শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

সাধারণভাবে যেকোনো সময় দোয়া করা যায়। এবং যেকোন সময় দোয়া কবুল হতে পারে। কেননা আল্লাহ তাআলা সময় নির্ধারণ না করেই বলেছেন, আমাকে ডাকো, আমি সাড়া দেব। (সুরা আল গাফির, আয়াত : ৬০) তবে একাধিক হাদিস থেকে বোঝা যায়, দিন ও রাতের কিছু বিশেষ সময় দোয়া কবুল করা হয়। এর কয়েকটি রমজান মাসের সঙ্গেও বিশেষায়িত। নিম্নে দোয়া কবুলের সময়গুলো তুলে ধরা হলোঃ ১. রাতের শেষ ভাগ : হজরত আমর ইবনে আবাসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, রাতের শেষ ভাগে মহান প্রভু আল্লাহ বান্দার সবচেয়ে নিকটবর্তী হন। সুতরাং তুমি এই সময় আল্লাহর স্মরণ করতে পারলে তা করো। (বুখারি, হাদিস : ১১৪৫) সহিহ বুখারিতে এসেছে, রাতের শেষ তৃতীয়াংশে মহান আল্লাহ পৃথিবীতে নেমে আসেন এবং ফজর পর্যন্ত আহ্বান জানান, কে আমাকে ডাকবে আমি তাকে সাড়া দেব, কে আমার কাছে চাইবে আমি তাকে দেব, কে আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আমি তাকে ক্ষমা করব। ২. সিজদা : রাসুলে আকরাম (সাঃ) বলেছেন, সিজদারত বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী। সুতরাং সে সময় বেশি বেশি দোয়া করো। (মুসলিম, হাদিস : ৪৮২) হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, সিজদায় তোমরা বেশি বেশি দোয়া করো। চেষ্টা করো যেন তোমাদের সাড়া দেওয়া হয়। (আবু দাউদ, হাদিস : ৮৭৬) ৩. আল্লাহর স্মরণে রাত্রী জাগরণের পর হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, যে মুসলিম আল্লাহর জিকির বা স্মরণের সঙ্গে রাত্রী জাগরণ করবে এবং দুনিয়া-আখিরাতের কোনো কল্যাণ চাইবে, তা তাকে দেওয়া হবে। (মুসনাদে আহমাদ) ৪. আজানের সময় : হজরত আনাস (রাব) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যখন মুয়াজ্জিন আজান দেয়, আসমানের দুয়ার খুলে যায় ও দোয়া কবুল হয়। (মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদিস : ১৮৮৪) ৫. আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময় হজরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময় দোয়া কবুল হয়। সুতরাং তোমরা দোয়া করো। (মেশকাত, হাদিস : ৬৭১) ৬. ইকামত, সৈন্য সমাবেশ ও বৃষ্টির সময় : রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, তোমরা দোয়া কবুলের সুযোগ সন্ধান করো সৈন্য সমাবেশ, নামাজের ইকামত ও বৃষ্টি বর্ষণের সময়। (বায়হাকি) ৭. শুক্রবার দিনের শেষ মুহূর্তে : হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, জুমার দিনের ১২টি মুহূর্ত। তার একটি মুহূর্ত এমন, যখন কোনো মুসলিম কিছু চাইলে আল্লাহ তা তাকে দান করেন। তোমরা আসরের পরের শেষ মুহূর্তে তা অনুসন্ধান করো। (বুখারি, হাদিস : ৬০৩৭) ৮. কারো অনুপস্থিতিতে দোয়া : হজরত ইমরান বিন হোসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, এক ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে অপর ভাইয়ের দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। (বাজ্জার) ৯. রোজাদার, মুসাফির ও সন্তানের জন্য পিতার দোয়া : মহানবী (সাঃ) বলেন, তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। সন্তানের জন্য পিতার দোয়া, রোজাদারের দোয়া ও মুসাফিরের দোয়া। (বায়হাকি ৩/৩৪৫) ১০. ফলাফলের জন্য তাড়াহুড়া না করলে : হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, তোমাদের প্রত্যেকের দোয়া কবুল করা হয়, যদি না সে (তা কবুলের জন্য) তাড়াহুড়া করে এবং বলতে থাকে, আমার দোয়া কবুল হলো না। (বুখারি, হাদিস : ৬৩৪০) তবে উলামায়ে কেরাম বলেন, শুধু সময় নয়, দোয়া কবুলের জন্য তার সুন্নত পদ্ধতিও গুরুত্বপূর্ণ। হাদিসে পবিত্র শরীর ও কাপড়ে, দোয়া কবুলের আশা নিয়ে, কিবলামুখী হয়ে হাত তুলে দোয়া করতে বলা হয়েছে। আর কোরআনে বলা হয়েছে, তোমরা তোমাদের প্রভুকে ডাকো অশ্রুবিনীত হয়ে ও গোপনে। (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৫৫) আল্লাহ তাআলা সবাইকে বেশি বেশি দোয়া ও প্রার্থনা করার তাওফিক দান করুন এবং সবার মনের সদিচ্ছা পূরণ করুন। আমিন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ