→→ অনেককেই বলতে শুনেছি বিয়ে করা নাকি ফরজ। বিয়ে না করলে নাকি গুনাহ হয়। অাবার এটাও শুনেছি যে, যার সামর্থ অাছে সে বিয়ে করবে অন্যথায় রোজা রাখবে। কিন্তু অামি তো বিয়ে করতে চাই না। অামি কোন দায়িত্ব নিতে পছন্দ করতাম না, করি না, করবও না। তাছাড়া এখন বিয়ে করতে যে খরচ। ১০ লাখ টাকার কমে মোহরানা নেই বললেই চলে। অাবার মোহরানা শোধ না করলে দাবি থেকে যাবে। কিয়ামতে তার হিসেব দিতে হবে। তো সে কারনেই বিয়ে করতে চাইনা। →→ অামি হয়ত বিয়ে করলাম এবং যতদিন বেঁচে অাছি হয়ত স্ত্রীর দায়িত্ব নিলাম। কিন্তু সন্তানের দায়িত্ব নেয়া তো সম্ভব নয়। কারণ অামার কোন সম্পদ নেই। হতে পারে অাগামী দশ বছর পর অামাকে ভাড়া বাসায় গিয়ে উঠতে হতে পারে। বলা যায় সন্তানের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। →→ শোনা যায় পুরুষের যৌন তাড়না বেশি থাকে ২০-৩০ বছর বয়সে। কিন্তু বর্তমান সময়ে একটা ছেলেকে উঠে দাঁড়াতে গেলে মানে বৌ চালানোর সামর্থবান হতে প্রায় ৩০ বছর লেগে যায়। এখন একটা কঠিন সময় যদি সে বৌ ছাড়া কাটিয়ে দিতে পারে তাহলে পরবর্তীটা কেন পারবে না?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

 স্ত্রীকে বা সন্তান হলে ভরণ পোষণ দেয়ার ক্ষমতা নেই। এ অবস্থায় বিয়ে না করে রোজা রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে হাদিসে। কারণ রোজা দৈহিক কাম উত্তেজনা দূর করে দেয়। এ সময় সক্ষমতা অর্জনের জন্য বেশি বেশি কাজ ও আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে হবে।

বর্তমানে অনেক সক্ষম ও স্বাবলম্বী পুরুষও মনে করেন, বিয়ে করলে স্ত্রীর ভরণ পোষণ দিতে পারবে না। সামান্য আয়ে ছেলে -মেয়ে সাংসারিক চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হবে। এ জন্য বিয়ে থেকে দূরে থাকে। এটা আদৌ উচিত নয়। কারণ রাসূল সা. বিবাহিত ব্যক্তিকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।আর এ কথাও স্বীকৃত, বিয়ে ব্যক্তির উপার্জন বাড়িয়ে দেয়, কমায় না।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

ইসলাম ধর্মে বিয়ে: মুসলিম আইন উৎসগত দিক থেকে কুরআন, হাদীস, ইজমা, কিয়াস নির্ভর। শরীয়া আইন থেকেই বিয়ে সংক্রান্ত বিধানসমূহ অনুসৃত হয়ে থাকে। ইসলাম ধর্মে বিয়ে একটি আইনগত, সামাজিক ও ধর্মীয় মর্যাদা রয়েছে। ছেলে ও মেয়ের একসাথে জীবন-যাপন ও সংসার ধর্ম পালনকে আইনগত, ধর্মীয় ও সামাজিক সুরক্ষা দিতেই বিবাহ প্রথার জন্ম। মুসলিম আইন অনুযায়ী বিয়ে হলো দেওয়ানী চুক্তি। এখানে খুব বেশি আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে হয় না। অন্যান্য চুক্তির মতই এতে দুটি পক্ষ থাকে। সাক্ষীদের উপস্থিতিতে একপক্ষ বিয়ের প্রস্তাব করলে এবং অন্যপক্ষ তা গ্রহণ করলে বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায়। মুসলিম বিয়েতে মহর বাধ্যতামূলক, আর বিয়ের পর ছেলের বাড়িতে অলিমা (বৌভাতের আয়োজন) করা সুন্নত। বিবাহের নির্দেশ: ব্যভিচারের অপকারিতা বর্ণনা করার পর আল্লাহ তাআলা মানব জাতিকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, পুরুষ ও নারী যারই বিয়ের প্রয়োজন দেখা দেবে, সে-ই অবশ্যম্ভাবীরূপে বিয়ে করবে। কেননা, বিয়েই হচ্ছে যৌন পবিত্রতা সংরক্ষণ ও যৌন ক্ষুধা নিবারণের সবচেয়ে বড় উপায় ও মাধ্যম। তাই আল্লাহ রব্বুল ইযযত বিয়ের নির্দেশ দিতে গিয়ে বলেছেন ঃ ‘তোমাদের মধ্যে যারা জুড়িহীন, তাদের বিয়ে করিয়ে দাও এবং তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা উপযুক্ত তাদেরও।’ (সূরা নূর-৩২) আল্লাহ তা‘আলা বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের তাকীদ দান করেছেন এবং যে-সব নারী-পুরুষের বিয়ে করা প্রয়োজন, তাদের সবাইকে বিয়ে করানোর নির্দেশ দিয়েছেন। আর এ দায়িত্ব আল্লাহ অর্পণ করেছেন গোটা জাতির ওপর, যাতে তারা এর গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারে। এ ব্যবস্থার দ্বারা আল্লাহ পাক এটাই বুঝাতে চান যে, বিয়ে-শাদীর দরুন যে উপকার লাভ হয়, গোটা জাতি তার দ্বারা উপকৃত হয়। আর বিয়ে না করার দরুন যে ক্ষতি সাধিত হয়, তাও গোটা জাতিকেই বহন করতে হয়। বস্তুত বৈধ বিবাহ প্রথা রহিত করে দিলে গোটা জাতীয় চরিত্রই যে তাতে পুঁতিগন্ধময় হয়ে উঠবে, কোনো চিন্তাশীল ব্যক্তিই তা অস্বীকার করতে পারবেন না। উক্ত আয়াতের পরবর্তী অংশে আল্লাহ পাক আরো বলেছেন যে, কোনো কল্পিত আশঙ্কাকে অজুহাত হিসাবে দাঁড় করিয়ে এই শুভ পরিণয় থেকে বিরত থাকা অবাঞ্ছনীয়। যা হোক, উক্ত আয়াত থেকে এ কথা পরিষ্কারভাবেই জানা গেলো যে, যে নারী কিংবা পুরুষ বিয়ের যোগ্য হবে, তাকে বিয়ে করাতে হবে। আর বিয়ে করানোর এ দায়িত্ব অর্পিত হবে যুগপৎ অভিভাবক ও রাষ্ট্রের ওপর। এ দুয়ের কেউই এ দায়িত্ব এড়াতে পারবে না। ফিকাহবিদদের দৃষ্টিতে বিয়ে ঃ কোনো কোনো আলিমের মতে, বিয়ে করা ওয়াজিব। অবশ্য তার সপক্ষে হাদীসেরও সমর্থন রয়েছে। ফিকাহবিদগণ লিখেছেন, যৌন তাকীদ যখন সহ্যসীমা অতিক্রম করে যায় এবং শরঈ সীমা ভেঙে ফেলার আশঙ্কা দেখা দেয়, অর্থাৎ উক্ত দুর্ঘটনায় লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রবলতর হয়ে ওঠে, তখন মুমিন লোকের পক্ষে বিয়ে করা ওয়াজিব হয়ে যায়। কিন্তু যৌন তাড়না যদি সীমাতিক্রম না করে, তাহলে সেমতাবস্থায় বিয়ে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। পক্ষান্তরে, স্ত্রীর হক আদায় করতে না পারার ধারণা যদি প্রবলতর হয়, তাহলে সেমতাবস্থায় বিয়ের ফাঁদে নিজকে জড়ানো শরীয়তের দৃষ্টিতে অপছন্দনীয় অর্থাৎ মাকরূহ। বরং স্ত্রীর হক আদায় করতে না পারার ব্যাপারে যে- ব্যক্তি স্থির নিশ্চিত, তার পক্ষে বিয়ে করা হারাম।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

ইসলামের বিয়ের আসল হুকুম হচ্ছে- সুন্নত।

সকল নবী রাসূল বিয়ে করেছেন।

নবী স. বলেন, ‘বিয়ে করা আমার সুন্নত।  যে আমার সুন্নতকে অবহেলা করল সে আমার উম্মত নয়’।

তবে বিয়ে করা কখনো ফরজ হয়ে যায় যদি যেনা ব্যাভিচারের আশঙ্কা থাকে। বর্তমানে আমাদের সমাজের যে পরিস্থিতি তাতে অবিবাহিত থেকে নারী-পুরুষ পবিত্র থাকার কোনো সুযোগ নেই বললেই চলে। অতএব যার শারীরিক এবং আর্থিক সক্ষমতা আছে এবং বিয়ে না করলে বিপদে পড়ার শঙ্কা আছে তার জন্য বিয়ে করা ফরজ। এ সম্পর্কে নবী স. বলেন, ‘হে যুবকেরা, তোমাদের যাদের সক্ষমতা আছে তারা যেন বিয়ে করে। কেননা বিয়ে চোখ ও লজ্জাস্থানকে নিরাপদ রাখে। যার সক্ষমতা নেই সে যেন রোজা রাখে। কেননা রোজা ঢাল স্বরুপ’।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ