজের সময় বন্ধু বা অন্য কারো সাথে অনলাইন এ নামাজের দোহাই দিয়ে বললাম - "যাও নামাজ পড়। আমিও নামাজ পরব। নামাজ শেষ করে কথা বলি"। 

এরকম কিছু কি বলা যাবে। আর না করা গেলে বিকল্প উপায় কি


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

নামায না পরে অন্যজনকে নামাযে অনুপ্রাণিত করার জন্য মিথ্যা বলা যাবে না।

কারো সাথে অনলাইনে নামাযের দোহাই দিয়ে বলা "যাও নামাজ পড়। আমিও নামাজ পরব। নামায শেষ করে কথা বলি"। এরকম মিথ্যা বলা যাবে না।

যারা মুখে ধর্মের কথা বলে, নিজে আমল করে না। এদের বিষয়টি সবচেয়ে ভয়াবহ। জুনদুব ইবনু আব্দুল্লাহ আযদী বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, সে ব্যক্তি উদাহরণ যে ব্যক্তি মানুষকে কল্যাণের দাওয়াত দেয়, নিজে আমল করে না। সে সেই মোমবাতির মত, যে মোমবাতির মত। যে মোমবাতি মানুষকে আলো দেয় এবং নিজেকে জ্বালিয়ে দেয়। (তাবারানী, তারগীব, হা/৩৩৩১)।

ভালকাজের আদেশ দিলে নিজেও পালন করতে হবে। অন্যথা পরিণতি হবে ভয়াবহ। আল্লাহ বলেন, উসামা ইবনু যায়েদ বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ক্বিয়ামতের দিন এক ব্যক্তিকে আনা হবে। অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তখন আগুনে পুড়ে তার নাড়িভুড়ি বের হয়ে যাবে। এসময় সে ঘুরতে থাকবে, যেমন গাধা তার চাকা নিয়ে তার চার পার্শ্বে ঘুরতে থাকে। তখন জাহান্নামবাসীরা তার নিকট একত্রিত হয়ে তাকে বলবে হে অমুক ব্যক্তি! তোমার এ অবস্থা কেন? তুমি না আমাদেরকে ভালকাজের আদেশ করতে আর অন্যায় কাজ হতে নিষেধ করতে? সে বলবে, আমি তোমাদেরকে ভালকাজের আদেশ করতাম বটে, কিন্তু আমি তা করতাম না। আর আমি তোমাদেরকে অন্যায় কাজ হতে নিষেধ করতাম অথচ আমিই তা করতাম’ (বুখারী, মিশকাত হা/৫১৩৯)।

আল্লাহ তাআলা কুরআনে ইরশাদ করেন, ‘তোমরা মানুষকে সৎ কাজের নির্দেশ দিচ্ছ, অথচ কিতাব পাঠ করা সত্ত্বেও নিজেদেরকে ভুলে যাও। তোমরা কি একথাটিও বুঝতে পার না? (সুরা বাক্বারা : আয়াত ৪৪)।

এ আয়াতে কারিমাটি বনি ইসরাইলদেরকে উদ্দেশ্য করে নসিহত বা উপদেশ প্রদান সম্পর্কে নাজিল হয়েছে। যদিও আয়াতটি বনি ইসরাইল সম্প্রদায়কে উদ্দেশ্য করে নাজিল করা হয়েছে। কিন্তু তাতে রয়েছে মুসলিম উম্মাহর জন্য অনন্য শিক্ষা।

বনি ইসরাইল সম্প্রদায় নিজেরা অন্যকে ভালো কথা ও কাজের উপদেশ দিত ঠিকই তাদের প্রতি আল্লাহর নির্দেশ ছিল সর্বশেষ নবি ও রাসুল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কুরআন নিয়ে দুনিয়ায় আগমন করবেন; তখন তারা শরিয়তে মুহাম্মাদির ওপর বিশ্বাস স্থাপন করবে। কিন্তু তারা তা থেকে নিজেদেরকে বিরত রেখেছে।

আলোচ্য আয়াত থেকে উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য শিক্ষা হলো- তাঁরা মানুষকে হেদায়েত ও ভালো কাজের নসিহত বা উপদেশ প্রদান করবে এবং নিজেরাও সে সব হেদায়েতি কথা ও উপদেশ মেনে চলবে। ফলে যাকে নসিহত প্রদান করা হবে; আর যে ব্যক্তি নসিহত প্রদান করবে; এ আয়াতের শিক্ষায় উভয়েরই ফায়েদা হাসিল হবে। এ কারণে ইসলামে নসিহত প্রদানের মানদণ্ডই হলো- নিজে ভাল কাজ করবে; অন্যকে ভাল করতে উৎসাহ উদ্দীপনা যোগাবে।

পরিশেষে...অন্যকে ভাল কাজের উপদেশ প্রদানের সঙ্গে সেঙ্গ নেককার হওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। মনের রাখতে হবে, অপরকে সত্যের নসিহত প্রদান করে নিজে নসিহত বর্জন করা হবে নিতান্ত গর্হিত কাজ। তাই আত্ম-সংশোধনের চেষ্টা করার পাশাপাশি অন্যকে সংশোধনে নিজেকে আত্ম-নিয়োগ করতে হবে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ