হার্টের দুর্বলতার লক্ষন কি এবং কিভাবে প্রতিরোধ করা যাবে একটু জানাবেন
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Jamiar

Call
হার্টের দুর্বলতার লক্ষন হলো:-
১. হার্ট অ্যাটাকের সবচেয়ে কমন একটি লক্ষণ হল বাম বুকের মাঝবরাবর তীব্র ব্যাথা অনুভুত হওয়া। এই ব্যাথা শরীরের পুরো বাম পাশকেই অবশ করে ফেলতে পারে। বিশেষকরে বাম বাহু ও পিঠ এবং দুই সিনার মাঝখানটাকেও আক্রান্ত করতে পারে। এছাড়াও এই ব্যথা চিবুক পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে চোয়ালকেও আক্রান্ত করতে পারে।

২. হার্ট অ্যাটাকের পরপরই শরীর থেকে প্রচুর ঘাম বের হতে থাকবে। সংবেদনশীল স্নায়ুতন্ত্র অতিরিক্ত ক্রিয়াশীল হয়ে পড়ায় এসময় শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে ঘাম ঝরে। এছাড়া বুকে ব্যথা শুরু হওয়ার পরপরই শরীর থেকে বেশ কয়েকটি হরমোন নি:সরিত হয় যা রক্তচাপ ও হার্ট বিট বাড়িয়ে দেয়। এ কারণেও শরীর থেকে প্রচুর ঘাম বের হয়।

৩. আর ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে বুকে তীব্র ব্যথা অনুভুত হওয়ার চেয়েও শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে ঘাম ঝরা, মাথা ঘোরা ও ক্ষণিকের জন্য চেতনাহীন হয়ে পড়াটাই হার্ট অ্যাটাকের সবচেয়ে কমন পূর্বলক্ষণ।

৪. শ্বাসকষ্ট, মাথা ঝিমানো ও জ্ঞান হারানো হার্ট অ্যাটাকের আরও কয়েকটি পূর্বলক্ষণ। করোনারি শিরা-উপশিরায় ব্লক পড়ার ফলে হৃদপিন্ডের মাংসপেশিতে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ লক্ষণগুলো দেখা দেয়।

৫. তলপেটের উপরিভাগে অস্বস্তি এবং হৃদপিন্ডে জালাপোড়াও হৃদরোগের পূর্বলক্ষণ। এই লক্ষণগুলোকে অনেকসময় এসিডিটি ও হৃদপিন্ডের সাধারণ প্রদাহ গণ্য করে ভুল করা হয়।

৬. তীব্র বমির অনুভুতিও হার্ট অ্যাটাকের একটি ছদ্মবেশী পূর্বলক্ষণ। তবে এটাকেও অনেকসময় ভুলবশত গ্যাস্ট্রিক ও বদহজমের কারণে সৃষ্ট সমস্যা হিসেবে গণ্য করা হয়।

৭. হার্ট অ্যাটাকের আরও কয়েকটি পূর্ব লক্ষণ হল- অকারণ অবসাদগ্রস্ততা, বিবর্ণতা, ধড়ফড়ানি ও উদ্বিগ্নতা।

হার্ট অ্যাটাক হলে তাৎক্ষণিকভাবে করনীয়গুলো জেনে নিন।
১. কারও হার্ট অ্যাটাক হলে প্রথমেই জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তার ডেকে আনতে হবে। কারণ অভিজ্ঞ ডাক্তার ছাড়াই কোনও ট্রিটমেন্ট করতে গেলে অনেকসময় রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়তে পারে।

২. হার্ট অ্যাটাকের পরপরই রোগীকে শক্ত জায়গায় হাত-পা ছড়িয়ে শুইয়ে দিন এবং গায়ের জামা-কাপড় ঢিলেঢালা করে দিন। আর সম্ভব হলে জামা-কাপড় খুলে ফেলুন।

৩. বাতাস চলাচলের রাস্তাগুলো সব উম্মুক্ত করে দিন। এরপর রোগীকে গভীরভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সহায়তা করুন।

৪. হার্ট অ্যাটাকের পর হাতের কব্জিতে পালস টেস্ট না করে বরং ঘাড়ের কোনও একপাশে পালস টেস্ট করুন। কারণ নিম্ন রক্তচাপের কারণে হার্ট অ্যাটাকের পর হাতের কব্জিতে পালস নাও ধরা পড়তে পারে।

৫. হার্ট অ্যাটাকের পর যদি রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় তাহলে তাকে কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেন সরবরাহের চেষ্টা করুন।

৬. হার্ট অ্যাটাকের পর রোগীর যদি বমি আসে তাহলে তাকে একদিকে কাত করে দিন। যাতে সে সহজেই বমি করতে পারে। এতে ফুসফুসের মতো অঙ্গে বমি ঢুকে পড়া থেকে রক্ষা পাবেন রোগী।

৭. হৃদপিন্ডে রক্তের সরবরাহ বাড়াতে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত ব্যক্তির দুটো পা-ই উপরের দিকে তুলে ধরুন।

৮. হার্ট অ্যাটাকের পর হৃদপিন্ডে রক্তের সরবরাহ বাড়ানোর জন্য বাজারে প্রচলিত ওষুধও রোগীকে তাৎক্ষণিকভাবে খাইয়ে দিতে পারেন।

৯. হার্ট অ্যাটাকে রোগী যদি অচেতন হয়ে পড়েন তাহলে সিপিআর থেরাপি প্রয়োগ করুন। সম্প্রতি আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন হ্যান্ডস অনলি সিপিআর নামে এই থেরাপির একটি সরলীকৃত ভার্সন ভিডিও আকারে বাজারে ছেড়েছে।
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ