রমজান মাসে রাত্রে সহবাস করার পর যদি ফরজ গোসল না করেই পবিত্র হওয়ার আগে সকাল হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে এক্ষেত্রে অপবিত্র অবস্থায় সেহরী খেয়ে রোজা রাখলে রোজা হবে।
অথবা, জানাবাত অবস্থায় কারো প্রভাত হলে তার সাওম শুদ্ধ হবে।
হারুন ইবনু সাঈদ আয়লী (রহঃ) আবূ বকর (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা মারওয়ান তাকে উম্মু সালামা (রাঃ) এর নিকট পাঠালেন ঐ ব্যাক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য যার জানাবাতের অবস্থায় ভোর হলো, সে সাওম পালন করতে পারবে কি?
তিনি বললেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জানাবাত অবস্থায় ভোর হত যা স্ত্রী সহবাসের কারণে হত, স্বপ্নদোষের কারণে নয়। এরপর তিনি রোজা ভাঙতেন না এবং সাওম এর কাযাও করতেন না।
(সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ১৪/ সিয়াম, হাদিস নম্বরঃ ২৪৬২ হাদিসের মানঃ সহিহ)।
আপনি যদি সারাদিন নাপাক থাকেন তাহলেও রোজা হবে। কিন্তু ফরজ গোসল বিলম্বিত হওয়ার কারণে নামাজ কাজা হয়ে যাওয়ায় আপনার গোনাহ হয়েছে।
স্ত্রীর সহবাস সম্পন্ন হলে তখন ফরজ গোসল করা আবশ্যক এবং এটি অত্যন্ত জরুরী। ইসলামের বিধানে ফরজ গোসলকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে অবহিত করা হয়েছে।
যদি কারো ওপর গোসল ফরজ হলে সঠিক-শুদ্ধ পদ্ধতিতে গোসল আদায় না করা পর্যন্ত ঐ ব্যক্তি নাপাক থাকবেন। আর ইচ্ছাকৃতভাবে এই নাপাকি অবস্থায় তার কোনো প্রকারের ইবাদত-বন্দেগি করা অনুচিত।
সুতরাং সঠিক-শুদ্ধভাবে আমল করার জন্য শারীরীকভাবে পবিত্র থাকার উদ্দেশ্য গোসল ফরজ একান্ত জরুরী।
দেখুন আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে বলেছেন তোমাদের জন্য রমজানের রাতে স্ত্রীদের কাছে গমন করা জায়েজ করেছেন। কিন্তু আপনি নিশ্চয়ই জানেন রোজা যেমন ফরজ নামাজ ও তেমনি ফরজ। আল্লার রাসুল (স;) বলেছেন কিছু লোক সারাদিন শুধু অনাহার করে নিজেকে কষ্ট দিবে, তাদের রোজা কোন কাজে আসবেনা। কারন তারা রোজা রেখে পাপ কাজ পরিহার করতে পারেনা। এখানে আপনি যে প্রশ্ন করেছেন তাতে মন হয় আপনি ফজর নামজ থেকে শুরু করে কোন নামাযই আদায় করেননি। সহিহ হাদিসের দলিল দিতে পারবোনা, তবে এততুকু বলতে পারি যে আপনার রোজা থাকা পালন হবে। কিন্তু সেটা কতটা গ্রহণ যোগ্য আপনি নিজেই একটু চিন্তা করেন ??
# ২৪৬২ হায়ান ইবনুূু সাঈদ আয়লী (রহঃ) আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা মারওয়ান তাকে উম্মু সালামা (রাঃ)-এর-নিকট পাঠালেন ঐ ব্যাক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য যার জানাবাতের অবস্হায় ভোর হল, সে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে পারবে কি? তিনি বললেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর ইহতিলাম ব্যতিরেকে স্ত্রী সহবাসের কারণে গোসল ফরয হওয়া অবস্থায় ভোর-হতো এরপর ইফতারও করতেন না এবং সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র কাযাও করতেন না।
# মুহাম্মাদ ইবনুূু মিহরান সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উবাই ইন্ন কাব (রাঃ) আমাকে বলেছেন যে, মুফতীগগ এরূপ ফাতওয়া দিতেন যে, বীর্যপাত হলেই গোসল করতে হবে (অন্যথায় নয়)। ইসলামের প্রাথমিক যুগে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গোসলের ব্যাপারে স্বাধীনতা প্রদান করেন। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরবর্তী কালে স্ত্রী সহবাস করলেই (বীর্যপাত হোক বা না হোক) গোসলের নির্দেশ দেন-(বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, ইবনুূু মাজাহ)।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
ﺃُﺣِﻞَّ ﻟَﻜُﻢْ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡِ ﺍﻟﺮَّﻓَﺚُ ﺇِﻟَﻰ ﻧِﺴَﺎﺋِﻜُﻢْ ﻫُﻦَّ ﻟِﺒَﺎﺱٌ ﻟَﻜُﻢْ ﻭَﺃَﻧْﺘُﻢْ ﻟِﺒَﺎﺱٌ ﻟَﻬُﻦَّ ﻋَﻠِﻢَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺃَﻧَّﻜُﻢْ ﻛُﻨْﺘُﻢْ ﺗَﺨْﺘَﺎﻧُﻮﻥَ ﺃَﻧْﻔُﺴَﻜُﻢْ ﻓَﺘَﺎﺏَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﻭَﻋَﻔَﺎ ﻋَﻨْﻜُﻢْ ﻓَﺎﻟْﺂَﻥَ ﺑَﺎﺷِﺮُﻭﻫُﻦَّ ﻭَﺍﺑْﺘَﻐُﻮﺍ ﻣَﺎ ﻛَﺘَﺐَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟَﻜُﻢْ
সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের নিকট গমন হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ। আল্লাহ জেনেছেন যে, তোমরা নিজদের সাথে খিয়ানত করছিলে। অতঃপর তিনি তোমাদের তাওবা কবূল করেছেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন। অতএব, এখন তোমরা তাদের সাথে মিলিত হও এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা লিখে দিয়েছেন, তা অনুসন্ধান কর।
রমজান মাসে রোজা পালনের উদ্দেশ্যে সাহরি খাওয়া সুন্নত। যদি কেউ এমন অবস্থায় পতিত হন যে, ফরজ গোসল করে সাহরি খাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় নেই; তখন অজু করে বা হাতমুখ ধুয়ে আগে সাহরি খেয়ে নেবেন। পরে গোসল করে ফজরের নামাজ আদায় করবেন।
কারণ, সাহরি খাওয়ার জন্য পবিত্রতা ফরজ নয় বরং সুন্নত; আর নামাজ আদায় করার জন্য পবিত্রতা ফরজ। গোসল ফরজ হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা করে নিতে হবে, বিনা ওজরে বেশি সময় অপবিত্র অবস্থায় থাকা সমীচীন নয়। আর রমজানে রোজা অবস্থায় অধিকক্ষণ অপবিত্র অবস্থায় থাকা মোটেও বাঞ্ছনীয় নয়। এতে রহমতের ফেরেশতাদের কষ্ট হয়।
তাই দ্রুত পবিত্রতা অর্জন করা জরুরি।
ফিকহবিদদের মতে, গোসল ফরজ হওয়া সত্ত্বেও গোসল না করেই সেহরি খেয়ে রোজা রাখলে রোজা সহি হবে। তবে ফজরের ওয়াক্ত থাকতেই গোসল করে সময় মতো নামাজ আদায় করে নিতে হবে। সব সময়ই মনে রাখতে হবে, গোসল ফরজ হওয়া সত্ত্বেও বিনা ওজরে গোসল না করে অপবিত্র অবস্থায় এক ওয়াক্ত নামাজের সময় অতিবাহিত হয়ে যাওয়া মারাত্মক গোনাহ। (মুসলিম হাদিস নং ২৫৯২, বাদায়ে, ১/১৫১)
বিষয়টির প্রমাণ রাসুলের সহধর্মিণী উম্মুল মোমিনীন আয়েশা রা. বর্ণিত হাদিস— ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻳﺪﺭﻛﻪ ﺍﻟﻔﺠﺮ ﻓﻲ ﺭﻣﻀﺎﻥ ﻭﻫﻮ ﺟﻨﺐ ﻣﻦ ﻏﻴﺮ ﺣﻠﻢ، ﻓﻴﻐﺘﺴﻞ ﻭﻳﺼﻮﻡ .
রমজান মাসে স্বপ্নদোষ ব্যতীতই অপবিত্র অবস্থায় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুবহে অতিক্রম করতেন। অত:পর তিনি গোসল করে রোজা রাখতেন। [বোখারি : ১৮২৯, মুসলিম : ১১০৯।]
রাসুলের অপর স্ত্রী উম্মুল মোমিনীন উম্মে সালামা রা. বর্ণনা করেন:— ﻛﺎﻥ ﻳﺪﺭﻛﻪ ﺍﻟﻔﺠﺮ ﻭﻫﻮ ﺟﻨﺐ ﻣﻦ ﺃﻫﻠﻪ ﺛﻢ ﻳﻐﺘﺴﻞ ﻭﻳﺼﻮﻡ.
সহবাসের ফলে না-পাকি অবস্থায় রাসুল সুবহে সাদিক অতিক্রম করতেন, অত:পর গোসল করে রোজা রাখতেন। [বোখারি : ১৯২৬]
আশা করি আপনার উত্তর টি পেয়েছেন
আল্লাহ তাআলা উক্ত আয়াতে রমজান মাসে ইফতারির পর থেকে শুরু করে সেহরির আগ পর্যন্ত স্ত্রীসহবাস হালাল করেছেন।রোজা রাখতে গেলে নামাজ আদায় অতিব জরুরি।আর নামাজ আদায় এর পূর্ব শত্য হল পবিএতা।কার রোযা হবে কি না সেটা আল্লাহ ছাড়া কেউ ভাল বলতে পাবে না ,তবে নামাজ আদায় অবশ্যই জরুরি কারন এটিও ফরজ ইবাদতের মধ্যে পরে।আর এর জন্য অবশ্যই নাপাক থাকা যাবে না, অবশ্যই পাক-পবিএ হতে হবে।
রমজানে রাতের বেলা স্বপ্নদোষ বা স্বামী স্ত্রী সহবাসের পর অনেক সময় গোসলের সময় থাকে না। কিন্তু এ দুই অবস্থায় গোসল করা ফরজ। এ ফরজ গোসল না করে যদি সেহরি খাওয়া হয় তাহলে কি রোজার কোনো ক্ষতি হবে। এই নিয়ে অনেকের মনে দ্বিধা দ্বন্দ্ব রয়েছে। আসুন জেনে রাখি মাসআলাটি।
ফিকহবিদদের মতে, গোসল ফরজ হওয়া সত্ত্বেও গোসল না করেই সেহরি খেয়ে রোজা রাখলে রোজা সহি হবে। তবে ফজরের ওয়াক্ত থাকতেই গোসল করে সময় মতো নামাজ আদায় করে নিতে হবে। সব সময়ই মনে রাখতে হবে, গোসল ফরজ হওয়া সত্ত্বেও বিনা ওজরে গোসল না করে অপবিত্র অবস্থায় এক ওয়াক্ত নামাজের সময় অতিবাহিত হয়ে যাওয়া মারাত্মক গোনাহ। (মুসলিম হাদিস নং ২৫৯২, বাদায়ে, ১/১৫১)
বিষয়টির প্রমাণ রাসুলের সহধর্মিণী উম্মুল মোমিনীন আয়েশা রা. বর্ণিত হাদিস— ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻳﺪﺭﻛﻪ ﺍﻟﻔﺠﺮ ﻓﻲ ﺭﻣﻀﺎﻥ ﻭﻫﻮ ﺟﻨﺐ ﻣﻦ ﻏﻴﺮ ﺣﻠﻢ، ﻓﻴﻐﺘﺴﻞ ﻭﻳﺼﻮﻡ .
রমজান মাসে স্বপ্নদোষ ব্যতীতই অপবিত্র অবস্থায় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুবহে অতিক্রম করতেন। অত:পর তিনি গোসল করে রোজা রাখতেন। [বোখারি : ১৮২৯, মুসলিম : ১১০৯।] রাসুলের অপর স্ত্রী উম্মুল মোমিনীন উম্মে সালামা রা. বর্ণনা করেন:— ﻛﺎﻥ ﻳﺪﺭﻛﻪ ﺍﻟﻔﺠﺮ ﻭﻫﻮ ﺟﻨﺐ ﻣﻦ ﺃﻫﻠﻪ ﺛﻢ ﻳﻐﺘﺴﻞ ﻭﻳﺼﻮﻡ.
সহবাসের ফলে না-পাকি অবস্থায় রাসুল সুবহে সাদিক অতিক্রম করতেন, অত:পর গোসল করে রোজা রাখতেন। [বোখারি : ১৯২৬]