প্রবাদটির সাথে ইসলামিক দৃষ্টি ভঙ্গির বেশ সাযুজ্য বিদ্যমান। একদা আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. কা.বার দিকে তাকিয়ে বললেন, হে কা'বা তুমি কত বড়! তোমার কত সম্মান!! তবে আল্লাহ তাআলার নিকট একজন ঈমানদার ব্যক্তির মর্যাদা তোমার মর্যাদার চেয়ে অনেক বেশি। সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৫৭৬৩। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকেও এ জাতীয় একটি বর্ণনা রয়েছে। যদিও তাতে সূত্রগত কিছুটা দুর্বলতা রয়েছে। সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৩৯৩২। ইসলামী শরীয়াতে হক বা অধিকার দু ধরনের। ১. হুকুকুল্লাহ বা আল্লাহর হক। ২.। হুকুকুল ইবাদ বা মানুষের হক। আল্লাহর হক নষ্ট করা হলে সেটা আল্লাহ ক্ষমা করেন। পক্ষান্তরে মানুষের হক নষ্ট করা হলে সেটা আল্লাহ ক্ষমা করেন না; যতক্ষণ না মানুষ ক্ষমা করে। কাবা শরীফ বা এর সাথে সংশ্লিষ্ট ইবাদাতগুলো আল্লাহর হকের পর্যায়ভুক্ত। সুতরাং কেউ যদি কাবা শরীফকে ভেঙ্গে ফেলে আল্লাহর বিধান লঙ্ঘন করে কিংবা আল্লাহকে কষ্ট দেয় এবং পরবর্তীতে অনুশোচিত হয়ে কায়মনোবাক্যে আল্লাহর নিকট তওবা করে ক্ষমা চায় তাহলে তাওবার শর্তগুলো পালিত হলে আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন। কিন্তু অন্যায়ভাবে মানুষের মনে কষ্ট দিয়ে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা হলে আল্লাহ ক্ষমা করবেন না; যতক্ষণ না ব্যথিত ব্যক্তি ক্ষমা করবে। এমন কি কেউ কাউকে কষ্ট দিয়ে মারা গেলে পরকালে এ কষ্টের শোধ নিয়ে নেয়া হবে। এ দৃষ্টিকোণ থেকে কাবা শরীফের তুলনায় মানুষের মনের মর্যাদা বেশি। এক্ষেত্রে হিন্দু মুসলিমে কোনো ব্যবধান নেই। একজন মুসলিমকে কষ্ট দিলে যে পাপ একজন হিন্দুকে কষ্ট দিলে ঠিক একই পাপ। সামান্য কম বেশ হবে না। কারণ সবাই এক আল্লাহর বান্দা। আমাকে যে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন সে একই আল্লাহ হিন্দুকে সৃষ্টি করেছেন। সে ভুল পথে পরিচালিত হওয়ার কারণে তার শাস্তি সে ভিগ করবে। এটা আলাদা ব্যাপার। বান্দা বা সৃষ্টিজীব হওয়ার দিক থেকে সবাই সমান।