আমি জানি জন্মদিন পালন করা বা জন্মদিন উপলক্ষে কোন অনুষ্ঠান করা হারাম। কিন্তু যদি কেউ আমাকে আমার জন্ম দিনে শুভেচ্ছা জানাই এতে কি উভয়ের পাপ হবে...??
জন্মদিন বা মিত্যুবার্ষিকী পালন করা ইসলামের দুষ্টিতে হারাম কারণ এটার ইসলাম কর্তৃক অস্বীকৃত একটি বিধান। এটা ইহুদী, খ্রিষ্টান, বা ভিন্নধর্মীদের তৈরি করা বিধান। আর
রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেন, যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে, সে ব্যক্তি (কিয়ামতের দিন) তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে’ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৩৪৭)।
তাই আমরা বলতে পারি এসব বার্ষিকী পালন করা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম। আর বিশেষ করে আপনি আপনাকে কেউ এসব অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করলে আপনার গুনাহ হবে না বরং যে আপনাকে আমন্ত্রণ জানাবে তার গুনাহ হবে।
সমাজ ব্যবস্থাটাই খারাপ হয়ে গেছে আপনি চাইলেই ইসলাম বহিভূত এই ধরণে কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে পারবেন না তবে আপনি আপনার অন্তর থেকে এসব জন্ম,মিত্যু বার্ষিকীকে ঘৃণা পোষণ করুন তাহলেই আশাকরি আপনার ঈমানের দায়িত্ব পালন হবে এবং গুনাহ ও হবে না।
অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করা কখনো শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে হতে পারে। আবার কখনো শুভবুদ্ধি সৃষ্টির মাধ্যমে হতে পরে। আবার কখনো শুধু অন্তরের ঘৃণার মাধ্যমেই হয়ে থাকে। অন্তর দিয়ে সেটা করা সর্বাবস্থায়ই ওয়াজিব হবে। কারণ, এতে কোনো কষ্ট পেতে হয় না। যে ব্যক্তি এতটুকু ঘৃণাও পোষণ করে না, সে প্রকৃত মুমিন নয়। (রসূল সাঃ এর বাণী)
যদি কেউ আপনাকে জন্ম দিনে শুভেচ্ছা জানায় এতে আপনার পাপ হবে না।
=>জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানো নিয়ে আলেমদের মধ্যে দ্বিমত আছে। অধিকাংশ ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, এটি মূলত সুন্নাহসম্মত কাজ নয়। আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যেহেতু এটি মূলত বিজাতীয় সংস্কৃতি। এ থেকে যথাসম্ভব বেঁচে থাকাই উত্তম।
তবে কেউ যদি জন্মদিনে উইশ করে বা গিফট দেয় এতে আমার করণীয় কি?
আমাকে উইশ করলে কি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা যাবে?
উত্তর: জন্মদিন পালন করা এবং এ উপলক্ষে উইশ করা বা গিফট লেনদেন করা শরিয়ত সম্মত নয়। কারণ তা অমুসলিমদের সংস্কৃতি। আর ইসলামে অমুসলিমদের অনুসরণ-অনুকরণ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ-চাই তা ইবাদতের ক্ষেত্রে হোক অথবা আচার-আচরণ, পোশাক-পরিচ্ছদ, রীতি-নীতি বা কৃষ্টি-কালচারের ক্ষেত্রে হোক।
ইসলামে যেহেতু জন্ম-মৃত্যু দিবস পালন করার অস্তিত্ব নেই সেহেতু অমুসলিমদের সাদৃশ্য অবলম্বনে জন্মদিবস পালন করার সুযোগ নাই।
সুতরাং এ উপলক্ষে কাউকে উইশ করা, শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানো, গিফট দেয়া, কেক কাটা, মোমবাতি জ্বালানো বা ফুঁ দিয়ে নিভানো, বিশেষ খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা, জন্ম দিনের পার্টি করা সবই হারাম।
কোন মুসলিম ব্যক্তি অজ্ঞতা বশত: এমনটি করলে তাকে নিষেধ করতে হবে এবং এ সম্পর্কে ইসলামের বিধান জানাতে হবে। কিন্তু কেউ যদি আপনার জন্ম দিবসে উপহার নিয়ে হাজির হয়ে যায় বা উইশ করে আর তৎক্ষণাৎ প্রতিবাদ করলে বা উপহার ফেরত দিলে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে তার উপহার গ্রহণ করে ধন্যবাদ জানানো যেতে পারে। তবে তার কাছে ইসলামের বিধানটি সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করে বুঝাতে হবে যে, ইসলামে জন্ম দিবস পালন করা বা এ উপলক্ষে কোনো অনুষ্ঠান-আয়োজন করা, ইউশ বা উপহার বিনিময় করা বৈধ নয়। তাকে এও বলতে হবে যে, ভবিষ্যতে যেন আর কখনো এমটি না করে। ©