ছেলে মেয়ে রাজি থাকলেই কি ইসলামী শরীয়া মতে পারস্পারিক কথা-বার্তা বলা ও বিবাহ করা জায়েয ?



শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

Call

বিয়ের জন্য ছেলেদের শুধু নিজের সম্মতি প্রয়োজন । কিন্তু মেয়ের নিজের সম্মতির সাথে অভিভাবকের সম্মতিও সমান ভাবে গুরুত্বপূর্ণ । এই তিনজনের একজন যদি বিয়েতে মত না দেয় তবে বিয়ে হবে না । একটা স্পষ্ট কথা মেয়েদের জেনে রাখা উচিত যে, যত যাই হোক না কেন, তাঁর অভিভাবকের সম্মতি ব্যতীত কোন বিয়েই বৈধ নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীস এ ব্যাপারটিই নির্দেশ করে। # “যে নারী তার অভিভাবকের সম্মতি ছাড়াই নিজে নিজে বিবাহ করে, তার বিবাহ বাতিল, বাতিল, বাতিল।” (আহমাদ,আবু দাউদ,তিরমিযী,ইবনে মাজাহ,দারেমী,মিশকাত ৩১৩১ নং) # “ওয়ালী (অভিভাবক) এবং দুইজন উত্তম চরিত্রের সাক্ষী ব্যতীত কোনো বিবাহ (বৈধ) হবে না”। [আল বায়হাক্বী থেকে বর্ণিত ইমরান এবং ‘আয়িশা এর হাদীস; সহীহ আল-জামি’ ৭৫৫৭ এ আল-আলবানী হাদিসটিকে সহীহ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।] আরও বর্ণিত হয়েছে, এক স্ত্রীলোক অপর স্ত্রীলোক বিবাহ দিতে পারে না এবং কোনও স্ত্রীলোক নিজে নিজেই বিবাহ আবদ্ধ হতে পারে না। কারণ, কেবল ব্যভিচারিণীই নিজেকে বিবাহ আবদ্ধ করতে পারে। আর অভিভাবক হলেন পিতা , পিতা না থাকলে ভাই এভাবে যাবে এবং যদি কাছের কোন আত্মীয় জীবিত না থাকেন বা কাফের/মুরতাদ/ফাসেক হবার কারণে অভিভাবকত্ব হারান তবে তার অভিভাবকত্ব রাষ্ট্রের জিম্মায় চলে যাবে । তাই পালিয়ে যদি ছেলে বিয়ে করে কিন্তু মেয়েটির অভিভাবক সম্মতি দিয়েছে তবে বিয়ে বৈধ । কিন্তু মেয়ে পালিয়ে অভিভাবকের সম্মতি না নিয়ে বিয়ে করলে বিয়ে বৈধ হবে না । ছেলের পরিবার জানুক বা না জানুক এতে কিছুই এক্ষেত্রে যায় আসবে না । পড়ুন ফতোয়া সকল মাজহাব এ ব্যাপারে একমত । তবে মেয়ে যদি অভিভাবকের যুলুমের স্বীকার হয় তবে হানাফি মাজহাব সে যুলুম হতে বাচার জন্য একটু ছাড় দিয়েছে তবে অকারণ পালিয়ে বিয়েকে বৈধতা দেয়নি । পড়ুন ফতোয়া সুতরাং মেয়েদের জন্য পালিয়ে বিয়ে সম্পূর্ণ অবৈধ । এবং একজন প্রকৃত ঈমানদার নারী বা পুরুষ তার পরিবার হতে পালিয়ে বিয়ে করার কথা ভাবতেও পারে না । পরিবার শিরক- কুফরিতে নিমজ্জিত থাকলে ভিন্ন কথা । আর, একটা কথা না বললেই নয়, সমাজে অনেকেই গোপনে বিয়ে করে ফেলে। কাজী ঠিকই টাকা নিয়ে বিয়ে পড়িয়ে দেবে। এমনকি অনেক হুজুর হয়ত প্রকৃত সহিহ হাদিসের কথা না জেনে এমন বিয়ে পড়ান জায়েজ বলে থাকেন। কিন্তু আসলে এটা অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। আর পাত্রপাত্রী না জেনে এ কাজ করে থাকলে হয়ত benefit of doubt তাঁরা পেতে পারে। তবে এরপরে পিতামাতার অনুমতি না নিয়ে স্বামীস্ত্রীসুলভ আচরণ করা প্রতিটি মুহূর্ত হবে গুনাহ। আর প্রতিটি কর্মের এর জন্য তারাই দায়ী থাকবে। জেনে করলে শরীয়ত মোতাবেক শাস্তি হতে পারে । এবং তারপর সঠিকভাবে "পুনরায়" বিবাহ করতে হবে। এক্ষেত্রে, অবশ্যকরনীয় হল, আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে অতীতের ভুলের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করা। তওবা করা। ইনশাল্লাহ আল্লাহ্ মাফ করবেন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

ইসলামী শরীয়া মতে ছেলে মেয়ে রাজি থাকলেই বিনা প্রয়োজনে কথা বলা যায় না। আর বিবাহের ব্যাপরটি শুধু বিবাহেচ্ছুক পাত্র পাত্রীর সন্তুষ্টির উপর নির্ভরশীল নয়। বরং প্রথমত তাদের মধ্যে বিবাহ নীতির সাথে সাংঘর্ষিক সম্পর্ক না থাকতে হবে। অর্থাত উভয় উভয়ের মাহরাম না হতে হবে। এরপর বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার জন্য বিবাহ মজলিসে দুজন সাক্ষীর উপস্থিত থাকতে হবে, বরের সাথে কণে কিংবা তার প্রতিনিধি বিবাহ মজলিসে থাকতে হবে। এবং সাথে সাথে পরস্পরে ইজাব কবুলের বিনিময় হতে হবে। যদি এসব বিষয়গুলো পাওয়া যায় তাহলে বিবাহ জায়েয হয়ে যাবে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ