ফিকহ শাস্ত্রের মূল উৎস বা ভিত্তি চারটি। (ক) কুরআন, (খ) হাদীস, (গ) ইজমা ও (ঘ) কিয়াস। প্রথম দুটির ওপর পরবর্তী দুটি নির্ভরশীল।
শরীআতের প্রথম ও প্রধান উৎস হচ্ছে কুরআন মাজীদ। এটি শরীআতের অকাট্য দলিল। এর ওপরই শরীআতের মূল কাঠামাে দণ্ডায়মান। আল-কুরআনে শরীআতের উৎস হিসেবে প্রায় পাঁচ শতাধিক আয়াত রয়েছে।
শরীআতের উৎস হিসেবে সুন্নাহ বা হাদীসের স্থান দ্বিতীয়। আল-কুরআন হচ্ছে শরীআতের মূল; আর সুন্নাহ এর ব্যাখ্যা। কুরআন মাজীদে শরীআতের সকল বিষয় সংক্ষেপে বর্ণনা করা হয়েছে। আর হাদীস ঐ সব বিষয়ের বিশ্লেষণ । যেমন সালাত আদায় করা ফরয। তবে কিভাবে আদায় করতে হবে আল-কুরআনে তার উল্লেখ নেই। হাদীসে তার ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
শরীআতের তৃতীয় উৎস ইজমা। কুরআন ও সুন্নাহ সম্পর্কে গভীর জ্ঞানসম্পন্ন আলিমগণের কোন সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে একমত হওয়াকে ইজমা বলে। বহু নতুন প্রশ্নের মীমাংসা প্রসঙ্গে সাহাবী, তাবিঈ ও তাবিঈ- তাবিঈনদের এরূপ একমত হওয়ার বিবরণ পাওয়া যায়। যে সকল বিধানে ঐকমত্য স্থাপিত হয়েছে, বিশেষত সাহাবীদের ঐকমত্যযুক্ত বিধানসমূহ মুসলমানদের পক্ষে অবশ্য পালনীয়, এর বিরােধিতা করা চলবে না।
শরীআতের চতুর্থ উৎস কিয়াস। যে বিষয় সম্পর্কে কুরআন, সুন্নাহ ও ইজমায় সুস্পষ্ট বিধি-বিধান পাওয়া যায় না, সে ক্ষেত্রে কুরআন ও সুন্নাহর মধ্যে প্রদত্ত অনুরূপ প্রশ্নের মীমাংসাকে ভিত্তি করে যুক্তি প্রয়ােগে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, এ ধরনের যুক্তি প্রয়ােগকে কিয়াস বলা হয়। সাহাবী, তাবিঈ ও তাবি-তাবিঈগণ এ পদ্ধতিতে শরীআতের বহু নতুন নতুন প্রশ্নের সমাধান দিয়েছেন। এটি কুরআন ও হাদিসের সমতুল্য নয়; বরং সামঞ্জস্যপূর্ণ বিধান।