স্বামী বয়সে একটু নয়, অনেকটা বড় হলেও সেটা নিয়ে মাথা ঘামাতে দেখা যায় না কাউকে। কিন্তু স্ত্রী যখন বয়সে বড় হয় তখন সামাজিক ভাবেই তৈরি হয় নানান সমস্যা। শুধু সামাজিক নয়, কিছু শারীরিক ও মানসিক সমস্যার মাঝ দিয়েও অতিক্রম করতে হয় এমন দম্পতিকে। আজ আমাদের ফিচার সেইসব সমস্যা নিয়ে, যেগুলো দেখা দিতে পারে স্ত্রী বয়সে স্বামীর চাইতে বড় হলে। একই সাথে রইলো কিছু সম্ভাব্য সমাধানও। কীভাবে সামাজিক গুঞ্জনের মোকাবেলা করবেন, কেমন হওয়া উচিত স্ত্রীর আচরণ, কোন কথাগুলো না বললেই ভালো, যৌন জীবন ও সন্তান নিয়ে সমস্যা ইত্যাদি এড়াতে কী করবেন সে সমস্ত বিষয়ে রইলো কিছু পরামর্শ।
স্ত্রী বয়সে বড় হলে বলাই বাহুল্য যে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের দ্বারাই নানান রকম সমালোচনা ও অহেতুক গুঞ্জনের শিকার হতে হয়। বিশেষ করে প্রেমের বিয়ে হলে তো আরও অনেক বেশি। অনেকে অনেক রকমের সমালোচনা করে, কেউ সামনা সামনিই কথা শোনায়, অনেকে আবার এই সমস্যা-সেই সমস্যা বলে নানান রকমের ভয় দেখাবার চেষ্টা করে। এসব শুনে যদি বিচলিত হয়ে যান, তাহলে কিন্তু শুরুতেই সমস্যা দেখা দেবে দাম্পত্যে। আপনারা পরস্পরকে ভালোবাসেন, তাই এসব কথা কানে নেবেন না। বা পাল্টা কিছু বলতেও যাবেন না। এতে অশান্তি বাড়বে। যে যা বলছে বলতে দিন, আপনারা জানেন আপনারা কী।
আমাদের সমাজে এখনো স্ত্রী বয়সে বড় হবার ব্যাপারটাকে ভালো নজরে দেখা হয় না। এমনকি বয়সের পার্থক্য ২/১ বছরের হলেও না। যদি বিয়েটা প্রেমের হয়ে থাকে, তাহলে স্ত্রীর বয়সে বড় হবার ব্যাপারটা সকলকে ফলাও করে বলার কোন প্রয়োজন নেই। বয়সের পার্থক্য খুব বেশি না হলে নিজেদের সমবয়সী হিসাবেই বলুন সবার কাছে। একান্তই যদি কাউকে জানাতে হয় তবে পরিবারকে জানান। এতে অহেতুক অনেক সমস্যা থেকেই মুক্তি মিলবে।
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় পুরুষ হয়তো এমন কাউকে বেছে নিচ্ছেন সঙ্গিনী হিসাবে যিনি ডিভোর্সড বা বিধবা। এক্ষেত্রে এমনিতেই সমস্যা, সাথে যদি নারীর বয়স বেশি হয় তাহলে তো সমস্যার পাহাড় ভেঙে পড়বে মাথায়। এমন ক্ষেত্রে খুব জেনেবুঝে তবেই সামনের দিকে অগ্রসর হোন। মনের মাঝেই ধরেই রাখুন যে পরিবার, সমাজ, বন্ধু কারো সহযোগিতা আপনারা পাবেন না। তাই মন শক্ত করে লড়াই করবার জন্য তৈরি থাকুন যদি আপনাদের ভালোবাসা তেমন মজবুত হয়ে থাকে।
স্ত্রী বয়সে বেশ কিছু বছর বড় হলে এমনটা হওয়া খুবই স্বাভাবিক। মেয়েদের মানসিক পরিপক্কতা এমনিতেই একটু আগে আসে ছেলেদের চাইতে, তাই স্বামীর বয়স কম হলে সমস্যা হতেই পারে। এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে দুজনকেই। স্ত্রী খুব বেশি গুরুজনের মত আচরণ করতে যাবেন না, অন্যদিকে স্বামীও ছেলেমানুষি ত্যাগ করে একটু ম্যাচিউর আচরণ করুন। ভালোবাসা থাকলে এটা কোন ব্যাপারই না। মনের মিল হওয়াটাই আসল বিষয়।
বয়সের পার্থক্য বেশি হলে এ কথা বলাই বাহুল্য যে জীবনের পথে স্ত্রীর দৈহিক বার্ধক্য আগে চলে আসবে। পুরুষেরাই স্বাভাবিকভাবেই নারীর চাইতে শারীরিকভাবে সক্ষম বেশি বয়িস পর্যন্ত থাকেন। সেখানে স্বামীর বয়স কম হলে বলাই বাহুল্য যে এই বিষয়টি নিয়ে সমস্যা হবেই। ফলে দেখা দিতে পারে পরকীয়া সহ দ্বিতীয় বিয়ে, অশান্তি ইত্যাদি আরও নানান সমস্যা। এছাড়া পরিণত বয়সে চেহারায় বয়সের ছাপ পড়বেই। এই বিষয়টি নিয়েও ঝামেলায় পড়তে হবে। তাই আগে থেকেই মানসিকভাবে তৈরি থাকুন। সমস্যা কি নিয়ে হবে জানা থাকলে মোকাবেলা করা সহজ হয়।
বিয়ে যখন করেছেন তখন পিতামাতা হতেই হবে। মাত্র বিয়ে করেছি, এখনোই সন্তান চাইনা এমন ভাবনা একপাশে সরিয়ে রাখুন। বরং হিসাব করে দেখুন যে আপনার স্ত্রী হাতে কতটা সময় আছে মা হবার জন্য। প্রথম সন্তানের মা ৩০ বছর বয়সের মাঝেই হওয়া যাওয়া ভালো। হয়তো আরও ২/১ বছর দেরি হতে পারে। কিন্তু এর চাইতে বেশি কখনোই নয়। তাই নিজেদের দেহঘড়ির সংকেত বুঝে ফ্যামিলি প্ল্যানিংটা সেরেই ফেলুন।