গোনাহের কাজ করে মনে খারাপ লাগা, আফসোস আসা এটা ঈমানের আলামত।আমার মনে আপনি ভুল বুঝতে পেরেছেন। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন- ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺃُﻣَﺎﻣَﺔَ ﺃَﻥَّ ﺭَﺟُﻠًﺎ ﺳَﺄَﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﺎ ﺍﻟْﺈِﻳﻤَﺎﻥُ ﻗَﺎﻝَ ﺇِﺫَﺍ ﺳَﺮَّﺗْﻚَ ﺣَﺴَﻨَﺘُﻚَ ﻭَﺳَﺎﺀَﺗْﻚَ ﺳَﻴِّﺌَﺘُﻚَ ﻓَﺄَﻧْﺖَ ﻣُﺆْﻣِﻦٌ ﻗَﺎﻝَ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻓَﻤَﺎ ﺍﻟْﺈِﺛْﻢُ ﻗَﺎﻝَ ﺇِﺫَﺍ ﺣَﺎﻙَ ﻓِﻲ ﻧَﻔْﺴِﻚَ ﺷَﻲْﺀٌ ﻓَﺪَﻋْﻪََََُ হযরত আবু উমামা রাঃ থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি রাসূল সাঃ কে জিজ্ঞাসা করল, “ঈমান”কি? রাসূল সাঃ বললেনঃ যখ তোমার নেক কাজ তোমাকে আনন্দিত করে, আর গোনাহের কাজ তোমাকে পেরেশান করে তাহলে তুমি মুমিন। লোকটি আবার জিজ্ঞেস করেঃ তাহলে গোনাহ কি? তিনি বললেনঃ যখন তোমার মনে কোন বিষয় নিয়ে সংশয় হয়,তাহলে তা ছেড়ে দাও। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২১৬৬, মুসনাদুল হারেস, হাদীস নং-১১, মুসনাদুশ শামীন, হাদীস নং-২৩৩, আলমুজামুল কাবীর, হাদীস নং-৭৫৪০} সুতরাং আপনার যেহেতু গোনাহের কাজটি করার সময়ই খারাপ লাগছিল, তারপর ও আফসোস লেগেছে তাহলে এটি সাচ্চা ঈমানের আলামত নবীর ভাষায়। তবে বারবার একই গোনাহ করাটা কোন ভাল কাজ নয়। আল্লাহ তাআলার কাছে তওবা করুন আর যেন কখনো এমন কাজ না হয় আপনার জীবনে। ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺍﻟﺘَّﻮْﺑَﺔُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻟِﻠَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﻌْﻤَﻠُﻮﻥَ ﺍﻟﺴُّﻮﺀَ ﺑِﺠَﻬَﺎﻟَﺔٍ ﺛُﻢَّ ﻳَﺘُﻮﺑُﻮﻥَ ﻣِﻦْ ﻗَﺮِﻳﺐٍ ﻓَﺄُﻭﻟَٰﺌِﻚَ ﻳَﺘُﻮﺏُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ۗ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠِﻴﻤًﺎ ﺣَﻜِﻴﻤًﺎ [ ٤ : ١٧ ] ﻭَﻟَﻴْﺴَﺖِ ﺍﻟﺘَّﻮْﺑَﺔُ ﻟِﻠَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﻌْﻤَﻠُﻮﻥَ ﺍﻟﺴَّﻴِّﺌَﺎﺕِ ﺣَﺘَّﻰٰ ﺇِﺫَﺍ ﺣَﻀَﺮَ ﺃَﺣَﺪَﻫُﻢُ ﺍﻟْﻤَﻮْﺕُ ﻗَﺎﻝَ ﺇِﻧِّﻲ ﺗُﺒْﺖُ ﺍﻟْﺂﻥَ ﻭَﻟَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﻤُﻮﺗُﻮﻥَ ﻭَﻫُﻢْ ﻛُﻔَّﺎﺭٌ ۚ ﺃُﻭﻟَٰﺌِﻚَ ﺃَﻋْﺘَﺪْﻧَﺎ ﻟَﻬُﻢْ ﻋَﺬَﺍﺑًﺎ ﺃَﻟِﻴﻤًﺎ [ ٤ : ١٨ ] অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন,যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে,অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, রহস্যবিদ। আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে, এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়,তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। {সূরা নিসা-১৭-১৮}
পাপ দু ধরনের। ১। আল্লাহর সাথে সংশ্লিষ্ট। ২। মানুষের সাথে সংশ্লিষ্ট। আল্লাহর সাথে সংশ্লিষ্ট পাপের জন্য যদি আল্লাহর নিকট তাওবার শর্ত মেনে তাওবা করা হয় তাহলে আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন। কিন্তু মানুষের সাথে সংশ্লিষ্ট পাপগুলো আল্লাহ ক্ষমা করবেন না যতক্ষণ না মানুষের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেয়া হবে। সুতরাং আপনার বড় বড় পাপগুলো যদি ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট হয় তাহলে প্রথমে তাদের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিন। তারপর আল্লাহর নিকট তাওবা করুন। আর পাপগুলো একমাত্র আল্লাহর সাথে সংশ্লিষ্ট হলে ভবিষ্যতে আর পাপ না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে আল্লাহর নিকট তাওবা করুন। আশা করা যায়, আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন।
সত্য মনে তাওবা করলে আল্লাহ অবশ্যই কবুল করেন। কারণ আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে অাল্লাহ অনেক খুশি হোন।
তাওবার কিছু পদ্ধতি আছে। সে অনুযায়ী করতে হবে। এমন না যে, জিহ্বাতে কামড় দিয়ে দুগালে হাত লাগালাম তাওবা হয়ে যাবে। এভাবে তাওবা মানে ঠাট্টা করা। তাওবার তিনটির রুকন রয়েছে।
(১) কৃত পাপ স্বীকার করা। (২) এতে লজ্জিত হওয়া। (৩) ঐ গুনাহের কাজ ছেড়ে দেয়ার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা। আর যদি ঐ গুনাহের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা থাকে, তাহলে পরবর্তীতে যথাযথভাবে তা ক্ষতিপূরণ করে নেয়া আবশ্যক। যেমন- নামায ত্যাগকারী ব্যক্তির তাওবা শুদ্ধ হওয়ার জন্য ঐ নামায কাযা আদায় করে নেয়া জরুরী।
আরো দেখুন এখানে