ভালো লেখক হতে হলে- ১.বেশি বেশি গল্প-উপন্যাস বই পড়তে হবে। ২. প্রতিদিন ডায়েরি লেখার অভ্যাস করা যেতে পারে। তাহলে লেখালেখির প্র্যাকটিস হবে। এতে হাতের লেখাও সুন্দর হবে। ৩. মাঝেমধ্যে ছোটখাটো গল্প লিখে বাবা-মা বা ভাইবোন, বন্ধুদের পড়ে শোনানো যেতে পারে। ৪. গল্প উপন্যাস পড়ার ফাঁকে ফাঁকে মাঝেমধ্যে জোকসও পড়া যেতে পারে। তাহলে সেন্স অব হিউমার ডেভেলপ করবে। লেখালেখিতে মাঝেমধ্যে হিউমার থাকা জরুরি! ৫. জ্বান-বিজ্ঞানের বইও বেশি বেশি পড়া উচিৎ। লেখায় যদি কাহিনির ভালো চরিত্রের মাধ্যমে ইনফরমেশন দেওয়া যায়, তাহলে ভালো। ৬. চোখ কান খোলা রাখা উচিৎ। আমাদের দৈনন্দিন জীবনেই নানান রকম গল্পের প্লট পাওয়া যায়। ৭. সব ধরনের গল্পই লেখার চেষ্টা করতে হবে। ভূত, সাইফাই, রূপকথা, অ্যাডভেঞ্চার ইত্যাদি। ৮. দেশের বা বিদেশের সব লেখকদের অন্তত একটা গল্প পড়ে রাখা ভালো। তাহলে ধারণা হবে বিখ্যাত লেখকরা কে কেমন লেখেন। ৯. মাঝেমধ্যে পত্রপত্রিকায় লেখা পাঠানো যেতে পারে। তিন মাসের মধ্যে ছাপা না হলে আরো ভালো লেখা পাঠাতে হবে। হতাশ হলে চলবে না। কিআ ফেব্রুয়ারি২০১৭ তে লেখক আহসান হাবীব এই টিপসগুলো দিয়েছেন।
ভাল লেখক হবার উপায়: ১. টিভি বন্ধ করে বই নিয়ে বসো। সৃজনশীলতার জন্য টিভি হলো বিষস্বরূপ। টিভি দেখা সময়ের অপচয়। বই পড়ায় ব্যয় করতে হবে বেশি সময়। ব্যাপকভাবে বিস্তৃত বিষয়ে পড়তে হবে, সময় পেলেই পড়তে হবে। বই হবে সর্ব সময়ের সঙ্গী। ২. সমালোচনা ও ব্যর্থতার জন্য প্রস্তুত থাকো। লিখলে লোকজন তা পাঠ করবে এবং কেউ কেউ সমালোচনা করবে। আবার কখনো কখনো লেখা ছাপা হবে না বা কেউ পড়বে না। কিন্তু এসবের জন্য দমে গেলে চলবে না। ৩. অন্যকে সন্তুষ্ট করার জন্য নয়; বরং নিজের দায়িত্ববোধ থেকে লেখো। সত্য বলতে হবে, তা যত তিক্তই হোক। নিজের বিবেক ও প্রজ্ঞাকে কাজে লাগাও। ৪. প্রাথমিকভাবে নিজের জন্য লেখো। লেখাটাকে আনন্দের বিষয় করে নিতে হবে। যা ভালো লাগে, তা-ই নিয়ে লেখো। নিজের ওপর কোনো জিনিস জোর করে চাপিয়ে দেবে না যা থেকে বিরক্তি উৎপন্ন হয়। ৫. কঠিন সমস্যা নিয়ে চিন্তা করো, আড়ালে থাকা বিষয়কে তুলে আনো। জীবন ও সমাজের কোনো জটিল সমস্যার ওপর আলোকপাত করে, যা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। ৬. লেখার সময় সমস্ত জগৎ থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করো। যখন লিখতে বসবে, তখন লেখা ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ের প্রতি মনোযোগ দেবে না। জাগতিক ঝুটঝামেলা থেকে মুক্ত হয়ে একাগ্রচিত্তে লিখতে হবে। ৭. পাণ্ডিত্যের ভান করবে না। অযথা গুরুগম্ভীর শব্দ ও জটিল বাক্য ব্যবহার করে অন্যকে চমকিত করার চেষ্টা কোনো কাজের বিষয় নয়। অকারণে ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে বলার অভ্যাস পরিহার করো। ৮. ক্রিয়াবিশেষণ (যেমন অত্যন্ত অসাধারণভাবে ) কম ব্যবহার করবে এবং অনুচ্ছেদ ছোট রাখবে। অধিক ক্রিয়াবিশেষণ ভ্রান্তি এবং লম্বা অনুচ্ছেদ চোখের জন্য ক্লান্তিকর। ৯. গল্প লেখার সময় কাহিনির দিকে নজর দেবে, ব্যাকরণের দিকে নয়। কাহিনিকে মনোগ্রাহী ও রসমণ্ডিত করার জন্য যে রকম শব্দ যেভাবে ব্যবহার করা প্রয়োজন ঠিক তা-ই করতে হবে। ১০. শৈল্পিক বর্ণনার কৌশল রপ্ত করো। সঠিক শব্দ ও বাক্যে স্পষ্ট ও উজ্জ্বলভাবে বিষয় ও ঘটনার বিবরণ দিতে হবে যাতে তা পাঠকের মনে রেখাপাত করে। প্রয়োজনে ভাষিক অলংকারের আশ্রয় নাও। ১১. গল্পকে বেশি তথ্যবহুল করবে না। গল্পকে তথ্যে ভারী করে ফেললে তা গল্পের মজাকে হরণ করে, পাঠকের মনোরঞ্জনে ব্যর্থ হয়। চরিত্রায়ণ ও ঘটনাবিন্যাস বেশি প্রাধান্য পাবে। ১২. মানুষজন বাস্তবে কী করে তা নিয়েই গল্প ফাঁদো। বাস্তব থেকে গল্পের উপাদান গ্রহণ করো, তাতে কল্পনার রং লাগাও, আখ্যানকে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলো। ১৩. নতুন বিষয় নিয়ে লেখো। পুরোনো বিষয় নিয়ে চর্বিত চর্বণের কোনো অর্থ হয় না। যা মানুষ কখনো ভাবেনি তা নিয়ে লেখো। ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখো ও লিখো। ঝুঁকি নিতে পিছপা হবে না। ১৪. লেখক হওয়ার জন্য মাদকের আশ্রয় নেবে না। মাদকে মাথা খোলে—এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। বরং মাদক গ্রহণে মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়, চিন্তায় পঙ্গুত্ব আসে। ১৫. অন্য কোনো লেখককে হুবহু অনুকরণ করে লিখবে না। নিজের স্টাইল তৈরি করো। নিজের ধ্যানধারণা থেকে নিজের মতো করে লিখো, স্বকীয়তা নিয়ে। ১৬. শব্দ ও বাক্যের মাধ্যমে তোমার ধারণাগুলো পাঠকের মনে সঞ্চারিত করো। লেখার সময় কোন ধরনের পাঠকের জন্য লিখছ, তা মাথায় রাখো, আর তোমার ধারণাগুলো তাদের উপযোগী করে প্রকাশ করো। ১৭. লেখালেখিকে গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করো। লেখাকে করতে হবে ধ্যানজ্ঞান। একমাত্র সাধনা। দায়সারা কাজ অকাম্য। লেখালেখির বিষয়ে যে যত সিরিয়াস, সে তত সফল। ১৮. প্রতিদিন কিছু না কিছু লেখো। বই পড়াকে যেমন, তেমনি লেখালেখিকেও নিত্যকার অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। লিখতে লিখতে লেখায় হাত আসে। ১৯. কোনো কিছু লেখার পর সেটি পুনরায় দেখো। নিজের লেখার প্রথম পাঠক হবে নিজেই। সমালোচকের দৃষ্টি দিয়ে নিজের লেখা ব্যবচ্ছেদ করো। আর এটা করতে হবে নির্দয়ভাবে। ২০. নিজের শরীর ও মনের যত্ন নাও। শরীর সুস্থ থাকলে এবং মনে সুখ থাকলে লেখালেখি সহজ হয়। পারিবারিক জীবনে শান্তি এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সহায়ক। ২১. চেষ্টা করো তিন মাসে একটি বইয়ের খসড়া সম্পন্ন করতে। প্রতিদিন ১০ পৃষ্ঠা করে লিখলে, তিন মাসে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার শব্দ হয়ে যায়। তারপর সেটিকে পরিমার্জন করে প্রকাশের উপযোগী করতে আরও কয়েক মাস লেগে যাবে। বুঝতেই পারছ, লেখক হওয়ার জন্য নিষ্ঠা ও অধ্যবসায় কতটা জরুরি! সূত্র: 10 minute school online
প্রতিদিন আপনাকে একটি টার্গেট রাখতে হবে আমি রোজ ৫০০ শব্দ লিখবো বা ৩০০০+শব্দ। তবে এটি নির্ভর করবে সময় ও আপনার যোগ্যতার উপর। অবশ্যয় প্রতিদিন টার্গেট রাখতে হবে এবং তা অর্জন করতে হবে। প্রথম দিকে লেখার কোয়ালিটি নিয়ে চিন্ততা করবেন না। যতো বেশি লিখবেন ততো বেশি লেখা আপনার জন্য সহজ হবে। ফলে লেখার মান ভালো হবে এবং দ্রুত হবে। নাম করা ভালো ভালো লেখক লেখালেখির প্রথম জীবনে অনেক কষ্ট ভোগ করেছেন।যেমন : শেক্সপিয়ার, চালর্স ডিকেন্স আরো অনেক লেখক। আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আপনার লেখা যদি শুধু আপনার বন্ধু ও আত্মীয় স্বজনই শুধু পড়ে তাহলে লাভ নেই। আপনার লেখাকে পৌঁছে দিতে হবে সর্ব স্তরের পাঠকদের মাঝে। তাহলেই আপনার লেখা স্বার্থক। যখন সবাই পড়বে তখন আপনি স্বার্থক লেখক। তবে এটা এতো সহজ নয়। এর জন্য কঠোর পরিশ্রম ও সাধনা করতে হবে।