আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু । ইদানিং আমি নামাযের প্রতি উদাসীন হয়ে যাচ্ছি। ১ ওয়াক্ত নামাযে আদায় করলে বাকি গুলাতে অলসতা দেখা দিচ্ছে। বাজে,কাজের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে। তাওবা করার পর ও সেই একই কাজ বার বার করছি। আমার ভালো লাগছে না। কিছুতেই শয়তানের হাতে থেকে রক্ষা পাচ্ছি না। এমন কোন হাদিস আছে যে কোন সাহাবী এই রকম শয়তানের ধোকাতে পড়ে পাপ করে ফেলছে।পরে আল্লাহ্ তাকে হিদায়েত দান করেছে।
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
DreamAchive

Call

আপনি খারাপ কাজ করবেন, কিন্তু অনুশোচনা না করে যতই আল্লাহর কাছে তওবা করেন লাভ হবে না। পরবর্তীতে আবার আপনি খারাপ কাজে লিপ্ত হয়ে যাবেন। আপনি যে খারাপ কাজ করছেন তাতে আপনার অনুশোচনা আসতে হবে, ওই পাপ কাজকে মন থেকে ঘৃণা করতে হবে, আর মনের সাথে দৃঢ় সংকল্প করতে হবে যে আমি যে পাপ করছি তার জন্য আমাকে পরকালে আল্লাহর কাছে জবাব দিতে হবে। নিরবে, নিস্তব্দে একটি অন্ধকার রুমে একা একা এইগুলো ভাবুন।। আর অনুশোচনা করুন নিজের সাথে নিজে। মনে মনে চিন্তা করুন আপনি মারা গেছেন, আপনার কবরে আজাব হচ্ছে এইগুলা ভাবুন। দেখবেন একটা ভয় কাজ করবে।। আর এসব পাপ কাজ না ছাড়তে পারলে আপনি ইহকালেও শান্তি পাবেন না।। এই গুলো মাথায় রাখার চেষ্টা করুন।। তারপর তওবার বিষয়। তাহলেই আপনি আর খারাপ করতে চাইলেও করতে পারবেন না। নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ুন ও মাঝে মাঝে মধ্যরাতে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ুন আর আল্লাহর কাছে গুনাহের কথা স্মরণ করে কান্নাকাটি করে ক্ষমা চান আর আল্লাহকে বলুন আল্লাহ আপনি আমাকে পাপ কাজ থেকে ফিরার জন্য সাহায্য করুন। কেননা আল্লাহর সাহায্য ছাড়া আমরা কোনো কিছুই করতে পারব না।। আর নামাজে অলসতা দূর করার জন্য আপনি একেবারেই অশ্লীল যত কাজ আছে তা ছেড়ে দিন যেমনঃঃ( গান, খারাপ ছবি দেখা, খারাপ কথা শুনা বা বলা, খারাপ বন্ধুদের সাথে আডডা দেওয়া) ইত্যাদি কাজ একেবারেই ছেড়ে দিন।। কুরআন   তিলাওয়াত করুন ও শুনুন, হাদিস পড়ুন, ওয়াজ শুনুন ও ভালো কাজ করার চেষ্টা করুন। কোনো ভাবেই খারাপ কাজে লিপ্ত হবেন না৷। তাহলে আপনার মধ্যে আর খারাপ চিন্তা ভাবনা আসবে না আর আপনি খারাপ কাজও করবেন না।। এবং নামাজ পড়ে মনে একধরনের শান্তি উপলব্ধি করবেন। তাহলে আপনার আর নামাযে অলসতা আসবে না৷ আর বেশি বেশি এস্তেগফার পড়বেন।। শয়তানের কুমন্ত্রনা থেকে বাঁচতে সকাল ও সন্ধ্যা ১০ বার করে (আউযুবিল্লাহ হিমিনাশ শায়তনের রাজিম) দোয়াটি পড়বেন।। সর্বতা আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইবেন।। ইনশাআল্লাহ আপনি এটা ১ মাস করুন দেখবেন আপনার মধ্যে কি পরিবর্তনটা আসে।। আর হ্যাঁ ইউটুবে বিভিন্ন ওয়াজে বিভিন্ন সাহাবীদের ঘটনা শুনুন। দোয়া করি আপনি যাতে পাপ কাজ থেকে ফিরে আসুন।।  

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

নামাযের প্রতি উদাসীন হয়ে যাওয়ার স্বভাব কম বেশি সবার মাঝেই বিদ্যমান।

তবে পবিত্র কুরআনে সুরা মাঊনে যে-সব মুসল্লিরা সালাতের ব্যাপারে উদাসীন তাদের কঠিন ধমক ও জাহান্নামের হুমকি দেয়া হয়েছে।

ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন : এরা হচ্ছে মুনাফিক অর্থাৎ যারা সকলের সাথে থাকলে সালাত আদায় করে কিন্তু একাকী বা গোপনে থাকলে সালাতের ধার ধারে না। এজন্য আল্লাহ তাআলা বলেছেন : অর্থাৎ যারা সালাত আদায়কারী এবং সালাতের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল কিন্তু পরবর্তীতে সালাতের ব্যাপারে অলসতা প্রর্দশন করতঃ হয় সালাত সম্পূর্ণ বর্জন করে অথবা শরীয়ত নির্ধারিত সময়ে আদায় না করে অথবা সালাত রাসূলের শেখানো পদ্ধতিতে আদায় না করে।

আল্লাহ তাআলা বলেন : তাদের পরে এলো অপদার্থ পরবর্তীগণ, তারা সালাত নষ্ট করল ও কুপবৃত্তির অনুসরণ করল। সুতরাং তারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি‎ প্রত্যক্ষ করবে। (সূরা মারইয়াম ১৯: ৫৯)

তাই প্রসিদ্ধ তাবেয়ী মাসরূক, আবূ যুহা ও আতা বিন দীনার (রহঃ) বলেছেন : আল্লাহ বলেছেন, 'তারা সালাতের ব্যাপারে উদাসীন'। সালাতের মাঝে উদাসীন এ কথা বলেননি। কেননা যারা সালাতের ব্যাপারে উদাসীন তারা হয়তো নিয়মিত বা অনিয়মিতভাবেই সালাতের উত্তম সময় থেকে বিলম্ব করে মাকরূহ সময়ে আদায় করে, আবার হয়তো বিনয় নম্রতাসহ সালাতের রুকন-আরকান ও শর্তসমূহ ভালভাবে আদায় করে না।

তাই নাবী (সাঃ) বলেন : ওটা মুনাফিকের সালাত (তিনবার বলেছেন)। সে সূর্য অস্তমিত যাওয়ার প্রতিক্ষায় বসে থাকে, সূর্য অস্ত যেতে শুরু করে এমনকি তা শয়তানের দুশিং এর মাঝামাঝি চলে যায় তখন সে দাঁড়িয়ে চারটি ঠোকর মারে। অল্প সময় ছাড়া তারা আল্লাহ তাআলাকে স্মরণই করে না। (সহীহ মুসলিম হা. ১৪৪৩)

আলোচনায়, এ কথা স্পষ্ট হয়ে উঠে যে, এ সমস্ত বদ অভ্যাসে অভ্যস্ত ঐ সব লোকই হতে পারে, যারা আখেরাতের হিসাব ও প্রতিদানের প্রতি বিশ্বাস পোষণ করে না। এ জন্যই মুনাফিকদের একটি গুণ এও বর্ণনা করা হয়েছে যে, যখন তারা (মুনাফিকরা) নামাযে দাঁড়ায় তখন শৈথিল্যের সাথে, কেবল লোক দেখানোর জন্য দাঁড়ায় এবং আল্লাহকে তারা অল্পই স্মরণ করে থাকে। (সূরা নিসা ৪:১৪২ আয়াত)।

মোটকথাঃ সালাত আদায় ত্যাগ করা অথবা সালাত থেকে গাফেল ও বেপরোয়া হয়ে যাওয়া প্ৰত্যেক উম্মতের পতন ও ধ্বংসের প্রথম পদক্ষেপ। সালাত আল্লাহর সাথে মুমিনের প্রথম ও প্রধানতম জীবন্ত ও কার্যকর সম্পর্ক জুড়ে রাখে। এ সম্পর্ক তাকে আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের কেন্দ্র বিন্দু থেকে বিচ্যুত হতে দেয় না। এ বাঁধন ছিন্ন হবার সাথে সাথেই মানুষ আল্লাহ থেকে দূরে বহুদূরে চলে যায়। এমনকি কার্যকর সম্পর্ক খতম হয়ে গিয়ে মানসিক সম্পর্কেরও অবসান ঘটে। তাই আল্লাহ একটি সাধারণ নিয়ম হিসেবে এখানে একথাটি বর্ণনা করেছেন যে, পূর্ববতী সকল উম্মতের বিকৃতি শুরু হয়েছে সালাত নষ্ট করার পর।

হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: বান্দা ও শির্কের মধ্যে সীমারেখা হলো সালাত ছেড়ে দেয়া। (মুসলিম: ৮২)

তিনি আরও বলেছেন: আমাদের এবং কাফেরদের মধ্যে একমাত্র সালাতই হচ্ছে পার্থক্যকারী বিষয়, (তাদের কাছ থেকে এরই অঙ্গীকার নিতে হবে) সুতরাং যে কেউ সালাত পরিত্যাগ করল সে কুফরী করল। (তিরমিয়ী:২৬২১)।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ