কিভাবে আমি আমার হার্ট সুস্থ রাখতে পারি। এর জন্য কোন ধরণের ব্যায়াম করব? এবং কোন ধরণের খাবার গ্রহণ করা উচিত? দয়া করে জানাবেন।
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Yakub Ali

Call

 জেনে নিন হৃদযন্ত্র ঠিক রাখার ৮টি উপায় ও খাবারের তালিকা।১. নিয়মিত ব্যায়াম : শরীর তরতাজা রাখতে নিয়মিত ব্যায়ামের কোনো বিকল্প নেই। প্রতিদিন কমপক্ষে আধাঘণ্টার ব্যয়াম আপনার হৃদপিণ্ডকে রাখবে সুস্থ। প্রতিদিন হাটতে হবে।

২. পরিমিত লবণ : খাবারে মাত্রাতিরিক্ত লবণ শরীরে রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। যা হার্টের সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায় কয়েকগুণ। তাই রান্নায় লবণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে। মনে রাখতে হবে দৈনিক ছয় গ্রামের বেশি লবণ কিছুতেই নয়।

৩. ধূমপান থেকে বিরত: বলা হয়ে থাকে ধূমপানে বিষপান। কেননা এই অভ্যাসটি হার্টের সমস্যার মতো ভয়াবহ অসুখের দিকে ঠেলে দেবে আপনাকে।

৪. পানে সংযমী হোন : অতিরিক্ত অ্যালকোহল শুধু রক্তচাপ নয় কলেস্টেরলের মাত্রাও বাড়িয়ে দেয়। তাই পানের আয়েশি অভ্যাস ছেড়ে সংযমী হোন।

৫. নিয়ন্ত্রিত ওজন : আপনার শরীরের মাত্রারিক্ত ওজন হৃদয় বহন করতে পারবে না। তাই ওজন কমান। ওজন নিয়ন্ত্রণে আনুন। হার্টের সমস্যার সঙ্গে অন্য অনেক শারীরিক জটিলতাও পালাবে।

৬. তাজা ফল রাখুন খাবারের তালিকায় : তাজা ফলমূলে থাকে প্রচুর আঁশ, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। পাশাপাশি স্বল্প মাত্রায় ক্যালরি থাকার কারণে তা আমাদের হৃদযন্ত্রকে সতেজ ও সবল রাখে।

৭. জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলুন : জাঙ্ক ফুডে থাকে প্রচুর চর্বি। যা কলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, ধমনিতে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত করে। তাই এ ধরনের খাবার থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকুন। এর পরিবর্তে বাদাম অথবা তাজা ফলমূল খান।

৮. পর্যাপ্ত ঘুম : ভালো ঘুম নাকি অর্ধেক রোগ সারিয়ে দেয়। কথাটা কিন্তু মিথ্যা নয়। শরীরের নানা রকম সমস্যায় শক্তিশালী অস্ত্র হিসেবে কাজ করে ঘুম। কারণ আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি তখন আমাদের শরীরের যন্ত্রগুলো ফর্মে ফিরে আসে। তাই ঘুমের সঙ্গে কোনো আপস নয়।

হার্টকে সুস্থ রাখার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন ও খাদ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া। কিছু কিছু খাবার যা হার্টের রোগ হওয়ার ঝুঁকি যেমন বাড়ায় তেমনি কিছু খাবার হার্টের জন্য উপকারী, দরকারিও বটে।

সম্পৃক্ত চর্বি এবং কোলোস্টেরলসমৃদ্ধ খাবার পরিহার করতে হবে: যেসব খাবারে সম্পৃক্ত চর্বি, ট্রান্সফ্যাট এবং কোলোস্টেরলের পরিমাণ বেশি সেগুলো অবশ্যই আমাদের খাবারের তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।

কম চর্বিযুক্ত প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে: আমাদের দৈনন্দিন প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে হবে। কিন্তু এ জন্য এমন প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে যেখানে চর্বি নেই কিংবা চর্বির পরিমাণ খুব কম। যেমন-চর্বিমুক্ত খাসি, গরু কিংবা মুরগির মাংস, মাছ, ডিমের সাদা অংশ ইত্যাদি। ক্রিমমুক্ত বা সর ছাড়া দুধ খেলেও যথেষ্ট প্রোটিন পাওয়া যায়।

খাবারে লবণের পরিমাণ কমাতে হবে: অতিরিক্ত লবণ খেলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। উচ্চরক্তচাপ হূদরোগের প্রধান কারণ। এ জন্য খাবারে লবণের পরিমাণ কম রাখা খুব গু্রুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের খাদ্যে সব মিলিয়ে আড়াই গ্রামের বেশি অর্থাৎ এক চা-চামচের কম লবণ থাকা উচিত। যাদের বয়স ৫১-এর বেশি এবং যাদের উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস কিংবা কিডনির সমস্যা আছে তাদের কখনোই প্রতিদিন দেড় গ্রামের বেশি সোডিয়াম গ্রহণ করা উচিত নয়।

রসুন: রসুন আকৃতি ও প্রকৃতিগতভাবে আমাদের হৃৎপিণ্ডের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা রসুনকে হার্টের মহৌষধ বলে অভিহিত করেছেন। রসুনে বিদ্যমান এলিসিন নামক উপাদান হৃৎপিণ্ড ও রক্তনালীর প্রতিবন্ধকতা (Atherosclerosis) অপসারণ ও প্রতিহত করে এবং হৃৎপিণ্ডকে শক্তিশালী করে। হৃদরোগ প্রতিরোধে ১-৩ কোয়া রসুন ২৫০ মিলি পানিতে রেখে সেই পানি ৮ ঘণ্টা পর পর খেতে হবে। আর পাউডারের ক্ষেত্রে ৪০০-১২০০ মি·গ্রাম পরিমাণ খেতে হবে।

টমেটো :আমাদের হৃৎপিণ্ডের যেমন চারটি প্রকোষ্ঠ রয়েছে, তেমনি টমেটোরও চারটি প্রকোষ্ঠ রয়েছে। হার্ট ও টমেটো উভয়ের রং লাল। সম্প্রতি গবেষণায় প্রমাণ হয় যে, টমেটোতে বিদ্যমান লাইকোপেন হৃদরোগ ও উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এবং রক্ত পরিষ্কারক হিসেবে খুবই কার্যকর। হৃৎযন্ত্রের সুস্থতার জন্য পথ্য হিসেবে প্রতিদিন ৩টি করে টমেটো আর এক কাপ পরিমাণ টমেটোর সস খেলে হৃৎযন্ত্র সুস্থ থাকে।

কালো আঙ্গুর: কালো আঙ্গুরের থোকা দেখতে অনেকটা হৃৎপিণ্ডের মত এবং প্রতিটি আঙ্গুর দেখতে আমাদের রক্তের কোষের মত। গবেষণা থেকে প্রমাণ হয় যে, আঙ্গুরে বিদ্যমান প্রোএন্থোসায়ানিডিন হৃৎপিণ্ডের কর্মক্ষমতা বাড়াতে, হৃদরোগ প্রতিরোধে এবং রক্ত পরিশুদ্ধকরণে সহায়তা করে। প্রতিদিন ৩-৯টি কালো আঙ্গুর সেবনে উপরোল্লিখিত উপকারসমূহ পাওয়া যায়।

হালাল প্রাণীর হৃৎপিণ্ড: হৃৎপিণ্ডের কোন জটিলতায় হালাল প্রাণীর হৃৎপিণ্ড কার্যকর ও উপকারী ভূমিকা পালন করে। সপ্তাহে ১ দিন ৩০-৩৫ গ্রাম পরিমাণ হালাল প্রাণীর হৃৎপিণ্ড অন্যান্য সহায়ক ভেষজ, আদা, যয়তুন ও পাঁচফোরনসহ স্যুপ করে ৩ মাস খেলে উপকার পাওয়া যাবেশরিফা / আতা: হৃৎযন্ত্রের সমস্যায় আতাফলের লোকজ ব্যবহার প্রাচীন। সম্প্রতি গবেষণায় প্রমাণ হয় যে, এ ফলগুলোতে বিদ্যমান এপোরফিন ও অক্সোএপারফিন রক্তনালীতে প্লাটিলেটের জমাটবদ্ধতা ও রক্তনালীর সংকোচন প্রতিহত করে এবং হৃৎপিণ্ডের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তবে এ জন্য প্রতিদিন ১টি করে শরীফা অথবা আতাফল খেতে হবে।

কাজুবাদাম :এ ফলে রয়েছে কার্ডল, কার্ডানল, মিথাইল কার্ডল প্রভৃতি রাসায়নিক উপাদান, যা হৃদরোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে উপকারী ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন ৩-৯টি কাজুবাদাম বাঁটা ১ কাপ পানিতে ১ চা চামচ চিনি মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যাবে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

হৃদপিণ্ড বা হার্ট আমাদের দেহের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। তাই হার্টের সুস্থতা সকলেই একান্ত কাম্য। কিন্তু আজকাল বেজাল খাদ্য আর ব্যস্ত জীবন-যাত্রার কারণে শরীরের সুস্থতার দিকে আমরা মোটেও নজর দেইনা। তাই নানা রকম শারীরিক সমস্যার সাথে সাথে হার্টেও সমস্যা দেখা দেয়। তাই জেনে নিন এমন কিছু কার্যকরী উপায় যাতে সহজেই আপনার হার্ট থাকবে সুস্থ। আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন সম্প্রতি হার্ট সুস্থ রাখতে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো- রক্তচাপ নিয়ন্ত্র, কলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ, রক্তে সুগারের মাত্রা কমানো, শারীরিক পরিম্রম করা, ভালো খাওয়া, বাড়তি ওজন কমানো এবং ধূমপান বন্ধ। আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন হার্টের এক গবেষণার জন্য ৩,২০১ জনকে প্রায় ১২ বছর ধরে পরীক্ষা করেন। তাদের গড় বয়স ৫৯ বছর। গবেষণা চলাকালে ১৮৮ জন পুরোপুরি সুস্থ হন। হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখার উপায়গুলো দেখে নিন- -আপনি যদি ধূমপায়ী হয়ে থাকেন সর্বপ্রথম ধূমপান করার এই বাজে অভ্যাসটি ত্যাগ করুন। -প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এমন কিছু খাবার রাখুন যেগুলোতে আছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। মাছ, কারন মাছের তেল হার্টের জন্য খুবই ভালো। তাছাড়া ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডও হার্টের জন্য অনেক উপকারি। -কিছু ভালো অভ্যাস গড়ে তুলুন যেগুলো আপনার হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। মানসিক চাপ একটু নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য মেডিটেশন, যোগব্যায়াম, পছন্দের কাজ করা, পছন্দের গান শোনা, ইয়োগা, বাইকিং, জগিং ইাত্যাদি খুব উপকারি। -ওজন বাড়া এবং দেহে মেদ জমা কার্ডিওভ্যস্কুলার রোগের অন্যতম প্রধান কারণ। অতিরিক্ত ওজন হৃদপিণ্ডের উপর অনেক বাড়তি চাপ ফেলে, এতে ধীরে ধীরে হৃদপিণ্ড নিজের কর্মক্ষমতা হারাতে থাকে। তাই নিজের ওজনটার দিকে একটু বিশেষ নজর দিনে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণের যথাসাধ্য চেষ্টা করে যান। -বয়স অনুযায়ী বছরে ২/১ বার ডাক্তারের কাছে যান নিয়মিত চেকআপের জন্য। বিশেষ করে বংশে কারো কার্ডিওভ্যস্কুলার রোগজনিত সমস্যা থাকলে একটু বিশেষ নজর দেয়া উচিত। সূত্র: জি নিউজ

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ