শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

বিভিন্ন মৌসুমি ফল পাকাবার জন্য তাপ যেমন দেয়া হয়, তেমনি প্রয়োগ করা হয় ক্যালসিয়াম কার্বাইড নামক একটি যৌগ। তাপ দেয়ায় ফলের স্বাভাবিক পুষ্টিগুণের কিছুই আর বাকি থাকে না। তবে ক্যালসিয়াম কার্বাইড ডেকে নিয়ে আসে সমূহ বিপদ। অতিরিক্ত তাপে ক্যালসিয়াম কার্বাইড মেশানো আম রাখলে তা ক্যালসিয়াম সায়ানাইডে পরিনত হতে পারে। যা খাওয়ার অর্থ তৎক্ষণাৎ মৃত্যুবরণ। এছাড়াও দীর্ঘদিন অবিকৃত রাখার জন্য ব্যবহার করা হয় ফরমালিন, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ইত্যাদি।

আসুন, জেনে নেই রাসায়নিক যুক্ত ফল চিনে নেবার কিছু সাধারণ অথচ কার্যকরী উপায়-

  • কার্বাইড যুক্ত ফল সহজেই চেনা যায়। কেননা প্রাকৃতিক ভাবে পাকা ফলের রঙ কিছুটা সবুজ কিছুটা হলুদ হয়ে থাকে । কিন্তু কার্বাইড মেশানো ফল আগাগোড়া সম্পূর্ণ হলুদ হয়ে যায় । আপনার দেখে মনে হয় আম পেকে টসটস করছে, কিন্তু আসলে তা কার্বাইড যুক্ত।
  • ফরমালিন যুক্ত ফলে তার প্রাকৃতিক সুবাস থাকে না। বদলে ঝাঁঝালো এক প্রকার গন্ধ থাকে। ফলের বোটার অংশটি নাকের কাছে ধরুন। যদি প্রাকৃতিক গন্ধ না পান বা ঝাঁঝালো গন্ধ নাকে লাগে তাহলে নিশ্চিত রূপেই তাতে ফরমালীন আছে।
  • প্রাকৃতিক ভাবে পাকানো ফল স্বাদে পুরোটাই মিষ্টি হবে। কিন্তু ওষুধে পাকানো বা সংরক্ষণ করা ফলের এক অংশ মিষ্টি, অন্য অংশ টক হবে।
  • স্বাভাবিক ফল পেকে যাওয়ার পর ফ্রিজে রাখা না হলে স্বভাবতই পচে যাওয়া শুরু করবে। কিন্তু ফরমালিন যুক্ত ফল ফ্রিজে না রাখলেও পচবে না।
  • লিচুর রঙ কাঁচা অবস্থায় হবে সবুজ, পেকে গেলে ইট রঙের। এখন গাছে থাকা অবস্থায় রাসায়নিক দেয়ার কারনে তার রং হয়ে যায় ম্যাজেন্টা । এই ধরনের লিচু দেখতে ভালো দেখায়, কিন্তু খেতে নয়। আর স্বাস্থ্যের জন্য চরম হানিকারক তো বটেই। তাই ম্যাজেন্টা রং এর লিচু কিনবেন না একদম।
  • ওষুধ দেয়া লিচুতে স্বাভাবিক স্বাদ বা গন্ধ থাকে না। কেমন যেন বিশ্রী ঝাঁজালো ভাব থাকবে, আর রসালো হবে না।
  • চেহারা দেখে ফল কিনবেন না। বিশেষ করে আম। অনেকেই দাগহীন মোলায়েম চেহারা দেখলেই আম কিনে ফেলেন। আমের চেহারা শতভাগ দাগহীন হওয়ার অর্থ যে একে কাঁচা অবস্থায় পাড়া হয়েছে এবং ওষুধ দিয়ে পাকানো হয়েছে।
  • ফরমালিন যুক্ত ফলে মাছি, মৌমাছি ইত্যাদি পতঙ্গ বসে না। মাছি বা পতঙ্গের উপস্থিতির অর্থ ফলটি রাসায়নিক বিহীন।

তাৎক্ষণিকভাবে ফরমালিন, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড, কার্বাইড বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহারের কারণে পেটের পীড়া, হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, বদহজম, ডায়রিয়া, আলসার, চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে। ধীরে ধীরে এসব রাসায়নিক পদার্থ লিভার, কিডনি, হার্ট, ব্রেন—সবকিছু ধ্বংস করে দেয়। লিভার ও কিডনি অকেজো হয়ে যায়। হার্টকে দুর্বল করে দেয়। স্মৃতিশক্তি কমে যায়। শেষ পর্যন্ত রাসায়নিক যুক্ত খাদ্য গ্রহণ করার ফলে পাকস্থলী, ফুসফুস ও শ্বাসনালিতে ক্যানসার হতে পারে। অস্থিমজ্জা আক্রান্ত হওয়ার ফলে রক্তশূন্যতাসহ অন্যান্য রক্তের রোগ, এমনকি ব্লাড ক্যানসারও হতে পারে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ