আমরা অনেক সময় অনলাইনে দেখতে পাই কালো জাদু নামে বই পোষ্ট অনেক কিছু,, আমার প্রশ্ন হল, এই বই পড়া ও তা অনুসরন করে কাজ করা কি ইসলাম সমর্থন করে দয়াকরে জানাবেন।।
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

না। ইসলামে জাদু বিদ্যা হারাম ও কুফুরী। যেমন আল্লাহ্ তা‘আলা সূরা আল-বাকারায় হারুত-মারুত নামক দুই ফেরেশতার ব্যাপারে বলেছেন : ﴿ ﻭَﻣَﺎ ﻳُﻌَﻠِّﻤَﺎﻥِ ﻣِﻦْ ﺃَﺣَﺪٍ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻘُﻮﻻ ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﻧَﺤْﻦُ ﻓِﺘْﻨَﺔٌ ﻓَﻼ ﺗَﻜْﻔُﺮْ ﻓَﻴَﺘَﻌَﻠَّﻤُﻮﻥَ ﻣِﻨْﻬُﻤَﺎ ﻣَﺎ ﻳُﻔَﺮِّﻗُﻮﻥَ ﺑِﻪِ ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟْﻤَﺮْﺀِ ﻭَﺯَﻭْﺟِﻪِ ﻭَﻣَﺎ ﻫُﻢْ ﺑِﻀَﺎﺭِّﻳﻦَ ﺑِﻪِ ﻣِﻦْ ﺃَﺣَﺪٍ ﺇِﻟَّﺎ ﺑِﺈِﺫْﻥِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﻳَﺘَﻌَﻠَّﻤُﻮﻥَ ﻣَﺎ ﻳَﻀُﺮُّﻫُﻢْ ﻭَﻻ ﻳَﻨْﻔَﻌُﻬُﻢْ ﻭَﻟَﻘَﺪْ ﻋَﻠِﻤُﻮﺍ ﻟَﻤَﻦِ ﺍﺷْﺘَﺮَﺍﻩُ ﻣَﺎ ﻟَﻪُ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺂﺧِﺮَﺓِ ﻣِﻦْ ﺧَﻼﻕٍ ﻭَﻟَﺒِﺌْﺲَ ﻣَﺎ ﺷَﺮَﻭْﺍ ﺑِﻪِ ﺃَﻧْﻔُﺴَﻬُﻢْ ﻟَﻮْ ﻛَﺎﻧُﻮﺍ ﻳَﻌْﻠَﻤُﻮﻥَ ﴾ অর্থ : ‘‘তারা উভয়ই একথা না বলে কাউকে শিক্ষা দিত না যে, আমরা নিছক একটি পরীক্ষা মাত্র; কাজেই তুমি কুফুরী করো না। তা সত্ত্বেও তারা ফেরেশতাদ্বয়ের কাছ থেকে এমন জাদু শিখত, যদ্বারা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটানো যায়। অথচ তারা আল্লাহ্র আদেশ ছাড়া তদ্বারা কারো অনিষ্ট করতে পারত না। এতদ্সত্ত্বেও তারা তা-ই শিখত যা তাদের ক্ষতি করত এবং কোন উপকারে আসতো না। তারা ভালভাবে জানে যে, যে কেউ তা খরিদ করে (অর্থাৎ জাদুর আশ্রয় নেয়) তার জন্য আখেরাতে কোন অংশ নেই। যার বিনিময়ে তারা নিজেদের বিকিয়ে দিচ্ছে তা খুবই মন্দ যদি তারা জানত! [সূরা আল-বাকারাহ্: ১০২] এ আয়াত দ্বারা বুঝা যায় যে, জাদু বিদ্যা কুফুরী এবং জাদুকররা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ সৃষ্টি করে। আয়াতটি দ্বারা আরও প্রমাণিত যে, যে জাদু ভাল-মন্দের আসল কার্যকারণ নয়, বরং আল্লাহ্র পূর্বনির্ধারিত জাগতিক নিয়ম ও নির্দেশেই মূলত তা প্রভাব বিস্তার করে থাকে। কেননা আল্লাহ্ তা‘আলাই ভাল ও মন্দ সৃষ্টি করেন। এসমস্ত মিথ্যা অপবাদ আরোপকারী ব্যক্তিগণ যারা মুশরিকদের থেকে এ ধরনের জ্ঞান অর্জন করেছে এবং এর মাধ্যমে দুর্বল-চিত্তের লোকদের উপর বিভ্রান্তির প্রহেলিকা সৃষ্টি করেছে— তাদের দ্বারা সাধিত ক্ষতি ইতিমধ্যেই বিশাল আকার ধারণ করেছে। অথচ স্মরণ রাখা দরকার আমরা তো আল্লাহ্রই জন্য এবং আল্লাহ্র দিকেই আমাদের ফিরে যেতে হবে। তিনিই তো আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং উত্তম তত্ত্বাবধায়ক। অনুরূপভাবে আয়াতে কারীমাতে এদিকেও ইঙ্গিত রয়েছে যে, যারা জাদু শিখে তারা মূলত এমন বিদ্যাই শিখে যা তাদের ক্ষতি করে এবং কোন উপকারে আসে না, আর আল্লাহ্র কাছে তাদের কিছুই পাওয়ার নেই। এটা অত্যন্ত বড় সতর্কবাণী, যা দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবার ইঙ্গিতই বহন করছে আর এও বুঝা যাচ্ছে যে, তারা অত্যন্ত নগণ্য মূল্যে নিজেদেরকে বিকিয়ে দিয়েছে তাই আল্লাহ্ তা‘আলা এ-ব্যাপারে তাদের নিন্দা করেছেন। তিনি এরশাদ করেছেন : ﴿ ﻭَﻟَﺒِﺌْﺲَ ﻣَﺎ ﺷَﺮَﻭْﺍ ﺑِﻪِ ﺃَﻧْﻔُﺴَﻬُﻢْ ﻟَﻮْ ﻛَﺎﻧُﻮﺍ ﻳَﻌْﻠَﻤُﻮﻥَ ﴾ অর্থ : ‘‘যার বিনিময়ে তারা নিজেদের বিকিয়ে দিচ্ছে তা খুবই মন্দ যদি তারা জানত!” [সূরা আল-বাকারাহ্ : ১০২] জাদুকর, গণক এবং সকল প্রকার ভোজবাজীকর ও ভেল্কিবাজদের অমঙ্গল থেকে আমরা আল্লাহ্র কাছে নিরাপত্তা কামনা করি। আমরা তাঁর কাছে এও কামনা করি যে, তিনি যেন এসব লোকের ক্ষতি থেকে মুসলিমদেরকে রক্ষা করেন এবং এসব লোক সম্পর্কে সতর্ক করা ও তাদের ব্যাপারে আল্লাহ্র হুকুম কার্যকর করার জন্য মুসলিম শাসকদের তাওফিক দান করেন। যাতে তাদের ক্ষতি ও নিকৃষ্ট কাজ হতে আল্লাহ্র বান্দাগণ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারে। নিশ্চয়ই তিনি দানশীল মহান। আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের প্রতি স্বীয় রহমাত ও অনুগ্রহস্বরূপ এবং তাঁর নিয়ামতের পূর্ণতা সাধনকল্পে তাদের জন্য এমন সব ব্যবস্থা নির্ধারণ করে দিয়েছেন যদ্বারা জাদুকর্ম সংঘটিত হওয়ার পূর্বে এর অমঙ্গল থেকে তারা রক্ষা পেতে পারে এবং এমন পদ্ধতি ও তাদের জন্য বর্ণনা করে দিয়েছেন যাতে জাদুকর্ম সংঘটিত হওয়ার পর তারা এর চিকিৎসা করতে পারে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ