ঈমান বৃদ্ধি করার সঠিক উপায় কোনটি? রাসূল(সল্লালাহু আলাইহি অসাল্লাম) কি বলেছেন? নামাজের মধ্যে শয়তানের চক্রান্ত থেকে বাঁচার দোয়া কোনটি? দলিল সহ জানাবেন।
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

ঈমান সুদৃঢ় রাখার কিছু উপায়ঃ [ ১] অর্থ বুঝে কুর’আন তেলাওয়াত করুন। তেলাওয়াত করার সময় প্রতিটি আয়াতের মর্মার্থ উপলব্ধি করে সেগুলো নিয়ে চিন্তা ভাবনা করুন। দেখবেন হৃদয়ে আপনি এক অকৃত্রিম প্রশান্তি বোধ করবেন। হৃদয়ের কোমলতা বাড়বে। কুর’আন তেলাওয়াতের সময় মনে মনে কল্পনা করুন আপনি বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীনের সাথে কথা বলছেন। মনের ভিতর এমন ধরনের অনুভুতি সৃষ্টি করতে পারলে কুর’আন তেলাওয়াতের সর্বোত্তম সুফল অর্জন করা সম্ভব হবে। কুর’আন আল-কারীমে আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বিভিন্ন ধরনের মানুষের কথা বলেছেন। নিজেকে মিলিয়ে দেখুন আপনি কোন শ্রেনীর মানুষ। [২] আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীনের মহত্ত্বকে উপলব্ধি করার চেষ্টা করুন। বিশ্বচরাচরে যা কিছু আছে সবকিছুই তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন। আমরা চোখ খুলে যা কিছু দেখি সমস্ত কিছুর মাঝেই রয়েছে তাঁর নিদর্শন যা প্রতিনিয়ত তাঁরই মহীমা ও শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করে চলেছে; তাঁর হুকুম ছাড়া কোন কিছুই ঘটে না; তিনি সর্বদ্রষ্টা; কোন কিছুই তাঁর দৃষ্টি সীমার বাইরে নয়। গহীন অন্ধকার রাতে কালো পাথরের উপর কালো পিঁপড়াটিও নয়। [৩] জ্ঞান অর্জনের চেষ্টা করুন। অন্তত প্রত্যাহিক জীবনের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়গলো সম্পর্কে আপনার জ্ঞান থাকা লাগবে। যেমনঃ সঠিক আকীদাহ, তাওহীদ, শিরকসম্পর্কে। সঠিক পদ্ধতিতে উত্তমরূপে নামায পড়া ও ওজু করতে জানা। আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীনের গুণবাচক নামগুলোর অর্থসহ সেগুলোর তাৎপর্য জানুন। কারণ আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীনকে তারাই বেশী ভয় করতে পারে যারা জ্ঞানী, যারা তাঁর সম্পর্কে জানে। এই জন্য আপনি এই বইটি পড়তে পারেন। [৪] দ্বীনের আলোচনা হয় এমন বৈঠকে যোগদিন। কারণ আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন সম্পর্কে আলোচনা হয় এমন অনুষ্ঠানে ফেরেশতারাও সমবেত হয়ে থাকেন। আমাদের ওয়েবসাইট থেকে লেকচার ডাউনলোড করে শুনতে পারেন এই লিংক থেকে। [৫] বেশী বেশী সৎকর্ম করুন। একটি সৎকর্ম অন্যান্য সৎকর্মসমূহের দুয়ার খুলে দেয়। বেশী বেশী দান সাদাকাহ্ করুন। এমনটি করলে আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন আপনার জীবনের চলার পথকে সহজ করে দেবেন। ফলে আপনি আরো বেশী সৎকর্ম সম্পাদনের জন্য উৎসাহ বোধ করবেন। সৎকর্ম সম্পাদন আপনার জন্য সহজ হয়ে উঠবে। সৎকর্ম সম্পাদনের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাঝে মাঝে অনেক ভাল কাজ করার চেয়ে অল্প অল্প করে প্রতিদিন কিছু না কিছু ভাল কাজ করা আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীনের কাছে বেশী পছন্দনীয়। [৬] আপনার জীবনের চূড়ান্ত পরিণতি তথা মৃত্যু হতে পারে অত্যন্ত মর্মান্তিক। কাজেই প্রতিটি মুহূর্তে মৃত্যুকে ভয় করে পৃথিবীতে বেঁচে থাকুন। পার্থিব খেল-তামাশা থেকে বেঁচে থাকার জন্য বেশী বেশী মৃত্যুকে স্মরণ করুন। [৭] আমাদের পরকালীন জীবনে বিভিন্ন ধাপ রয়েছে। পরকালীন জীবনের শুরু হয় মৃত্যু দিয়ে। এরপর কবরের জীবন, হাশরের ময়দানে বিচার, বিচার শেষে হয় জান্নাত না হয় জাহান্নাম। এছাড়াও রয়েছে পুলসিরাত। বিষয়গুলো নিয়ে ভাবুন। এমন পরকালীন ভাবনা আপনার ইহকালীন জীবনকে পরিশুদ্ধতা দান করবে। ফলে আপনার ঈমান সুদৃঢ় হবে। [৮] প্রতিনিয়তই আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীনের সাহায্য প্রার্থনা করুন। বোঝার চেষ্টা করুন আমাদের অস্তিত্বের জন্য, আমাদের স্বার্থেই আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীনকে আমাদের প্রয়োজন। ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করা থেকে বিরত থাকুন। বিনয়ী জীবন যাপন করুন। জড়বাদী এই পৃথিবীর মোহে অন্ধ হয়ে যাওয়া থেকে বেঁচে থাকুন। [৯] আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীনের দেয়া জীবন বিধান পালনের মাধ্যমে প্রমান করুন আপনি আপনার স্রষ্টাকে ভালবাসেন। তাঁর কাছে প্রার্থনার ক্ষেত্রে সর্বদায় আশাবাদী হউন। আশা করুন, আপনি যা চান তিনি তাই কবুল করবেন। তবে যে কোন সময় অপরাধ বা ভুল হয়ে যেতে পারে এই ভয়ে সদা সতর্ক ও ভীত থাকতে হবে। আত্ম-সমালোচনা করুন। সারাদিন কি করলেন তা পর্যালোচনা করে রাতে ঘুমানোর আগে কিছু সময় ব্যয় করুন। [১০] উপলব্ধি করার চেষ্টা করুন, আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীনের বিধান অমান্য করে আমারা যে পাপ করি তার পরিণতি কি। আমাদের মন্দকর্মগুলো ঈমানকে দুর্বল করে দেয়। পক্ষান্তরে, সৎকর্মসমূহ আমাদের ঈমানকে সুদৃঢ় করে তোলে। এই বিশ্ব চরাচরে কোন কিছুই আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীনের ইচ্ছা ছাড়া সংঘটিত হয়না। আর আমাদের উপর যে বিপদ-আপদ আসে তা আমাদের নিজের হাতের কামাই ছাড়া কিছুই নয়। আমরা তাঁর অবাধ্য হয়ে নানান পাপে লিপ্ত হই যে পাপ আমাদের সকল দুর্দশার কারণ। পরিশেষে, আল্লাহ্ রাব্বুল ইজ্জাত ওয়াল জালাল এর কাছে আমাদের এই প্রার্থনা, আমরা যেন ততক্ষণ পর্যন্ত মৃত্যুর কোলে ঢলে না পড়ি যতক্ষণ না আমরা তাঁর প্রিয় বান্দাহ্দের দলভুক্ত হতে পেরেছি। আল্লাহ্ আমাদের সকলের ঈমানকে আরো বাড়িয়ে দিন এবং আমাদেরকে তাঁর মনোনীত একমাত্র দ্বীন ইসলামকে মেনে চলার তাওফীক্ দিন।–আমীন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

পাচঁবার নামাজ পরুন আর বেশি বেশি জিকির করুন

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

https://mobile.facebook.com/jrnayek/posts/414307522001118?_rdr&refsrc=http%3A%2F%2Fwww.google.com.bd%2Fsearch 

ঈমান বৃদ্ধি করার সর্বোত্তম উপায় হল বুঝে বুঝে কুরান পাঠ করা ও তা অনুধাবন করা। ঈমান সম্পর্কিত কয়েকটি হাদিস বর্ণনা করলাম: (আশা করি অনুধাভন করে বুঝতে চেষ্টা করবেন):

১) আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,  রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ঐ সত্ত্বার কসম যার হাতে আমার প্রাণ! তোমাদের কেউ ঈমান্দার হয় না যতক্ষণ না আমি তার পিতা ও পুত্রের চেয়েও প্রিয়তর হই। (বুখারি, ঈমান অধ্যায়: ১৪)

২) আনাস (রা:) রাসুলুল্লাহ(সা:) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন: তোমাদের কেউ ঈমান্দার হতে পারবে না,  যতক্ষণ না সে নিজের জন্য যা পছন্দ করে তা তার অপর মুস্লিম ভাইয়ের জন্য পছন্দ করে। (বুখারি, ঈমান অধ্যায়: ১৩)

আপনি সত্যিকারের ঈমান্দার কিনা বা ঈমান আপনার মধ্যে আছে কিনা এটা আপনি নির্ণয় করতে পারবেন যদি আপনার মধ্যে নিম্নোক্ত তিনটি গুণাবলী থাকে:

- আনাস (রা:) নবী (সা:) থেকে বর্ণনা করেছেন তিনি বলেছেন, যার মধ্যে তিন টি গুণ আছে সে ঈমানের স্বাদ পেয়েছে। ১) তার নিকট অন্য যে কারুর চেয়ে আল্লাহ ও রাসুল প্রিয়তর হয়।২) কাউকে ভালবাসলে আল্লাহর জন্য ভালবাসে।৩) আগুনে নিক্ষিপ্ত  হওয়াকে যেমন অপ্রিয় জানে,  কুফরীর দিকে ফিরে যাওয়াকেউ তেমনি অপ্রিয় জানে। (বুখারি, ইমান অধ্যায়: ১৬)

তাহলে আপনি যদি আপনার ইমান বৃদ্ধি করতে চান, তাহলে উপরিউক্ত গুণাবলি আপনাকে অর্জন করতে হবে।

আপনি সুরা আলে ইমরানের ১৬৬-১৭৩ আয়াতগুলি একবার অর্থসহ পড়ে দেখতে পারেন।

আপনি যদি আপনার ইমান বাড়াতে চান, তাহলে বেশি বেশি করে কুরান পড়ুন, কারণ একমাত্র কুরান ই পারে মুমিনের ঈমান বৃদ্ধি করতে।

ইসলামি লেকচার শুনুন।  এতেও আপনার ইমান বৃদ্ধি পাবে। 



ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ