নিজের পায়ে দাঁড়াতে হলে আপনাকে উদ্যোগী হতে হবে। আর উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য ঠিক করতে হবে, কী দিয়ে শুরু করবেন। এজন্য দরকার অল্প পুঁজিতে শুরু করা যায় এমন ব্যবসা। এ ধরনের উদ্যোক্তার পাশে দাঁড়াতে শেয়ার বিজের সাপ্তাহিক আয়োজন

ব্লক ও বাটিক ব্যবসা

যেকোনো ব্যক্তি নিজের কর্মসংস্থানের জন্য ব্লক ও বাটিকের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এ ব্যবসায় তরুণীদের বিশেষ আগ্রহ রয়েছে। অল্প পুঁজিতে ব্লক-বাটিকের ব্যবসা শুরু করা যায়। নানা ধরনের নকশাযুক্ত পোশাক পরিধান করতে পছন্দ করে সব শ্রেণির মানুষ। নিত্যনতুন ডিজাইনের পোশাক মানুষকে ফ্যাশনেবল করে তোলে। তাই ব্লক ও বাটিকের কাজ করা পোশাকের চাহিদাও চোখে পড়ে। এ চাহিদা বিবেচনায় আপনিও শুরু করতে পারেন ব্লক ও বাটিকের ব্যবসা। আগেই জেনেছেন, এ ব্যবসা পরিচালনা করা তুলনামূলক সহজ ও অল্প পুঁজির। তাই একজন বেকার নারী বা পুরুষ এ ব্যবসা শুরু করে স্বাবলম্বী হতে পারেন।

কোথায় করবেন

স্থানীয় বাজার বা মার্কেটে ছোট একটি দোকান দিয়ে ব্যবসাটি শুরু করা যেতে পারে। আবার চাইলে আপনার বাড়িতেও এ ব্যবসাটি চালু করতে পারেন। নান্দনিক পোশাক হিসেবে বিভিন্ন ব্লক ও বাটিকের কাজ করা পোশাকের চাহিদা বেশি। তাই এ ব্যবসায় ক্ষতির হওয়ার আশঙ্কা নেই বললেই চলে।

শুরু

ব্যবসাটি শুরু করার আগে এর খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। পোশাকের ধরন অনুযায়ী ব্লক ও বাটিকের নকশা নির্বাচন করতে হবে। ব্যক্তিগত পুঁজি অবশ্যই থাকতে হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী ঋণদানকারী ব্যাংক অথবা কোনো বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা থেকে ঋণ নিতে হবে।

প্রয়োজন

এমব্রয়ডারি, কারচুপি, ব্লক ও বাটিকের ব্যবসায় দক্ষ দু-তিনজন কর্মচারী নিতে হবে। মেশিনে কাপড় তৈরি ও সেলাই করবেন তারা। এছাড়া অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন টেইলারিং মেশিন, কাঠের ডাইস, রং, বিভিন্ন রঙের সুতা, সুই ও কাপড় লাগবে।

সহজ নিয়ম

সহজে কাপড়ের ব্লক করা যায়। প্রথম দিকে বাড়িতে নিজে ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কাজটা করতে পারেন। ডাইসের ওপর রং রেখে কাপড়টিকে টেবিলের ওপর রেখে ডাইস দিয়ে কাপড়ের নির্দিষ্ট স্থানে চাপ দিলেই ব্লক প্রিন্ট হয়ে যায়। তবে ব্লক প্রিন্ট করার আগে কাপড় ধুয়ে মাড় ছাড়িয়ে নিতে হবে। প্রিন্ট হয়ে গেলে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। আর বাটিকের কাজ করতে সুতা দিয়ে কাপড় বেঁধে নির্ধারিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাপড় রঙের পানিতে চুবিয়ে নিতে হয়। এক্ষেত্রে অনেক সময় মোম ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে। এভাবে কাপড়ে ব্লক ও বাটিকের কাজ করতে পারেন। শুধু পোশাকেই নয়; বিছানার চাদর, বালিশের কভার, কাপড়ের ব্যাগ প্রভৃতি যেকোনো কাপড়ে এসবের কাজ করা যায়।

সাবধানতা

ব্লক প্রিন্ট করার সময় অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ভালো ডিজাইনের ব্লক সংগ্রহ করতে হবে। রং পরিমাণ অনুযায়ী মেশাতে হবে। কম-বেশি হলে কাপড় নষ্ট হয়ে যাবে। ব্লকে রং ঠিকমতো লেগেছে কি না কাপড় বসানোর আগে তা খেয়াল রাখতে হবে। অতি সাবধানে নকশাটা বসাতে হবে।

বাজার সম্ভাবনা

সুতি কাপড়, শাড়ি, থ্রিপিস, ফতুয়া, পাঞ্জাবি, বিছানার চাদর, কুশন প্রভৃতি ব্লক ও বাটিকের প্রিন্ট করে প্রথম দিকে মেলা বা হাটবাজার ও স্থানীয় দোকানে পাইকারি-খুচরা দামে বিক্রি করতে পারেন। এরপর ধীরে ধীরে শহরের দোকানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে বিক্রি করতে পারেন। এছাড়া শহরে অবস্থিত বিভিন্ন কারু ও হস্তশিল্পের দোকানগুলোয় এসব কাপড়ের চাহিদা বেশি থাকে। এখানে বিক্রি করে ভালো আয় করা যায়।



শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে