পর্ন আসক্তি দূর করার জন্য এ বিষয়ে যথেষ্ট সচেতনতাই হতে পারে প্রথম পদক্ষেপ। এর কুফলগুলো যদি ঠিকমত উপলব্ধি করেন, তাহলে সহজাতভাবেই এর প্রতি আপনার চিন্তাধারায় একটি পরিবর্তন সূচিত হবে। আপনাকে উপলব্ধি করতে হবে, পর্ন আসক্তি একটি মনোসামজিক ব্যধি।
এর শারীরীক ও মানসিক কুফল অনেক। স্নায়ুকে ক্রমাগত উত্তেজিত করার মাধ্যমে এটি আপনার রক্তচাপ বৃদ্ধি, হৃদপিন্ডের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্থ করার পাশপাশি হরমোনাল ডিজঅর্ডার ঘটায়। যার জন্য আপনাকে মাত্রাতিরিক্ত মাস্টারবেশন করতে হয়, যা পরবর্তীতে আপনার ব্যাপক স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। সেই সাথে নৈতিক অবক্ষয় ও মানসিক ভারসাম্যহীনতার বিষয়টাকেও মাথায় রাখুন।
সাধারণত একাকীত্ব, বিষণ্নতা, হতাশার চাপ থেকে মুক্তির জন্যই মানুষ অসুস্থ বিনোদনের প্রতি ঝুঁকে পড়ে। সঙ্গ দোষ কিংবা মাদকাসক্তিও এসবের উল্লেখযোগ্য কারণ। তাই সুস্থ বিনোদনের অভ্যাস গঠন করা অপরিহার্য। এতে আপনি পর্ন আসক্তি তো বটেই মাদকাসক্তি থেকেও বেরিয়ে আসতে পারবেন।
ভালো গান শোনা, ভালো মুভি দেখা, ভালো বই পড়া হতে পারে সম্ভাব্য ভালো অপশন। এছাড়া প্রকৃতির সান্নিধ্যে যেতে পারেন কিছু সময়ের জন্য। হাঁটা কিংবা জগিং করার মত এক্সারসাইজগুলোও আপনাকে দেবে বাড়তি অনুপ্রেরণা।
পরিবারকে সময় দিন। নির্জনতা ও একাকীত্ব থেকে বেরিয়ে আসুন। পিসি বা ল্যাপটপ রুমের এমন একটা পজিশনে রেখে ইউজ করুন, যেন সেটা রুমে ঢুকলে সবার দৃষ্টিগোচর হয়। বাবা-মা তাদের সন্তানদের কম্পিউটার টেবিল ঘরে ঢুকলে, সহজেই চোখে পড়ে এবং মনিটর করা যায় এমন অবস্থানে রাখুন।
সেইসাথে পরিবারের সবাই মিলে ঘুরতে যাওয়া কিংবা পিকনিক করাও হতে পারে ভালো অল্টারনেটিভ। কাজের দিনগুলোর ফাঁকে এই সুন্দর উদ্যোগগুলো আমাদের পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করার পাশাপাশি সরবরাহ করবে পজেটিভ এনার্জি।
এছাড়া আপনি যে ধর্মেরই অনুসারী হোন না কেন, তার মূল্যবোধ ও নৈতিক শিক্ষা আপনাকে পর্ন আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে অবশ্যই সহায়তা করবে। নামাজ বা প্রার্থণা আপনাকে দেবে আত্নিক পরিশুদ্ধি। এছাড়া ধর্মগ্রন্থ পাঠ করতে পারেন নিজের জীবনকে আরো সুসংহত করার তাগিদে। ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের উপদেশ এবং জীবনী থেকেও শিখতে পারবেন, কী করে পাপাসক্তি থেকে প্রত্যাবর্তন করে নির্মল জীবন শুরু করা যায়।
শেষ কথা হল, পর্নগ্রাফির আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আপনাকে দীর্ঘদিনের অব্যাহত প্রচেষ্টায় নামতে হবে।খুব দ্রুত কিংবা চটজলদি আপনি এ অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেননা। তবে সদিচ্ছা ও আন্তরিক প্রচেষ্টা সহকারে উপরের ধাপগুলো অনুসরন করলে আপনি অবশ্যই সুফল পাবেন।
মনে রাখবেন নির্জনতা, আলস্য, হতাশা এবং একাকীত্ব থেকে আপনাকে মুক্ত হতে হবে। সেইসাথে হতে হবে প্রো-অ্যাকটিভ ও গতিশীল মানুষ। নিত্য নতুন উদ্যোগ ও কর্মতত্পরতায় এগিয়ে নিতে হবে জীবনকে। তাহলে স্বাভাবিকভাবেই আপনার নেতিবাচক অভ্যাসুগলো হ্রাস পেতে থাকবে। (সংরক্ষিত)