Mahadi

Call

রমজান আসার পূর্বে অনলাইনে, অনেক মানুষ না যেনে নিজের বন্ধু সার্কেল ও আত্মীয় স্বজনদের ভিতর শেয়ার করে যে, ‘প্রথম রমজান শুরু হবে অমুক তারিখ থেকে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রমজানের খবর যে লোক আগে অন্য কোনো ব্যক্তিকে দেবে তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম হয়ে যাবে; অতএব আপনিও রমজানের খবর আগে ভাগে অন্যকে দিয়ে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি লাভ করুন।’

মূল কথা- ‘সবার আগে রমজান মাসের খবর দিলে, তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম হবে’। এ ব্যাপারে কোনো প্রমাণ নেই। বরং এটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মনগড়া একটি কথা। যা ইহুদিরা তৈরি করে সাধারণ মুসলমানদের মাঝে ছেড়ে দিয়েছে যেন মুসলিমরা তাদের নবীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করতে পারে।

সুতরাং এ বার্তার কোনো ভিত্তি নেই। বরং এমন বার্তার আদান-প্রদান নিষিদ্ধ। কেননা, এমন বার্তা প্রচারের মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওপর মিথ্যারোপ করা হচ্ছে। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করার কত ভয়াবহ শাস্তি তা অনেক মুসলমানেরই অজানা।

বিশুদ্ধ হাদীস শরিফে এসেছে- قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من كذب علي متعمدا فاليتبوؤ مقعده من النار

অর্থ: রাসুলুল্লাহ সা: বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত মিথ্যাচার করলো, সে যেন পরকালে জাহান্নামকেই তার ঠিকানা বানিয়ে নিলো।

(আবু দাউদ শরীফ, হাদীস নং-৩৬৫১, ইবনে মাজাহ শরীফ, হাদীস নং-৩০, তিরমিযী শরীফ, হাদীস নং-২৬৬১, নাসায়ী শরীফ, হাদীস নং-৫৯১৫, বুখারী শরীফ, হাদীস নং-১০৬, মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৪)

তবে রমজান মাসের আগমন উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানানো দোষণীয় কোনো বিষয় নয়। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবিদের রমজানের আগমন উপলক্ষে সুসংবাদ দিতেন এবং তাদের উত্তম আমলসমূহের জন্য প্রস্তুতি নিতে উৎসাহিত করতেন।

এ বিষয়ে একটি দীর্ঘ হাদিস বর্ণিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, হজরত সালমান ফারসি রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, শাবান মাসের শেষ দিনে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন।

ওই ভাষণে তিনি বলেন, হে লোক সকল! একটি মহিমান্বিত মাস তোমাদের ছায়া হয়ে ঘিরে ধরেছে। এ মাস একটি বরকতময় মাস। এটি এমন এক মাস, যার একটি রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।

আল্লাহ তা’য়ালা এ মাসের সিয়ামকে ফরজ করেছেন আর নফল করে দিয়েছেন এ মাসে রাতের কিয়ামকে।

যে ব্যক্তি এ মাসে একটি নফল কাজ করবে, সে যেন অন্য মাসের একটি ফরজ আদায় করল। আর যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরজ আদায় করল, সে যেন অন্য মাসের সত্তরটি ফরজ সম্পাদন করল। এ মাস সবরের (ধৈর্য্যের) মাস; সবরের সওয়াব জান্নাত। এ মাস সহমর্মিতার। এ এমন এক মাস যাতে মুমিনের রিজিক বৃদ্ধি করা হয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ