তারাবির নামায এত তারাতাড়ি কেন পড়া হয়? ইসলামে তারাতাড়ি পড়ার বিধান কি? দলিল সহ উত্তর চাই।।      
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

ইসলামে কোরআন তারতীল ব্যতীত তারাতাড়ি পড়ার বিধান নেই। তবে তারতীলের সাথে প্রত্যেকটি অক্ষর তার নিজস্ব মাখরাজ উচ্চারণের স্থান থেকে সুস্পষ্ট করে উচ্চারণ করে তারাতাড়ি পড়ায় কোন দোষ নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি তারতীলের সাথে থেমে থেমে কুরআনের সূরা পাঠ করতেন। কেননা কুরআন নাযিলের উদ্দেশ্য হচ্ছে তা মনোযোগ সহকারে পড়া ও বুঝা এবং সে অনুযায়ী আমল করা। শুবা (রহঃ) বলেন, আবু হামজাহ আমাকে বলেছেন আমি আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) কে বললামঃ আমি দ্রুত পড়ায় অভ্যস্থ। কখনও কখনও এক রাতেই একবার অথবা দুইবার পূর্ণ কুরআন খতম করে ফেলি। ইবনে আব্বাস (রাঃ) তখন বললেন তুমি যা করে থাক তার চেয়ে আমার নিকট একটি সূরা পড়াই অধিক প্রিয়। তুমি যদি দ্রুত পড়তেই চাও তাহলে এভাবে পড় যাতে তোমার কান উহা শুনে এবং তোমার অন্তর তা অনুধাবন করতে সক্ষম হয়। তারাবীহ ধীরস্থির ভাবেই আদায় করতে হবে এ প্রসঙ্গে আসসায়িব ইবনে ইয়াযিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেনঃ كَانَ الْقَارِئُ يَقْرَأُ بِالْمِئْيِنَ يَعْنِي بِمِئَاتِ الآيَاتِ حَتَّى كُنَّا نَعْتَمِدُ عَلَى الْعَصَى مِنْ طُوْلِ الْقِيَامِ অর্থাৎ ইমাম (পাঠক) সাহেব তারাবীহতে শত শত আয়াত পড়তেন। ফলে সুদীর্ঘ সময় দাঁড়ানোর কারণে আমরা লাঠির উপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম। (মুয়াত্তাঃ ১/১১৪) অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই যে, আমাদের দেশে তারাবীহ যেভাবে তাড়াহুড়া করে পড়া হয় তা পরিহার করে বিশুদ্ধ ও ধীরস্থির তিলাওয়াত আরো একটু সময়ক্ষেপণ করা, সুন্নাত মোতাবিক ও ধীরস্থিরভাবে কিরাআত পাঠ করে সুন্দর করে তারাবীহ আদায় করা অত্যাবশ্যক। যে পদ্ধতিতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের সালাত আদায় করতেন আমাদেরও উচিৎ সে তরীকামত আদায় করা।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call
তারাবি মানেই তারাতারি নয়। তারাবি অর্থ আরাম বা বিশ্রাম করা। তারাবীহ নামাজে ক্বিরাআত দ্রুত পড়তে হবে- এমন কোন বিধান নেই। তারাবি দীর্ঘ একটি সালাত। তারাবি নামাজ ফরজ, সুন্নত, নফল নামাজের ন্যায় তারাবীহ নামাজেও মাদ, গুন্নাহ, মাখরাজ ঠিক রেখে তারতীলের সাথে ক্বিরআত পড়তে হবে। কিন্তু আমাদের দেশে অধিকাংশ মসজিদে এই নিয়ম মেনে চলা হয়না। হাফেজে কোরআনগণ এমনভাবে তেলাওয়াত করেন যে, কোরআনের আয়াতসমুহ স্পষ্ট বোঝা যায়না। তারাবি নামাজ পড়াকালে প্রতি দুই রাকাত বিশেষ করে প্রতি চার রাকাত পর একটু বসে বিশ্রাম করে দোয়া ও তসবিহ পাঠ করতে হয় বলে এ নামাজকে সালাতুত তারাবিহ বা তারাবি নামাজ বলা হয়। অধৈর্য্য হয়ে তারাবি নামাজ আদায় করা যাবেনা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ রাতের একাকী সকল সালাতই ছিল অতি দীর্ঘ। এমনকি কিয়াম, রুকু, সাজদা সবই ছিল খুব লম্বা ও ধীরস্থির। লম্বা ও অনেক আয়াত এবং দীর্ঘ সময় নিয়ে তিনি সকল সালাত আদায় করতেন। কিন্তু আজকাল মসজিদে তারাবিতে নামাজ চলাকালীন সময়ে শুধু গণনা করা হয় যে, কয় রাকাত হলো। নামাজের প্রতি নেই তেমন মনোযোগ। অন্তরে বিরাজ করে না রকমের ধারনা। নামাজে নেই কোন ধৈর্য। নামাজ ধৈর্য্য সহকারে আদায় করা কঠিন কাজ শুধু ঈমানদার ব্যক্তি ব্যতিত।
মাহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে আল্লাহ নিকট সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই এই নামাজ অত্যন্ত কঠিন কাজ তবে অনুগত বান্দাদের জন্য তা কঠিন নয়।’(সূরা আল বাকারা-৪৫)
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ