কুরবানীর গোশত হিন্দু ও অন্য ধর্মাবলম্বীকে দেওয়া জায়েয।-ইলাউস সুনান ৭/২৮৩, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০০
কুরবানির গোশত অমুসলিমদের দেয়া যায়। এতে অসুবিধার কিছু নেই। বিশেষত অমুসলিম যদি প্রতিবেশী/বন্ধু হয়। কারণ, প্রতিবেশী হিসেবে তার হক রয়েছে।
সাহাবীগণ অমুসলিম প্রতিবেশীর হকের প্রতি সবিশেষ লক্ষ্য রাখতেন। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) এর বাড়িতে একবার একটি বকরি জবাই করা হল। যখন তিনি বাড়িতে ফিরলেন জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি আমাদের ইহুদী প্রতিবেশীকে এ গোশত হাদিয়া পাঠিয়েছ? এভাবে দুইবার জিজ্ঞেস করলেন। (জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯৪৩)
সুতরাং অমুসলিমকে কুরবানির গোশতসহ অন্যান্য হাদিয়া দেয়া যাবে।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
لَا یَنْهٰىكُمُ اللهُ عَنِ الَّذِیْنَ لَمْ یُقَاتِلُوْكُمْ فِی الدِّیْنِ وَ لَمْ یُخْرِجُوْكُمْ مِّنْ دِیَارِكُمْ اَنْ تَبَرُّوْهُمْ وَ تُقْسِطُوْۤا اِلَیْهِمْ
দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে স্বদেশ হতে বের করে দেয়নি তাদের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শন ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। আল্লাহ তো ন্যায়পরায়ণদের ভালোবাসেন।
আল্লাহ কেবল তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন, যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে স্বদেশ হতে বের করে দিয়েছে এবং তোমাদেরকে বের করার কাজে সহায়তা করেছে। তাদের সাথে যারা বন্ধুত্ব করে তারা তো জালেম। (সূরা মুমতাহিনা: ৮-৯)
কুরবানীর গোশত অমুসলিমদেরকে দেওয়া জায়েয, বরং ক্ষেত্রবিশেষে দেওয়া উত্তম। (ফাতাওয়া হিন্দীয়াঃ ৫/৩০০) কুরবানীর গোশত হতে কাফেরদেকে তার অভাব, আত্মীয়তা, প্রতিবেশী অথবা তাকে ইসলামের প্রতি অনুরাগী করার জন্য দেওয়া বৈধ। আর তা ইসলামের এক মহানুভবতা। এতে কুরবানী কবুল হওয়াতে কোন সমস্যা হবে না। আল্লাহর নিকট কুরবানী কবুল হওয়ার জন্য শুদ্ধ নিয়ত ও উপার্জনের গুরুত্ব অপরিসীম। নিয়ত সহিহ না হলে কুরবানী হবে না। ইসলামের যে কোন ইবাদতই এই নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। কুরবানীর সূচনাই হয়েছে নিয়তকে কেন্দ্র করে। নিয়ত সহিহ হলে কুরবানী আল্লাহর দরবারে গৃহীত হয়, নিয়ত সহিহ না হলে আল্লাহ কারো কুরবানী কবুল করেন না।