সালামের ফযিলত কি? কয়েকটা হাদিস উল্লেখ করবেন৷
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

Call

সাধারণত সমাজে প্রচলিত আছে যে, সালাম দিলে নব্বই নেকি বা সওয়াব পাওয়া যায়; আর উত্তরদাতা পাবে দশ নেকি। এ কথাটির কোনো উৎস পাওয়া যায় না। কোনো আমলের নির্দিষ্ট সওয়াব বর্ণনা করতে হলে কুরআন-সুন্নাহর দলিল প্রয়োজন। আমাদের জানামতে এখানে দলিল অনুপস্থিত। হাদিস দ্বারা শুধু এটুকু জানা যায় : عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِىِّ -صلى الله عليه وسلم- فَقَالَ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ. فَرَدَّ عَلَيْهِ السَّلاَمَ ثُمَّ جَلَسَ فَقَالَ النَّبِىُّ -صلى الله عليه وسلم- « عَشْرٌ ». ثُمَّ جَاءَ آخَرُ فَقَالَ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ. فَرَدَّ عَلَيْهِ فَجَلَسَ فَقَالَ « عِشْرُونَ ». ثُمَّ جَاءَ آخَرُ فَقَالَ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ. فَرَدَّ عَلَيْهِ فَجَلَسَ فَقَالَ « ثَلاَثُونَ অর্থ : ইমরান ইবনে হুসাইন রা. হতে বর্ণিত, একব্যক্তি রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ বলে সালাম দিয়ে বসল। রাসুল সা. সালামের উত্তর দিয়ে বললেন, তার জন্যে দশ নেকি। তারপর আরেকজন এসে একটু বাড়িয়ে السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ বলে সালাম করে বসল। রাসুল সা. উত্তর দিযে বললেন, সে বিশ নেকি পাবে। এরপর আরেক ব্যক্তি এসে السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ বলে সালাম করল ও বসল। রাসুল সা. উত্তর দিয়ে বললেন, সে ত্রিশ নেকি পাবে। [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং- ৫১৯৭, অধ্যায় : باب كَيْفَ السَّلاَمُ ] কুরআন-সুন্নাহর দলিল দ্বারা সমর্থনযোগ্য ফজিলতই প্রচার করতে হবে। অপ্রমাণিত বিষয় প্রচার করার কোনো মানে হয় না। জেনেশুনে করলে গোনাহগার হতে হবে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

সালাম দিলে নব্বই নেকি আর জবাব দিলে মাত্র দশ নেকি! এমন একটি কথা আমাদের সমাজে বেশ প্রসিদ্ধ। কেউ কেউ প্রশ্ন করে থাকেন যে, এটা হাদীস কিনা? এ কথাটা হাদীসের প্রসিদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য গ্রন্থসমূহে নেই। বরং একটি সহীহ হাদীসে এসেছে যে, ইমরান ইবনে হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একটি লোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে এভাবে সালাম করল ‘আসসালামু আলাইকুম’ আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জবাব দিলেন। অতঃপর লোকটি বসে গেলে তিনি বললেন, ‘‘ওর জন্য দশটি নেকী।’’ তারপর দ্বিতীয় ব্যক্তি এসে ‘আসসালামু আলাইকুম অরহমাতুল্লাহ’ বলে সালাম পেশ করল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সালামের উত্তর দিলেন এবং লোকটি বসলে তিনি বললেন, ‘‘ওর জন্য বিশটি নেকী।’’ তারপর আর একজন এসে ‘আসসালামু আলাইকুম অরাহমাতুল্লাহি অবারাকাতুহ’ বলে সালাম দিল। তিনি তার জবাব দিলেন। অতঃপর সে বসলে তিনি বললেন, ‘‘ওর জন্য ত্রিশটি নেকী। (রিয়াযুস স্বা-লিহীন, হাদিস নম্বরঃ ৮৫৫, তিরমিযীঃ ২৬৮৯, আবূ দাউদঃ ৫১৯৫, আহমাদঃ ১৯৪৪৬, দারেমীঃ ২৬৪০ হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ)। আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সালামের গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, তোমরা ঈমান না আনা পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, আর পরস্পর মহব্বত না করা পর্যন্ত ঈমানদার হতে পারবে না আমি কি তোমাদের এমন কথা বলে দেব যা দিয়ে তোমাদের পরস্পরে মহব্বত বৃদ্ধি পাবে? তা হচ্ছে পরস্পর সাক্ষাৎ হলে সালাম বিনিময় করা এবং সালামের ব্যাপক প্রসার করা। (সহীহ মুসলিমঃ ৫৪ আবু দাউদঃ ৫১৯৩) সালাম একটি সম্মানজনক অভ্যর্থনামূলক ইসলামী অভিবাদন। আল্লাহ তায়ালা সর্বপ্রথম আদমকে (আব) সালামের শিক্ষা দেন। হজরত আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করার পর আল্লাহ তায়ালা তাকে ফেরেশতাদের সালাম দেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি সালাম দিলে ফেরেশতারাও এর উত্তর দেন। আসসালামু আলাইকুম মানে আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। সালামের মাধ্যমে পরস্পরের জন্য শান্তি ও কল্যাণ কামনা করা হয়। কোনো মুসলমান ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে কথা বলার আগে সালাম দেওয়া নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ। আর এর উত্তর দেওয়া অবশ্যকরণীয়। হাদিসে রয়েছে, একজন মুসলমানের সঙ্গে অপর মুসলমানের দেখা হলে কথা বার্তার আগে সালাম দিতে হবে। সালামের ফজিলত অনেক। প্রথমত সালাম দেওয়া ও সালামের উত্তর দেওয়া সুন্নত। এ জন্য মহান আল্লাহ সালামের গুরুত্ব বর্ণনা করে মহাগ্রন্থ আল কুরআনে ইরশাদ করেছেন, সালামকারী সালামের মাধ্যমে যেরূপ শব্দ ব্যবহার করবে তার চেয়ে উত্তমরূপক্ষে তুমি জওয়াব দেবে অথবা অনুরূপ শব্দই বলে দেবে। (সূরা নিসা আয়াতঃ ৮৬)। সুতরাং এর দ্বারা বোঝা গেল যে, কোনো ব্যক্তি সালাম দিলে তার জওয়াব দেয়া ওয়াজিব, আর তার সাথে রহমত বরকত ইত্যাদি শব্দ বলে উত্তর দেয়া মুস্তাহাব।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ