আমি যদি একটু বেশিদূর হাটি অথবা সীড়ি বেয়ে ৩ ৪ ৫ তলায় উটি আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।তবে বুকে তেমন ব্যথা হয় না শুধু শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।এমনকি বেশি টান্ডা কিছু খাইলে ও শ্বাসকস্ট হয়।আমার বয়স ২৯।
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

হাঁপানি বা অ্যাজমা কি? এটি শ্বাস প্রশ্বাস জনিত একটি রোগ যা মূলত হয়ে থাকে আমাদের শ্বাসনালীর অতি সংবেদনশীলতা (Hypersensitivity) এর কারনে। এর ফলে আমাদের শ্বাসনালীর স্বাভাবিক ব্যাস কমে গিয়ে শ্বাসনালীটি আগের চেয়ে সরু হয়ে যায়। যার ফলে ফুসফুসে পর্যাপ্ত পরিমান বাতাস যাতায়াত করতে পারে না এবং দেহ অক্সিজেনের অভাব অনুভব করতে শুরু করে। রোগের লক্ষণ সমুহঃ - কাশি (সাধারণত শুকনো) - সমস্ত বুক চাপ চাপ লাগা - শ্বাস প্রশ্বাসের সময় বাঁশির মত এক ধরণের আওয়াজ হওয়া - শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া এছাড়াও রোগাক্রান্ত ব্যক্তি এবং পরিস্থিতির ভিন্নতা ভেদে অন্যান্য কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। সুস্থ থাকতে হলে করনীয়- অ্যাজমা সাধারণত কম বয়সীদের বেশি হলেও যে কোন বয়সে যে কারোই হতে পারে। যারা এখনো সুস্থ আছেন তারা এবং যাদের ইতোমধ্যে এই সমস্যাটি দেখা দিয়েছে তারা একটু সচেতন হলেই সুস্থ স্বাভাবিক জীবন করতে পারবেন। অতীতে এই রোগ নিয়েই অনেক মানুষ তার দেশ পরিচালনা করেছেন, অভিনয় জগতকে মাতিয়ে গেছেন, এমনকি অলিম্পিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পদক জিতে নিয়েছেন অনেকবার। তাহলে আসুন ঝুঁকি মুক্ত থাকতে হলে কি কি করনীয় একবার দেখে নেয়া যাক - ১। ধূমপান এবং অন্যান্য সকল প্রকার তামাকজাত দ্রব্য সম্পূর্ণ পরিহার করতে হবে। ২। রাস্তা ঘাটের অতিরিক্ত ধুলা বালি থেকে বাঁচার জন্য নিরাপত্তা মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে। ৩। সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার অভ্যাস গড়তে হবে। ৪। আমাদের ঘরবাড়িতে পর্যাপ্ত আলো বাতাস যাতায়াতের ব্যবস্থা থাকতে হবে, যাতে চারপাশ স্যাঁতসেঁতে না হয়ে যায়। স্যাঁতসেঁতে ঘরে ছত্রাক জন্ম নেয় এবং ছত্রাকের কারনে অ্যাজমা হবার সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে। ৫। যে বাড়িতে অ্যাজমা রোগী আছে সে বাড়িতে কোন পোষা প্রাণী না রাখাই শ্রেয়। ঘরের মেঝেতে কোন কার্পেটও রাখা যাবে না। ৬। ঋতু পরিবর্তনের সময়টাতে অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। বিশেষ করে শীতকালে এবং বর্ষাকালে এই সমস্যা অধিক হারে দেখা দেয় বলে এই সময়টাতে খুব সতর্ক থাকতে হবে। ৭। বিভিন্ন ব্যক্তির বিভিন্ন ধরণের খাবার খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়ে থাকে। সেসমস্ত খাবার একটু এড়িয়ে চলাই ভাল হবে। অতীতে দেখা গেছে যে এই সব খাবারগুলো কারো কারো ক্ষেত্রে সমস্যার কারন হয়ে থাকে- ইলিশ মাছ, চিংড়ি, সামুদ্রিক মাছ, হাঁসের ডিম, গরুর মাংস, গরুর দুধ, বাদাম, কিছু সবজি যেমন- কচু, বেগুন, পুঁইশাক ইত্যাদি। ৮। যাদের আগে থেকেই অ্যালার্জি সংক্রান্ত সমস্যা আছে তাদের হাঁপানি বা অ্যাজমা হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে, তাই উপরিউক্ত বিষয়গুলো তাদেরকে আরও বেশি করে মনে রাখতে হবে এবং মেনে চলতে হবে। ৯। যারা ইতোমধ্যে এই সমস্যায় ভুগছেন তাদের অবশ্যই একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা প্রয়োজন এবং বছরে অন্তত চার থেকে ছয় বার একজন চিকিৎসক অথবা অ্যাজমা ট্রেনিং প্রাপ্ত নার্সের কাছে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিৎ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ