১. ঝুঁকি বনাম নিরাপত্তা নেতিবাচক চিন্তার মানুষ পরিবর্তনকে অপছন্দ করে। পরিকল্পনার বরখেলাপ তাদের মধ্যে চাপের সৃষ্টি করে। এ অনুভূতিটা যে করেই হউক এড়াতে চায় তারা।পরিচিত দুনিয়া ও চিরাচরিত রীতি নীতির মধ্যে আরাম পায়। কমফোর্ট জোনে থাকতে তারা কমফোর্টেবল! এবং কোন পরিবর্তন না হলে তারা সন্তুষ্ট থাকে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এটা তাদেরকে বিভিন্নভাবে আটকে রাখে। এর ফলে তারা বিকশিত হতে পারে না, শিখতে পারে না কিছু।ব্যক্তি হিসেবে উন্নতি করতে পারেনা। এই দুনিয়ার এত যে সৌন্দর্য তার বড় অংশই উপভোগ করতে পারে না। আর ইতিবাচক লোক জীবনটাকে একটি দুঃসাহসী অভিযান হিসেবে নেয়। তারা নতুন নতুন অভিজ্ঞতা নিতে পছন্দ করে এবং জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ করে বাঁচতে চায়। এজন্য তারা তাদের কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে আসতে পছন্দ করে। তারা পরিবর্তনকে নিজেদের বিকশিত করার উপায় হিসেবে নেয়। কর্তৃত্ব হারানোর ব্যাপার মনে করে না। ২. শক্তিকে উদযাপন বনাম দুর্বলতার প্রকাশ নেতিবাচক লোক অন্যের দুর্বলতা প্রকাশ করতে এবং সেগুলো নিয়ে আলোচনা করতে পছন্দ করে। ব্যাপারটা এমন নয় তারা অনেক খারাপ লোক। তাদের ভেতরকার সমস্যাটা হচ্ছে অন্যের দুর্বলতাকে প্রকাশ করে দেওয়ার মাধ্যমে তারা আত্মতুষ্টি লাভ করে। নিজের দুর্বলতা বা ব্যর্থতার পক্ষে আত্মসমর্থন খোঁজে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটা তাদের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়। তাদের নেতিবাচক চিন্তা তাদেরকে আরও জঘন্য লোকে পরিণত করে। আর ইতিবাচক লোক অন্য লোকের সফলতা ও সক্ষমতাকে প্রশংসা করে। তারা এটা করলে নিজেদেরকে নিয়ে অনিরাপত্তায় ভোগেনা কারণ তারা তাদের আইডেনটিটি ও মূল্য সম্পর্কে সচেতন। তারা তাদের শক্তির জায়গাতে জোর দেয় এবং দুর্বলতা নিয়েও সচেতন থাকে। তারা এটা অনুভব করে কেউই একেবারে পারফেক্ট নয়। আবার এটা নিয়ে অহেতুক কষ্ট পাওয়ারও দরকার নেই। ৩. বহির্মুখিতা বনাম আত্মকেন্দ্রিকতা একটা লেভেল পর্যন্ত আমরা সবাই নার্সিসিস্ট। আমরা জীবন থেকে কি চাই, কীভাবে পেতে চাই সেটা নিয়ে সময় দিই। তবে ইতিবাচক মানুষ নিজেদের প্রয়োজন ও অন্যদের প্রয়োজনের মধ্যে ভারসাম্য করতে পারে। তারা সবসময় তাদের আশপাশে থাকা ব্যক্তিদের আবেগ, তাদের কল্যাণের কথা চিন্তা করে এবং যথাসম্ভব সাহায্য করার চেষ্টা করে। অন্যকে কোন কিছুতে সফল হতে সাহায্য করার মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে আরও বেশি ইতিবাচক চিন্তা নিয়ে আসে। আর নেতিবাচক লোক সবসময় নিজেদেরকেই নিয়ে ভাবে। নিজেদেরকে নিয়ে কি ভাবছে, তাদের কোন প্রয়োজনটা পূরণ হলো বা হলো না। যে কোন একটা কাজ বা উদ্যোগে তাদের নিজেদের কি লাভ হলো এটা নিয়ে চিন্তা করে। তারা যদি মনে করে কোন একটা উদ্যোগ থেকে তাদের ব্যক্তিগত কোন লাভ নেই তাহলে তারা সেটা এড়িয়ে চলবে। অন্যদের কাজে যুক্ত হওয়া বা অন্যদেরকে কোন সহায়তা করার ব্যাপারে তারা খুবই কিপটে, কারণ তারা সেখানে নিজেদের কোন লাভ দেখে না। তারা আশপাশের সবার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হতে চান- তাদের নেতিবাচক অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করে।
মানুষকে দেখেতো বোঝা যায়না যে, সে ইতিবাচক মানুষ কিনা। তবে তার বাহ্যিক দিক থেকে অনুমান করে নিতে হয়। যে স্বভাবতই তিনি ভদ্র হবেন। ভালো ব্যবহার করবে। কথা কম বলবে এবং কাজ বেশী করবে। তাছাড়া কথার বলার মাঝে নমনিয়তা বজায় রাখবে। শ্রদ্ধা এবং স্নেহশীল হবেন। তবে একজন মানুষের সাথে মেলামেশা করলে। তাকে সম্পূর্ণ রুপে চেনা সম্ভব।