Call

না এক রাকাত বিতর কোন হাদিসে নেই।

নবীজী বিতর তিন রাকাত পড়তেন। এটিই তাঁর অনুসৃত পন্থা। নিম্নের হাদীসসমূহ থেকে বিষয়টি সুপ্রমাণিত।

আবু সালামা ইবনে আব্দুর রহমান থেকে বর্ণিত, তিনি হযরত আয়েশা রা. কে জিজ্ঞাসা করেন যে, রমযানে নবীজীর নামায কেমন হত? তিনি উত্তরে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানে এবং রমযানের বাইরে এগার রাকাতের বেশি পড়তেন না। প্রথমে চার রাকাত পড়তেন, যার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করো না! এরপর আরও চার রাকাত পড়তেন, যার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা তো বলাই বাহুল্য! এরপর তিন রাকাত (বিতর) পড়তেন।-সহীহ বুখারী ১/১৫৪, হাদীস ১১৪৭; সহীহ মুসলিম ১/২৫৪, হাদীস ৭৩৮; সুনানে নাসায়ী ১/২৪৮, হাদীস ১৬৯৭; সুনানে আবু দাউদ ১/১৮৯, হাদীস ১৩৩৫; মুসনাদে আহমদ ৬/৩৬, হাদীস ২৪০৭৩

সা‘দ ইবনে হিশাম রাহ. বলেন, হযরত আয়েশা রা. তাকে বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতরের দুই রাকাতে সালাম ফেরাতেন না। -সুনানে নাসায়ী ১/২৪৮; হাদীস ১৬৯৮; মুয়াত্তা মুহাম্মাদ ১৫১ (বাবুস সালাম ফিল বিতর) মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৪/৪৯৪, হাদীস ৬৯১২; সুনানে দারাকুতনী ২/৩২, হাদীস ১৫৬৫; সুনানে কুবরা বাইহাকী ৩/৩১

এই হাদীসটি ইমাম হাকেম আবু আব্দুল্লাহ রাহ.ও ‘মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন’ কিতাবে বর্ণনা করেছেন। তার আরবী পাঠ এই- كان رسول الله صلى الله عليه وسلم لا يسلم في الركعتين الأوليين من الوتر অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতরের প্রথম দুই রাকাতে সালাম ফেরাতেন না। ইমাম হাকেম (রহ.) তা বর্ণনা করার পর বলেন- هذا حديث صحيح على شرط الشيخين অর্থাৎ হাদীসটি বুখারী ও মুসলিমের শর্ত মোতাবেক সহীহ। ইমাম শামসুদ্দীন যাহাবী রাহ. ‘তালখীসুল মুস্তাদরাক’-এ হাকেম রাহ.-এর সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন। -মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন ১/৩০৪, হাদীস ১১৮০

এই হাদীস দ্বারা একদিকে যেমন প্রমাণিত হয় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাধারণ নিয়মে তিন রাকাত বিতর আদায় করতেন তেমনি একথাও প্রমাণিত হয় যে, তিন রাকাতের দ্বিতীয় রাকাতে তাশাহহুদের জন্য বসতেন, কিন্তু সালাম ফেরাতেন না। সালাম ফেরাতেন সবশেষে তৃতীয় রাকাতে। যদি দ্বিতীয় রাকাতে বৈঠক করার নিয়ম না থাকত তাহলে সালাম করার বা না করার প্রসঙ্গতই আসত না। কেননা সালাম তো ফেরানো হয়ে থাকে।

ইমাম ইবনে হাযম যাহেরী রাহ. ‘মুহাল্লা’ কিতাবে বিতরের বিভিন্ন পদ্ধতির মাঝে আলোচিত পদ্ধতিটিও উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, বিতর তিন রাকাত পড়া হবে। দ্বিতীয় রাকাতে বসবে এবং (তাশাহহুদ পড়ে) সালাম ফেরানো ছাড়াই দাঁড়িয়ে যাবে। তৃতীয় রাকাত পড়ে বসবে, তাশাহহুদ পড়বে এবং সালাম ফেরাবে, যেভাবে মাগরিবের নামায পড়া হয়। এটিই ইমান আবু হানীফা রাহ.-এর মত। এর দলিল হচ্ছে, সাদ ইবনে হিশাম রাহ.-এর সূত্রে বর্ণিত হাদীস, যাতে উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রা. বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতরের দুই রাকাতে সালাম ফেরাতেন না। -মুহাল্লা ইবনে হাযম ২/৮৯

সাদ ইবনে হিশাম রাহ.-এর রেওয়ায়াতটি আরও একটি সনদে বর্ণিত হয়েছে, যার আরবী পাঠ নিম্নরূপ- كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يوتر بثلاث لا يسلم إلا في آخرهن অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন রাকাত বিতর পড়তেন এবং শুধু সর্বশেষ রাকাতে সালাম ফেরাতেন। হাকেম রাহ. এই রেওয়ায়াতের পর লেখেন, আমীরুল মুমিনীন হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রা.ও এভাবে বিতর পড়তেন এবং তাঁর সূত্রে মদীনাবাসীগণ তা গ্রহণ করেছেন। -মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন ১/৩০৪, হাদীস ১১৮১

(৩) আব্দুল্লাহ ইবনে আবী কাইস বলেন- قلت لعائشة : بكم كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يوتر؟ قالت: كان يوتر بأربع وثلاث, وست وثلاث, وثمان وثلاث, وعشر وثلاث, ولم يكن يوتر بأنقص من سبع, ولا بأكثر من ثلاث عشرة. অর্থাৎ আমি হযরত আয়েশা রা.-এর কাছে জিজ্ঞাসা করলাম যে, নবীজী বিতরে কত রাকাত পড়তেন? উত্তরে তিনি বলেন, চার এবং তিন, ছয় এবং তিন, আট এবং তিন, দশ এবং তিন। তিনি বিতরে সাত রাকাতের কম এবং তের রাকাতের অধিক পড়তেন না। -সুনানে আবু দাউদ ১/১৯৩, হাদীস ১৩৫৭ (১৩৬২); তহাবী শরীফ ১/১৩৯; মুসনাদে আহমদ ৬/১৪৯, হাদীস ২৫১৫৯

চিন্তা করে দেখুন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাজ্জুদ নামায কখনো চার রাকাত, কখনো ছয় রাকাত, কখনো আট রাকাত, কখনো দশ রাকাত পড়তেন; কিন্তু মূল বিতর সর্বদা তিন রাকাতই হত।

ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রাহ. ফাতহুল বারী ৩/২৬ باب كيف صلاة الليل, كتاب التهجد)- এ লেখেন- هذا أصح ما وقفت عليه من ذلك, وبه يجمع بين ما اختلف عن عائشة في ذلك. والله أعلم আমার জানামতে এটি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সর্বাধিক সহীহ রেওয়ায়াত। এ বিষয়ে হযরত আয়েশা রা. বর্ণিত হাদীসের বর্ণনাকারীদের মাঝে যে বিভিন্নতা পরিলক্ষিত হয় এর দ্বারা সে সবের মাঝে সমন্বয় করা সম্ভব।

(৪) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তাহাজ্জুদ ও বিতর প্রত্যক্ষ করার জন্য হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. এক রাতে তাঁর খালা উম্মুল মুমিনীন হযরত মাইমূনা রা.-এর ঘরে অবস্থান করেন। তিনি যা যা প্রত্যক্ষ করেছেন বর্ণনা করেছেন। তাঁর শাগরেদরা সে বিবরণ বিভিন্ন শব্দে বর্ণনা করেছেন। আমি এখানে সুনানে নাসায়ী ও অন্যান্য হাদীসের কিতাব থেকে একটি রেওয়ায়াত উদ্ধৃত করছি- ‘মুহাম্মাদ ইবনে আলী তার পিতা থেকে, তিনি তার পিতা আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে শযা্য থেকে উঠলেন, এরপর মেসওয়াক করলেন, এরপর দুই রাকাত পড়লেন, এরপর শুয়ে গেলেন। তারপর পুনরায় শয্যা ত্যাগ করলেন, মেসওয়াক করলেন, অযু করলেন এবং দুই রাকাত পড়লেন; এভাবে ছয় রাকাত পূর্ণ করলেন। এরপর তিন রাকাত বিতর পড়লেন। এরপর দুই রাকাত পড়েন। 

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

এক রাকাত বিতর পড়া যাবে,হাদিস্ টি দেখুন,,,

বইঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ১৪/ বিতর সালাত (كتاب الوتر), হাদিস নম্বরঃ ৯৪১

باب سَاعَاتِ الْوِتْرِ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ أَوْصَانِي النَّبِيُّ صَلَّى

 اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْوِتْرِ قَبْلَ

 النَّوْمِ حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، 

قَالَ حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ سِيرِينَ، قَالَ قُلْتُ لاِبْنِ عُمَرَ أَرَأَيْتَ 

الرَّكْعَتَيْنِ قَبْلَ صَلاَةِ الْغَدَاةِ أُطِيلُ فِيهِمَا الْقِرَاءَةَ 

فَقَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي

 مِنَ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى، وَيُوتِرُ بِرَكْعَةٍ وَيُصَلِّي الرَّكْعَتَيْنِ

 قَبْلَ صَلاَةِ الْغَدَاةِ وَكَأَنَّ الأَذَانَ بِأُذُنَيْهِ‏.‏ قَالَ حَمَّادٌ أَىْ سُرْعَةً‏.‏

৯৪১। আবূ নুমান (রহঃ) ‍... আনাস ইবনু সীরীন (রহঃ) 

খেকে বর্নিত, তিনি বলেন, আমি ইবনু উমার (রাঃ) 

কে বললাম, ফজরের পূর্বের দু’রাকাতে আমি কিরায়াত 

দীর্ঘ করব কি না, এ সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? 

তিনি বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম

 দু’দু’রাকাত করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায়

 করতেন এবং এক রাকাতে মিলিয়ে বিতর পড়তেন। 

এরপর ফজরের সালাত (নামায/নামাজ)-এর পূর্বে তিনি দু’রাকাত এমন সময় আদায় করতেন যেন একামতের 

শব্দ তার কানে আসছে। রাবী হাম্মদ (রহঃ) বলেন,

 অর্থ্যাৎ দ্রুততার সাথে। (সংক্ষিপ্ত কিরআতে)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

১. আবু সালামা ইবনে আবদুর রহমান উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. কে জিজ্ঞাসা করেন, ‘রমযানুল মুবারকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নামায কীরূপ হত?’ উম্মুল মুমিনীন বলেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানে ও রমযানের বাইরে এগারো রাকাতের বেশি পড়তেন না। প্রথমে চার রাকাত পড়তেন-এত সুন্দর ও দীর্ঘ সে নামায, যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। অতঃপর চার রাকাত পড়তেন-এরও দীর্ঘতা ও সৌন্দর্য সম্পর্কে জানতে চেয়ো না। এরপর তিন রাকাত পড়তেন।’ ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺳﻠﻤﺔ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺃﻧﻪ ﺳﺄﻝ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ﻛﻴﻒ ﻛﺎﻥ ﺻﻼﺓ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﻲ ﺭﻣﻀﺎﻥ؟ ﻗﺎﻟﺖ ﻣﺎ ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﺰﻳﺪ ﻓﻲ ﺭﻣﻀﺎﻥ ﻭﻻ ﻓﻲ ﻏﻴﺮﻩ ﻋﻠﻰ ﺇﺣﺪﻯ ﻋﺸﺮﺓ ﺭﻛﻌﺔ ، ﻳﺼﻠﻲ ﺃﺭﺑﻌﺎ ﻓﻼ ﺗﺴﺄﻝ ﻋﻦ ﺣﺴﻨﻬﻦ ﻭﻃﻮﻟﻬﻦ ، ﺛﻢ ﻳﺼﻠﻲ ﺃﺭﺑﻌﺎ ﻓﻼ ﺗﺴﺄﻝ ﻋﻦ ﺣﺴﻨﻬﻦ ﻭﻃﻮﻟﻬﻦ ﺛﻢ ﻳﺼﻠﻲ ﺛﻼﺛﺎ . (সহীহ বুখারী ১/১৫৪; সহীহ মুসলিম ১/২৫৪; সুনানে নাসায়ী ১/২৪৮; সুনানে আবু দাউদ ১/১৮৯; মুসনাদে আহমদ ৬/৩৬) ২. সা’দ ইবনে হিশাম বলেন, (উম্মুল মুমিনীন) আয়েশা রা. বলেছেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতরের দুই রাকাতে সালাম ফেরাতেন না।’ ﻋﻦ ﺳﻌﺪ ﺑﻦ ﻫﺸﺎﻡ ﺃﻥ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺣﺪﺛﺘﻪ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻛﺎﻥ ﻻ ﻳﺴﻠﻢ ﻓﻲ ﺭﻛﻌﺘﻲ ﺍﻟﻮﺗﺮ . (সুনানে নাসায়ী ১/২৪৮; মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মাদ পৃ. ১৫১) ৩. ইমাম হাকেম রাহ. সা’দ ইবনে হিশামের বিবরণ এভাবে বর্ণনা করেছেন- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতরের প্রথম দুই রাকাতে সালাম ফেরাতেন না।’ ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻻ ﻳﺴﻠﻢ ﻓﻲ ﺍﻟﺮﻛﻌﺘﻴﻦ ﺍﻷﻭﻟﻴﻴﻦ ﻣﻦ ﺍﻟﻮﺗﺮ . ﻫﺬﺍ ﺣﺪﻳﺚ ﺻﺤﻴﺢ ﻋﻠﻰ ﺷﺮﻁ ﺍﻟﺸﻴﺨﻴﻦ ﻭﻟﻢ ﻳﺨﺮﺟﺎﻩ (আলমুস্তাদরাক ১/৩০৪) ৪. অন্য সনদে বিবরণটি এভাবেও বর্ণিত হয়েছে, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতর নামায তিন রাকাত পড়তেন এবং শুধু শেষ রাকাতে সালাম ফেরাতেন। আমীরুল মু’মিনীন উমর রা. এই নিয়মে বিতর পড়তেন এবং তাঁরই সূত্রে আহ্লে মদীনা এই নিয়ম গ্রহণ করেছে।’ ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻮﺗﺮ ﺑﺜﻼﺙ ، ﻻ ﻳﺴﻠﻢ ﺇﻻ ﻓﻲ ﺁﺧﺮﻫﻦ . ﻭﻫﺬﺍ ﻭﺗﺮ ﺃﻣﻴﺮ ﺍﻟﻤﺆﻣﻨﻴﻦ ﻋﻤﺮ ﺑﻦ ﺍﻟﺨﻄﺎﺏ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ، ﻭﻋﻨﻪ ﺃﺧﺬﻩ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﻤﺪﻳﻨﺔ . (আলমুস্তাদরাক) ৫. মুসনাদে আহমদ কিতাবে (৬/১৫৬) বিবরণটি এভাবে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইশার নামায আদায় করে ঘরে আসতেন এবং দুই রাকাত নামায পড়তেন। এরপর আরো দুই রাকাত পড়তেন, যা পূর্বের নামাযের চেয়ে দীর্ঘ হত। অতঃপর তিন রাকাত পড়তেন, যা মাঝখানে আলাদা করতেন না। এরপর বসে বসে দুই রাকাত নামায পড়তেন। রুকু-সেজদাও সেভাবেই করতেন। ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺇﺫﺍ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻌﺸﺎﺀ ﺩﺧﻞ ﺍﻟﻤﻨﺰﻝ ﺛﻢ ﺻﻠﻰ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ . ﺛﻢ ﺻﻠﻰ ﺑﻌﺪﻫﻤﺎ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ ﺃﻃﻮﻝ ﻣﻨﻬﻤﺎ ، ﺛﻢ ﺃﻭﺗﺮ ﺑﺜﻼﺙ ، ﻻ ﻳﻔﺼﻞ ﺑﻴﻨﻬﻦ ﺛﻢ ﺻﻠﻰ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ ﻭﻫﻮ ﺟﺎﻟﺲ ، ﻳﺮﻛﻊ ﻭﻫﻮ ﺟﺎﻟﺲ ﻭﻳﺴﺠﺪ ﻭﻫﻮ ﺟﺎﻟﺲ . ৬. আবদুল্লাহ ইবনে আবু কায়স বলেন, আমি (উম্মুল মু’মিনীন) আয়েশা রা.কে জিজ্ঞাসা করলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কত রাকাত বিতর (আদায়) করতেন? উম্মুল মু’মিনীন বললেন, ‘চার ও তিন রাকাত, ছয় ও তিন রাকাত এবং আট ও তিন রাকাত। তিনি তেরো রাকাতের অধিক এবং সাত রাকাতের কম বিতর করতেন না।’ ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﻗﻴﺲ ﻗﺎﻝ ﺳﺄﻟﺖ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ﺑﻜﻢ ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻮﺗﺮ ﻗﺎﻟﺖ : ﺑﺄﺭﺑﻊ ﻭﺛﻼﺙ ، ﻭﺳﺖ ﻭﺛﻼﺙ ، ﻭﺛﻤﺎﻥ ﻭﺛﻼﺙ ﻭﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﻳﻮﺗﺮ ﺑﺄﻛﺜﺮ ﻣﻦ ﺛﻼﺙ ﻋﺸﺮﺓ ﻭﻻ ﺃﻧﻘﺺ ﻣﻦ ﺳﺒﻊ . (সুনানে আবু দাউদ ১/১৯৩; শরহু মাআনিল আছার তহাবী ১/১৩৯) উপরোক্ত হাদীসে তাহাজ্জুদ ও বিতরকে একত্রে ‘বিতর’ বলা হয়েছে। এতে মূল বিতর তিন রাকাত, বাকীগুলো তাহাজ্জুদ। ৭. আবদুল আযীয ইবনে জুরাইজ বলেন, ‘আমি (উম্মুল মু’মিনীন) আয়েশা সিদ্দীকা রা.কে জিজ্ঞাস করেছি, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতর নামাযে কী কী সূরা পাঠ করতেন? উম্মুল মু’মিনীন বলেছেন, তিনি প্রথম রাকাতে সূরা আ’লা, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কাফিরুন এবং তৃতীয় রাকাতে সূরা ইখলাছ ও ‘মুআওয়াযাতাইন’ (ফালাক ও নাস) পাঠ করতেন।’ ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻌﺰﻳﺰ ﺑﻦ ﺟﺮﻳﺞ ﻗﺎﻝ ﺳﺄﻟﺖ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ﺑﺄﻱ ﺷﻲﺀ ﻛﺎﻥ ﻳﻮﺗﺮ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ؟ ﻗﺎﻝ ﻳﻘﺮﺃ ﻓﻲ ﺍﻷﻭﻟﻰ ﺑﺴﺒﺢ ﺍﺳﻢ ﺭﺑﻚ ﺍﻷﻋﻠﻰ ، ﻭﻓﻲ ﺍﻟﺜﺎﻧﻴﺔ ﺑﻘﻞ ﻳﺎ ﺍﻳﻬﺎ ﺍﻟﻜﺎﻓﺮﻭﻥ ﻭﻓﻲ ﺍﻟﺜﺎﻟﺜﺔ ﺑﻘﻞ ﻫﻮ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﺣﺪ ﻭﺍﻟﻤﻌﻮﺫﺗﻴﻦ . ﻗﺎﻝ ﺃﺑﻮ ﻋﻴﺴﻰ ﻫﺬﺍ ﺣﺪﻳﺚ ﺣﺴﻦ ﻏﺮﻳﺐ . (সুনানে আবু দাউদ ১/২০১; সুনানে তিরমিযী পৃ. ৬১; সুনানে ইবনে মাজাহ পৃ. ৭৩; মুসনাদে আহমদ ৬/২২৭; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৮. ‘আমরা বিনতে আবদুর রহমান উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা রা. থেকে বর্ণনা করেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতর নামায তিন রাকাত পড়তেন। প্রথম রাকাতে সূরা আ’লা, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কাফিরুন এবং তৃতীয় রাকাতে সূরা ইখলাছ, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করতেন।’ ﻋﻦ ﻋﻤﺮﺓ ﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻛﺎﻥ ﻳﻮﺗﺮ ﺑﺜﻼﺙ . ﻳﻘﺮﺃ ﻓﻲ ﺍﻟﺮﻛﻌﺔ ﺍﻷﻭﻟﻰ ﺑﺴﺒﺢ ﺍﺳﻢ ﺭﺑﻚ ﺍﻷﻋﻠﻰ ، ﻭﻓﻲ ﺍﻟﺜﺎﻧﻴﺔ ﻗﻞ ﻳﺎ ﺍﻳﻬﺎ ﺍﻟﻜﺎﻓﺮﻭﻥ ﻭﻓﻲ ﺍﻟﺜﺎﻟﺜﺔ ﻗﻞ ﻫﻮ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﺣﺪ ﻭﻗﻞ ﺍﻋﻮﺫ ﺑﺮﺏ ﺍﻟﻔﻠﻖ ﻭﻗﻞ ﺍﻋﻮﺫ ﺑﺮﺏ ﺍﻟﻨﺎﺱ . ﻫﺬﺍ ﺣﺪﻳﺚ ﺻﺤﻴﺢ ﻋﻠﻰ ﺷﺮﻁ ﺍﻟﺸﻴﺨﻴﻦ ﻭﻟﻢ ﻳﺨﺮﺟﺎﻩ . ﻭﻗﺎﻝ ﺍﻟﺬﻫﺒﻲ ﺭﻭﺍﻩ ﺛﻘﺎﺕ ﻋﻨﻪ ، ﻭﻫﻮ ﻋﻠﻰ ﺷﺮﻁ ﺥ ـ ﻡ . (আলমুসতাদরাক ১/৩০৫) ৯. মুহাম্মাদ ইবনে আলী ইবনে আবদুল্লাহ তাঁর পিতা আলী ইবনে আবদুল্লাহ থেকে, তিনি তাঁর পিতা আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণনা করেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শয্যাত্যাগ করলেন, অতঃপর মিসওয়াক করলেন এবং দুই রাকাত করে ছয় রাকাত নামায আদায় করে শয্যাগ্রহণ করলেন। কিছুক্ষণ পর পুনরায় শয্যাত্যাগ করলেন, মিসওয়াক করলেন এবং দুই রাকাত করে ছয় রাকাত আদায় করলেন। এরপর তিন রাকাত বিতর পড়লেন। এরপর আরো দুই রাকাত (অর্থাৎ ফজরের সুন্নত) আদায় করলেন।’ ﻋﻦ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﻋﻠﻲ ﻋﻦ ﺃﺑﻴﻪ ﻋﻦ ﺟﺪﻩ ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺃﻧﻪ ﻗﺎﻡ ﻣﻦ ﺍﻟﻠﻴﻞ ﻓﺎﺳﺘﻦ ﺛﻢ ﺻﻠﻰ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ ﺛﻢ ﻧﺎﻡ ﺛﻢ ﻗﺎﻡ ﻓﺎﺳﺘﻦ ﺛﻢ ﺗﻮﺿﺄ ﻓﺼﻠﻰ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ ﺣﺘﻰ ﺻﻠﻰ ﺳﺘﺎ ﺛﻢ ﺃﻭﺗﺮ ﺑﺜﻼﺙ ﻭﺻﻠﻰ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ . (সুনানে নাসায়ী ১/২৪৯) ১০. ইয়াহইয়া ইবনুল জাযযার রাহ. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণনা করেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে আট রাকাত নামায পড়তেন এবং তিন রাকাত বিতর পড়তেন। অতঃপর ফজরের নামাযের পূর্বে দুই রাকাত নামায পড়তেন।’ ﻋﻦ ﻳﺤﻲ ﺑﻦ ﺍﻟﺠﺰﺍﺭ ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗﺎﻝ ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﺼﻠﻲ ﻣﻦ ﺍﻟﻠﻴﻞ ﺛﻤﺎﻥ ﺭﻛﻌﺎﺕ ﻭﻳﻮﺗﺮ ﺑﺜﻼﺙ ﻭﻳﺼﻠﻲ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ ﻗﺒﻞ ﺻﻼﺓ ﺍﻟﻔﺠﺮ . (সুনানে নাসায়ী ১/২৪৯; শরহু মাআনিল আছার তহাবী ১/১৪০) ১১. সায়ীদ ইবনে জুবাইর রাহ. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণনা করেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতর নামায তিন রাকাত পড়তেন, প্রথম রাকাতে সূরা আ’লা, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কাফিরুন এবং তৃতীয় রাকাতে সূরা ইখলাছ পড়তেন।’ ﻋﻦ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﺟﺒﻴﺮ ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗﺎﻝ ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻮﺗﺮ ﺑﺜﻼﺙ ﻳﻘﺮﺃ ﻓﻲ ﺍﻷﻭﻟﻰ ﺳﺒﺢ ﺍﺳﻢ ﺭﺑﻚ ﺍﻷﻋﻠﻰ ﻭﻓﻲ ﺍﻟﺜﺎﻧﻴﺔ ﻗﻞ ﻳﺎ ﺍﻳﻬﺎ ﺍﻟﻜﺎﻓﺮﻭﻥ ﻭﻓﻲ ﺍﻟﺜﺎﻟﺜﺔ ﻗﻞ ﻫﻮ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﺣﺪ . (সুনানে দারেমী ১/৩১১, হাদীস : ১৫৯৭; সুনানে তিরমিযী ১/৬১; সুনানে নাসায়ী ১/২৪৯; সুনানে ইবনে মাজাহ পৃ. ৮৩; শরহু মাআনিল আছার তহাবী ১/১৪০; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ১/২৯৯; আল-মুহাল্লা, ইবনে হায্ম ২/৫১) ইমাম নববী ‘খুলাসা’ কিতাবে বলেন, ﺑﺈﺳﻨﺎﺩ ﺻﺤﻴﺢ অর্থাৎ হাদীসটি সহীহ সনদে বর্ণিত। (নাসবুর রায়া ২/১১৯) হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রা. ও হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. ছাড়াও বিতরের তিন রাকাতে তিন সূরা পাঠের হাদীস যাঁরা বর্ণনা করেছেন তারা হলেন : ১. হযরত আবদুর রহমান ইবনে আবযা রা.। (নাসায়ী ১/২৫১; তহাবী ১/১৪৩; ইবনে আবী শায়বা ২/২৯৮; আবদুর রাযযাক ২/৩৩) ২. হযরত উবাই ইবনে কা’ব রা.। (নাসায়ী ১/২৪৮; ইবনে আবী শায়বা ২/৩০০) ৩. হযরত আলী ইবনে আবী তালিব রা.। (তিরমিযী ১/৬১; আবদুর রাযযাক ৩/৩৪; তহাবী ১/১৪২) ৪. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আবু আওফা রা.। (মাজমাউয যাওয়াইদ ৪/২৪১) ৫. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.। (মাজমাউয যাওয়াইদ ৪/২৪১) ৬. হযরত নু’মান ইবনে বাশীর রা.। (মাজমাউয যাওয়াইদ ৪/২৪১) ৭. হযরত আবু হুরায়রা রা.। (মাজমাউয যাওয়াইদ ৪/২৪১) ৮. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.। (মাজমাউয যাওয়াইদ ৪/২৪১) ৯. হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন রান.। (তহাবী ১/১৪২; ইবনে আবী শায়বা ২/২৯৮; মাজমাউয যাওয়াইদ ২/২৪১; কানযুল উম্মাল ১/১৯৬) ১০. আবু খাইছামা রা. তাঁর পিতা হযরত মুয়াবিয়া ইবনে খাদীজ রা. থেকে। (মাজমাউয যাওয়াইদ ২/২৪১) ১১. আমির ইবনে শারাহীল শা’বী রাহ. বলেন,‘আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রাতের নামায সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. ও আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.কে জিজ্ঞাসা করেছি। তারা বলেছেন, ‘তেরো রাকাত নামায পড়তেন। আট রাকাত তাহাজ্জুদ ও তিন রাকাত বিতর। অতঃপর সোবহে সাদেক হওয়ার পর আরো দুই রাকাত পড়তেন।’ ﻋﻦ ﻋﺎﻣﺮ ﺍﻟﺸﻌﺒﻲ ﻗﺎﻝ ﺳﺄﻟﺖ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﻭﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻛﻴﻒ ﻛﺎﻥ ﺻﻼﺓ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍ ﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺑﺎﻟﻠﻴﻞ ﻓﻘﺎﻻ ﺛﻼﺙ ﻋﺸﺮﺓ ﺭﻛﻌﺔ ، ﺛﻤﺎﻥ ﻭﻳﻮﺗﺮ ﺑﺜﻼﺙ ، ﻭﺭﻛﻌﺘﻴﻦ ﺑﻌﺪ ﺍﻟﻔﺠﺮ . (তহাবী ১/১৩৬) ১২. ছাবিত আল বুনানী রাহ. বলেন, হযরত আনাস ইবনে মালিক রা. আমাকে বললেন, ‘হে ছাবিত! আমার নিকট থেকে (দ্বীনের আহকাম) গ্রহণ কর। কারণ (এ বিষয়ে এখন) আমার চেয়ে অধিক নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি তুমি আর পাবে না। আমি (দ্বীন) গ্রহণ করেছি স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট থেকে। তিনি জিব্রীল আ.-এর নিকট থেকে। আর জিব্রীল আ. গ্রহণ করেছেন আল্লাহ তাআলার নিকট থেকে।’ এরপর আনাস রা. আমাকে নিয়ে ইশার নামায আদায় করলেন। অতঃপর ছয় রাকাত নামায এভাবে পড়লেন যে, প্রতি দু রাকাতে সালাম ফেরাতেন। শেষে তিন রাকাত বিতর পড়লেন ও সর্বশেষ রাকাতে সালাম ফেরালেন। ﻋﻦ ﺛﺎﺑﺖ ﺍﻟﺒﻨﺎﻧﻲ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﻟﻲ ﺃﻧﺲ ﺑﻦ ﻣﺎﻟﻚ ﻳﺎ ﺛﺎﺑﺖ ﺍﺧﺬ ﻋﻨﻲ ، ﻓﺈﻧﻚ ﻟﻦ ﺗﺄﺧﺬ ﻋﻦ ﺃﺣﺪ ﺃﻭﺛﻖ ﻣﻨﻲ ، ﺇﻧﻲ ﺃﺧﺬﺗﻪ ﻋﻦ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻭﺃﺧﺬﻩ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻋﻦ ﺟﺒﺮﻳﻞ ﻭﺃﺧﺬ ﺟﺒﺮﻳﻞ ﻋﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﺰ ﻭﺟﻞ ، ﻗﺎﻝ : ﺛﻢ ﺻﻠﻰ ﺑﻲ ﺍﻟﻌﺸﺎﺀ ﺛﻢ ﺻﻠﻰ ﺳﺖ ﺭﻛﻌﺎﺕ ﻳﺴﻠﻢ ﺑﻴﻦ ﻛﻞ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ ﺛﻢ ﻳﻮﺗﺮ ﺑﺜﻼﺙ ، ﻳﺴﻠﻢ ﻓﻲ ﺁﺧﺮﻫﻦ . ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺮﻭﻳﺎﻧﻲ ﻭﺍﺑﻦ ﻋﺴﺎﻛﺮ ﻭﺭﺟﺎﻟﻪ ﺛﻘﺎﺕ . (কানযুল উম্মাল ৪/১৯৬) ১৩. ইমাম আবু হানীফা রাহ. ইমাম আবু জা’ফর বাকির রাহ. থেকে বর্ণনা করেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইশা ও ফজরের মাঝে তেরো রাকাত নামায পড়তেন। আট রাকাত নফল, তিন রাকাত বিতর এবং দুই রাকাত ফজরের সুন্নত। ﺃﺧﺒﺮﻧﺎ ﺃﺑﻮ ﺣﻨﻴﻔﺔ ، ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺃﺑﻮ ﺟﻌﻔﺮ ﻗﺎﻝ ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﺼﻠﻲ ﻣﺎ ﺑﻴﻦ ﺻﻼﺓ ﺍﻟﻌﺸﺎﺀ ﺇﻟﻰ ﺻﻼﺓ ﺍﻟﺼﺒﺢ ﺛﻼﺙ ﻋﺸﺮﺓ ﺭﻛﻌﺔ ﺛﻤﺎﻥ ﺭﻛﻌﺎﺕ ﺗﻄﻮﻋﺎ ، ﻭﺛﻼﺙ ﺭﻛﻌﺎﺕ ﺍﻟﻮﺗﺮ ﻭﺭﻛﻌﺘﻲ ﺍﻟﻔﺠﺮ . (মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মাদ পৃ. ১৪৯) এই হাদীসগুলো থেকে কয়েকটি বিষয় প্রমাণ হয়। যথা : ক. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতর নামায তিন রাকাত পড়তেন। খ. তিন রাকাত এক সালামে আদায় করতেন। গ. বিশেষ কয়েকটি সূরা তেলাওয়াত করতেন। এ পর্যন্ত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতর নামায কীভাবে আদায় করতেন সে বিবরণ দেওয়া হয়েছে। এবার তাঁর কিছু বাণী উল্লেখ করছি। হাদীসের আলোকে বিতর ৩ রাকাত ১. হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘বিতর নামায শুধু তিন রাকাত পড়ো না;বরং পাঁচ রাকাত বা সাত রাকাত পড়। একে মাগরিবের নামাযের মতো বানিয়ে ফেলো না।’ ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : ﻻ ﺗﻮﺗﺮﻭﺍ ﺑﺜﻼﺙ ﻭﺃﻭﺗﺮﻭﺍ ﺑﺨﻤﺲ ﺃﻭ ﺳﺒﻊ ، ﻭﻻ ﺗﺸﺒﻬﻮﺍ ﺑﺼﻼﺓ ﺍﻟﻤﻐﺮﺏ . ﻭﻗﺎﻝ ﺭﺟﺎﻟﻪ ﺛﻘﺎﺕ (তহাবী ১/১৪৩; দারাকুতনী পৃ. ১৭১; ﺻﺤﻴﺢ ﻋﻠﻰ ﺷﺮﻁ ﺍﻟﺸﻴﺨﻴﻦ হাকিম ১/৩০৪) ২. আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মাগরিব হল দিবসের বিতর। অতএব তোমরা রাতের নামাযকেও বিতর (বেজোড়) কর। ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﺻﻼﺓ ﺍﻟﻤﻐﺮﺏ ﻭﺗﺮ ﺍﻟﻨﻬﺎﺭ ﻓﺄﻭﺗﺮﻭﺍ ﺻﻼﺓ ﺍﻟﻠﻴﻞ . (মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৩/২৮) মুসনাদে আহমদে রেওয়ায়েতটি এভাবে আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘মাগরিবের নামায দিবসের নামাযকে বিতর (বেজোড়) করেছে। অতএব রাতের নামাযকেও বিতর (বেজোড়) কর। ﻭﻷﺣﻤﺪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﺻﻼﺓ ﺍﻟﻤﻐﺮﺏ ﺃﻭﺗﺮﺕ ﺻﻼﺓ ﺍﻟﻨﻬﺎﺭ ﻓﺄﻭﺗﺮﻭﺍ ﺻﻼﺓ ﺍﻟﻠﻴﻞ . ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻌﺮﺍﻗﻲ : ﺳﻨﺪﻩ ﺣﺴﻦ . (যুরকানী শরহুল মুয়াত্তা ১/২৫৯; ইলাউস সুনান ৬/১১) ৩. উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘মাগরিব যেমন তিন রাকাত তেমনি বিতরও তিন রাকাত।’ ﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ﻗﺎﻟﺖ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺍﻟﻮﺗﺮ ﺛﻼﺙ ﻛﺜﻼﺙ ﺍﻟﻤﻐﺮﺏ . (মাজমাউয যাওয়াইদ ২/২৪২) ৪. আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, দিবসের বিতর অর্থাৎ মাগরিব যেমন তিন রাকাত তেমনি রাতের বিতরও তিন রাকাত।’ ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻣﺴﻌﻮﺩ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍ ﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻭﺗﺮ ﺍﻟﻠﻴﻞ ﺛﻼﺙ ﻛﻮﺗﺮ ﺍﻟﻨﻬﺎﺭ ﺻﻼﺓ ﺍﻟﻤﻐﺮﺏ . (দারাকুতনী, নাসবুর রায়া ২/১১৯)

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ