আচ্ছা বিক্রিয়া মানে কি দুইটা ভিন্ন মৌল  কে একসাথে মিশিয়ে নতুন পদার্থ তৈরি করা ?  রাসায়ানিক বিক্রিয়া কি এমনে হয় ধরেনঃ একটি পাত্রে হাইড্রোজেন আছে আর অপর পাত্রে অক্সিজেন আছে , এখন দুইটা কে একসাথে করলেই কি রাসায়ানিক বিক্রিয়া হবে ? এবং একসাথে করলেই কি তাদের ভিতর ইলেকট্রন আদান-প্রদান হবে বা বন্ধন গঠন করবে ?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Waruf

Call

দুটি পদার্থ একত্র করলেই বিক্রিয়া হবে কিনা তা নির্ভর করে ঐ পদার্থ গুলোর সক্রিয়তা, স্থিথিশীলতা, তাদের শক্তি শেষ শক্তি স্তরের ইলেক্ট্রনটির আয়নিকরন শক্তি(ইলেক্ট্রনি সরাতে যে শক্তি লাগে) ইত্যাদির উপর। 

আমরা জানি এক এক মৌল এক এক রকম সক্রিয়। এর কারন হছে মৌল গুলো স্থিথিশীলতা অর্জন করতে চাই। এখনো পর্যন্ত যেটা পাওয়া গেছে তা হচ্ছে কোন মৌলের শেষ শক্তি স্তরে যদি ৮ টি ইলেক্ট্রন থাকে তবে এটি সুস্থিত বা স্তিথিশীল কারন এই ৪ জোড়া ইলেক্ট্রন যুগল গঠন করে থাকে। এই পরমানুটির বিক্রিয়া করতে হলে ৮ টি ইলেক্ট্রন আদান প্রদান অথবা শেয়ার করতে হবে। কিন্তু ৮ টি ইলেক্ট্রন ত্যাগ করতে মানে আয়নিক হতে যে শক্তি দরকার তা ঐ মৌল এমনকি বাইরে থেকেও সাধারনভাবে সরবরাহ করা যায়না। ফলে শক্তি না পেয়ে ইলেক্ট্রন গুলোর কোনরুপ পরিবর্তন হয়না বলে এই অবস্থায় সেই মৌল বিক্রিয়া করেনা। একে অষ্টক তত্ত্ব বলে। অপর দিকে এক মাত্র ব্যতিক্রম হচ্ছে হিলিয়াম যার শক্তি স্তরে দুটো ইলেক্ট্রন আছে। কিন্তু এই দুটি ইলেক্ট্রনও সুস্থিত(কারন প্রথম শক্তি স্তরে মাত্র দুটি ইলেক্ট্রনই থাকতে পারে এবং হিলিয়ামের শক্তি স্তর একটাই)। এই কারনে এটিও সুস্থিত। কিন্তু যেহেতু ইলেক্ট্রন মাত্র দুটো তাই বৃহত শক্তি সরবরাহ করতে পারলে এটি বিক্রিয়া করে । যেমন সূর্যে।
যাই হোক  অধিকাংশ মৌলের এই ধরনের অষ্টক পুর্ন নয়, মানে শেষ শক্তি স্তরে ৮ টি ইলেক্ট্রন নাই তাই এগুলো সুস্থিত হতে ৮ টি ইলেক্ট্রন অর্জন করতে চাই । এই কারনে এরা বিক্রিয়া করে।
কৌশলঃ যে মৌলের শেষ স্তরে ইলেক্ট্র বেশি এবং খুব কম সংখ্যাক ইলেক্ট্রন গ্রহন করলে অষ্টক পুর্ন হয় তারা মুলত ইলেক্ট্রন গ্রহন করে এবং প্রায়ই এরা অধাতু যেমন ক্লোরিন এর শেষ স্তরে ৭ টি ইলেক্ট্রন আছে। ক্লোরিন এর পক্ষে ৭ টি ত্যাগ করা সহজ নয় কিন্তু একটি গ্রহন করে ৮টি পুরন করা সহজ তাই ক্লোরিন ১ টি ইলেক্ট্রন গ্রহন করে বন্ধন গঠন করে। মুলত একটি ইলেক্ট্রন গ্রহন করে এরা নেগেটিভ আয়নে পরিনত হয়। যেহেতু নিজ ইলেক্ট্রনের চেয়ে একটি ইলেক্ট্রন বেশি তাই একে নেগেটিভ চার্জিত অবস্থা বলে।
অপর দিকে সোডিয়াম এর শেষ স্তরে মাত্র ১ টি ইলেক্ট্রন থাকে যা ত্যাগ করা খুবই সহজ তাই এটি ১টি ইলেক্ট্রন ত্যাগ করে পজেটিভ আয়ন বা চার্জে পরিনত হয়। এখন সোডিয়াম ও ক্লোরিন একে অপরের ইলেক্ট্রন আদান প্রদান করে চার্জিত হয়েছে বলে তাদের পজেটিভ ও নেগেটিভ চার্জ পরস্পরকে আকর্ষন করে ফলে তারা একসাথে মিলিত হয়ে সোডিয়াম ক্লোরাইড লবন তৈরি করে।
এখন আপনার উদারনটি দেখুনঃ অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন একত্র করলেই বিক্রিয়া হবেনা। কারন অক্সিজের এর শেষ স্তরে দুটি ইলেক্ট্রন আছে। তাই সাধারন পরিবেশ থেকে সাধারন তাপ গ্রহন করে ইলেক্ট্রন দুটি ত্যাগ বা শেয়ার খুব বেশি সহজ নয়। কিন্তু যদি সামান্য একটি বেশি তাপ দেন তবেই অক্সিজেন সেই শক্তিতে ইলেক্ট্রন ত্যাগ বা শেয়ার করতে পারে। ফলে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন একত্র মিশালে বিক্রিয়া হবেনা কিন্তু একত্র রেখে তাতে সামান্য তাপ দিলে সাথে সাথে প্রবল বিক্রিয়া করে পানি তৈরি করবে। এখানে ২টি হাইড্রোজেন পরমানু মিলে দুটি ইলেক্ট্রন এবং একটি অক্সিজেন পরমানু একাই দুটি ইলেক্ট্রন শেয়ার করে। তবে এখানে ইলেক্ট্রন পুরাপুরি আদান প্রদান হয়না আবার শেয়ারের সময় ইলেক্ট্রনের আকর্ষন বল একদিকে কিছুটা বেশি থাকে। একে পোলার বলা হয়। তাই পানি আয়নিক না হলে পুরা সমযোজিও নয়। পোলার যৌগ বলে। 
কাজেই বলা যায় যে এক সাথে করলেই বিক্রিয়া হবেনা। বস্তু গুলোর ইলেক্ট্রন আদান প্রদান ক্ষমতার উপর নির্ভর করে বিক্রিয়া। একে বলা হয় সক্রিয়তা। এর উপর ভিক্তি করে মৌল গুলোকে সিরিজে সাজানো যায় যাকে সক্রিয়তা সিরিজ বলে। এটি ধনাত্মক ও ঋনাত্মক দুই ধরনের কারন ইলেক্ট্রন গ্রহন ক্ষমতা ও বর্জন ক্ষমতা। যেমন k>Na>Ca  .
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ