রক্তশূন্যতা কেন হয়? সেরে উঠার ঊপায় কি। দ্রুত শরীরে রক্তকণিকা বৃদ্ধি সহায়ক খাবার গুলো কিকি ?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে রক্তশূন্যতা হয়। সাধারণত মেয়েরা এই সমস্যায় বেশি ভোগেন। রক্তশূন্যতা হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। যেমন : শরীরে আয়রনের ঘাটতি, ভিটামিন বি ১২-এর ঘাটতি, ধূমপান, কোনো কারণে অতিরিক্ত রক্তপাত ইতাদি। রক্তশূন্যতার লক্ষণ ব্যক্তিভেদে বিভিন্ন রকম হয়। অবসন্নতা, ক্লান্তিভাব, বমি, ঘাম হওয়া, মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, ছোট শ্বাস, বেশি ঠান্ডা অনুভব করা ইত্যাদি রক্তশূন্যতার লক্ষণ। কিছু খাবার রয়েছে যা রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে ও রক্তকণিকা বৃদ্ধি করে। ১. আনারস আনারস আয়রন এবং ভিটামিন সি-এর ভালো উৎস। এটি দেহে রক্তসঞ্চালের পরিমাণ বাড়ায়। এটি ঝিমুনি ভাব, দুর্বলতা, অবসাদ দূর করতে সাহায্য করে। নিয়মিত আনার খেলে রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ হয়। ২. টমেটো টমেটো ভিটামিন সি-এর ভালো উৎস। এটি রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধেও সাহায্য করে। দেহের আয়রনকে শোষণ করতে ভিটামিন সি ভালো কাজ করে। প্রতিদিন দুই গ্লাস টমেটোর জুস খাওয়া রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে। ৩. পালং শাক পালং শাক রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে খুব উপকারী। এর মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, ই, বি৯, সি। এ ছাড়া রয়েছে আয়রন, আঁশ ও বেটা কেরোটিন। নিয়মিত পালং শাক খেলে রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ হয়। ৪. লাল মাংস লাল মাংসের মধ্যে রয়েছে আয়রন, ভিটামিন বি। যেমন : গরুর মাংস, খাসির মাংস। এই মাংস রক্তস্বল্পতা দূর করতে এবং শরীরের সব কোষে অক্সিজেন ভালোভাবে সরবরাহ করতে সাহায্য করে। ৫. ডিম ডিমের মধ্যে রয়েছে প্রোটিন ও অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট। রক্তস্বল্পতা কমিয়ে শরীরে রক্তের পরিমাণ বাড়াতে ডিম খুব উপকারী। ডিমের কুসুমের মধ্যে রয়েছে আয়রন। এটি শরীরে লোহিত রক্তের পরিমাণ বাড়ায়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

শরীরে আইরনের ঘাটতিতে রক্তশুন্যাতা দেখা যায়।  রক্তে হিমোগ্লবিন কমে যায়। এজন্য ডাক্তারি নিদেশনা অনুযায়ী প্রচুর প রিমানে শাক-শবজী বিশেষ করে কচু শাক, কচুর লতি, কলিজা, শোল মাছ দুধ ডিম খেতে হবে।  সাথে প্রতি দিন একটা করে আইরন ট্যাবলেট খেতে পারেন ৩ মাস  আশাকরি উপকার পাবেন।

নাম: অলনিড প্লাস। (Alneed Plus made by Incepta pharmaceuticals) 

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

চিকিৎসা বিজ্ঞানে রক্তশুন্যতা বলতে প্রধানত রক্তে হিমোগ্লোবিনের অভাবকে চিহ্নিত করা হয়। নানা কারনে রক্তে হিমোগ্লোবিনের অভাব হতে পারে। গিমোগ্লোবিন অনুর একটি প্রধান উপাদান হল আয়রন (Fe) । তাই, খাদ্যে আয়রনের পরিমান কম হলে, কিনবা শরীর আয়রন শোষণ করতে না পারলে, রক্তশুন্যতা দেখা দিতে পারে। হিমোগ্লোবিন অনু আয়রন অংশটি বাদে বাকিটুকু প্রোটিন দিয়ে গঠিত। সেই প্রোটিন অংশটুকু তৈরীর জন্য যে জিনটি দায়ী তাতে কোন ত্রুটি থাকলে বা দেখা দিলেও রক্ত শুন্যতা হতে পারে। এছাড়াও অন্যান্য অনেক নন-স্পেসিফিক ( যেমনঃ হরমোনাল ইম্ব্যালেন্স) কারন থাকতে পারে। রক্তশুন্যতা থেকে বাচার উপায় : রক্তশূন্যতায় ভুগছেন এমন কোন ব্যক্তির এই সমস্যা হওয়ার প্রথম কারণ হল তার দেহে আয়রণের অভাব। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আয়রণ যুক্ত খাবার রাখুন কিংবা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আয়রণ পিল খেতে পারেন। দ্রুত শরীরে রক্তকণিকা বৃদ্ধি সহায়ক খাবার : সবুজ শাক-সবজি, ডিম, বেদানা, গরু-খাসির কলিজা, ডাল, মাছ ইত্যাদি।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

বহুবিধ কারণে রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে। এগুলোর মধ্যে প্রধান ৩টি কারণ হল—

ক) অস্থিমজ্জায় লোহিত কণিকা কম তৈরি হওয়া। এর কারণগুলো হল—

১. অস্থিমজ্জার স্বল্পতা

২. লৌহ, ভিটামিন বি১২ অথবা ফলিক এসিডের অভাব (মাসিক, গর্ভধারণ, সন্তান প্রসব, দীর্ঘদিন রক্তক্ষরণ)

৩. দীর্ঘস্থায়ী জীবাণু সংক্রমণ, থাইরয়েড গ্রন্থির অসুখ বা লিভারের অসুখ, বিভিন্ন প্রকার ওষুধ সেবন, কীটনাশক ওষুধের ব্যবহার, রঞ্জন রশ্মি বা তেজষ্ক্রিয় রশ্মির প্রভাব ইত্যাদি।

খ) অতিরিক্ত পরিমাণে লোহিত কণিকা ভেঙ্গে যাওয়ার কারণগুলো হল—

১. জন্মগতভাবে লোহিত কণিকাতে ত্রুটি যেমন— থ্যালাসেমিয়া

গ) অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণগুলো হল—

১. সাময়িক ও দীর্ঘস্থায়ী রক্তক্ষরণ যেমন— আঘাতজনিত কারণ।

২. পেপটিক আলসার, পাইলস, বক্র কৃমির সংক্রমণ, ঘন ঘন গর্ভধারণ ও প্রসব, মহিলাদের মাসিকের সময় অধিক রক্তক্ষরণ ইত্যাদি।

সামান্য পরিমাণ রক্তশূন্যতায় তেমন কোনো উপসর্গ দেখা দেয় না। রক্তশূন্যতা প্রকট হলে নিচের উপসর্গগুলো দেখা দিতে পারে—

ক) অবসাদ, দুর্বলতা, ক্লান্তি

খ) বুক ধড়ফড় করা

গ) স্বল্প পরিশ্রমে শ্বাসকষ্ট

ঘ) মাথা ঝিমঝিম করা

ঙ) চোখে ঝাপসা লাগা

চ) মাথা ব্যথা করা

ছ) হাতে পায়ে ঝিনঝিন করা, অবশ ভাব হওয়া

জ) হাত, পা, সমস্ত শরীর ফ্যাকাসে হয়ে আসা

এ ছাড়া লৌহের অভাবজনিত কারণে রক্তশূন্যতা হলে যা আমাদের দেশে বেশি দেখা যায়—

ঝ) অস্বাভাবিক খাদ্যের প্রতি আসক্তি জমায়

ঞ) মুখের কোণায় ঘা হয় (Stomatitis)

ট) জিহ্বায় ঘা বা প্রদাহ (Glossitis)

ঠ) খাদ্য গিলতে অসুবিধা (Dysphagia)

ড) নখের ভঙ্গুরতা ও চামচের মতো আকৃতির নখ হয়ে যাওয়া

ঢ) থ্যালাসেমিয়াতে চেহারার আকৃতি মঙ্গোলীয় জাতির মতো দেখায় ও চাপা দেখা যায় (Mongoloid Facies)

রক্তশূন্যতার উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্চনীয়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু পরীক্ষা করানো যেতে পারে। যেমন—

ক) রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা (Hb%)

খ) পেরিফেরাল ব্লাড ফিল্ম (PBF)

গ) অস্থিমজ্জা পরীক্ষা (Bone marrow examination)

ঘ) মাথার এক্স-রে (X-ray of Skull)

ঙ) প্রয়োজন ভেদে কিছু বায়োকেমিক্যাল পরীক্ষা ইত্যাদি।

রক্তশূন্যতার জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় প্রথমে রোগীর রক্তশূন্যতা প্রকৃতপক্ষে আছে কি-না তা নিরূপণ করতে হয়। যদি রক্তশূন্যতা থাকে তবে রক্তশূন্যতার কারণ যাচাই এর জন্য আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যেতে পারে। যেমন—

চ) রক্তশূন্যতার উপসর্গের চিকিৎসা

ছ) খাদ্যে যে যে উপাদানের ঘাটতির জন্য রক্তশূন্যতা হয়েছে সে উপাদানের ঘাটতিপূরণ।

জ) যে শারীরিক ত্রুটি বা অসুস্থতার জন্য রক্তশূন্যতা দেখা দিয়েছে সে রোগের চিকিৎসা করানো।

লৌহের অভাবজনিত কারণে রক্তশূন্যতা দেখা দিলে (যেমন— খাদ্যে ঘাটতি, বক্রকৃমির সংক্রামক, পেপটিক আলসার এর রক্তক্ষরণ ইত্যাদি) আয়রন ট্যাবলেট খেতে হবে।

ভিটামিন বি১২ বা ফলিক এসিডের অভাবে উক্ত উপাদানের ঘাটতি পূরণ করতে হবে। যে কোনো কারণেই হোক যদি রক্তশূন্যতা অত্যন্ত প্রকটভাবে দেখা দেয় তবে অল্প সময়ে সাময়িক উন্নতির জন্য রক্ত পরিসঞ্চালন করা জরুরি হয়ে পড়ে এবং এ জন্য হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রয়োজন। প্রেক্ষাপটে গর্ভবতী ও স্তন্যদায়ী মা এবং শিশুদের অধিকাংশই সাধারণ রক্তশূন্যতার শিকার। রক্তশূন্যতা রোধে গর্ভবতী মা, শিশুদের লৌহসমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে দিতে হবে। কালো কচু, ধনেপাতা, কাটা নটে, ডাঁটা শাক, আমচুর, পাকা তেঁতুল, ছোলা শাক, ফুলকপি, আটা, কালোজাম, চিড়া, শালগম, কলিজা, চিংড়ি এবং শুঁটকি মাছেও আয়রন রয়েছে। তাই এগুলো মা ও শিশুকে খেতে দিতে হবে।

গর্ভবতী মাকে গর্ভের চতুর্থ মাস থেকে আয়রন ট্যাবলেট খেতে দিতে হবে। শিশুর কৃমি রক্তশূন্যতার অন্যতম কারণ। তাই কৃমি প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

কেউ কেউ শরীর দুর্বল হলে বা ফ্যাকাসে হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজেরাই আয়রন সিরাপ বা ট্যাবলেট খেয়ে থাকেন। এটা ঠিক নয়, এতে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি যেমন—থ্যালাসেমিয়া।

থ্যালাসেমিয়াতে রক্তশূন্যতা হয় ঠিকই কিন্তু আয়রনের অভাব হয় না। বরং আয়রন জমা হয়ে অসুবিধার সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে রক্তের প্রয়োজন। সর্বোপরি অসুখ হলেই নিজের ইচ্ছামতো কোনো ওষুধ খাওয়া ঠিক হবে না, অসুখের সঠিক কারণ বের করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে হবে।


ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ